এবছর গুরুপূরবে আফগানিস্তানে থাকা শিখ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজনকে ভারতে আসার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে তালিবান। সম্প্রতি তালিবান নেতারা নাকি সেদেশে আটকে পড়া আফগান শিখ ও হিন্দুদের এমনই আশ্বাস দিয়েছেন। আফগানিস্তানে আটকে পড়া আফগান শিখ ও হিন্দুদের উদ্ধারের কাজ করছে একটি সংস্থা। সেই সংস্থার তরফেই এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এবছর গুরু তেগ বাহাদুরের ৪০০তম আবির্ভাব দিবস। প্রতিবারই সেই গুরুপূরবে আফগানিস্তান থেকে বহু আফগান শিখ ও হিন্দু ভারতে আসেন। তবে এবার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। আফগানিস্তানের দখল গিয়েছে তালিবানের হাতে। প্রতিদিন তালিব জঙ্গিদের হাতে রক্ত ঝরছে নিরীহ আফগানদের। প্রাণভয়ে দেশ ছাড়তে মরিয়া আফগান নাগরিকদের একটি বড় অংশ। এই আবহে তালিবান নেতৃত্বের তরফে আফাগানিস্তানে থাকা সংখ্যালঘুদের প্রতি এই বার্তা কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে।
দিন কয়েক আগেই আফগানিস্তানে থাকা শিখ এবং বেশ কিছু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন কাবুল বিমানবন্দরে পৌঁছনোর চেষ্টা করেছিলেন। বিমানবন্দর থেকে তাঁরা অন্য দেশে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে সেদিন একটি বিস্ফোরণ ঘটে। শিখ এবং হিন্দুদের নিয়ে একটি বাস সেদিন বিমানবন্দরে পৌঁছেছিল। সেই বাসটি লক্ষ্য করেও গুলি চালায় তালিবান যোদ্ধারা। পরে তাঁদের নিয়ে বাসটি ফিরে আসে একটি গুরুদোয়ারায়। আপাতত ওই গুরুদোয়ারাতেই রয়েছেন ওই আফগান শিখ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন।
আরও পড়ুন- প্রয়াত কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা গিলানি, শোক প্রকাশ পাক প্রধানমন্ত্রীর
আমেরিকান সেনাবাহিনী পাকাপাকিভাবে আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার পরপরই গোটা কাবুল বিমানবন্দর তালিবানদের দখলে চলে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত তালিবানের নিয়ন্ত্রণাধীন কাবুল বিমানবন্দর থেকে ভারতে যাওয়ার জন্য পরবর্তী বিমান কবে উড়বে সেই সম্পর্কে কোনও নিশ্চয়তা নেই। বিশ্ব পাঞ্জাবি সংগঠনের সভাপতি বিক্রমজিৎ সিং সাহেনি জানান, তালিবান আফগানিস্তান দখল করার পর থেকে থেকে ১৮০ জন আফগান শিখ এবং হিন্দু কাবুলের একটি গুরুদোয়ারায় থাকছেন। তবে অনেকেই এখন তাঁদের জালালাবাদ, গজনী, কাবুলের বাড়িতে ফিরে গিয়েছেন। এখনও কমপক্ষে ২১০ জন আফগান শিখ এবং হিন্দু আফগানিস্তানে রয়ে গিয়েছেন। যাঁদের মধ্যে কমপক্ষে ১৭০ জন ভারতে ফিরতে চান। তাঁদের সবাই অবশ্য ভারতে আসতে রাজি নন।
আফগানিস্তানে থাকা শিখদের একাংশ আশা করেছিল যে তাঁরা সে দেশেই তালিবান শাসনের অধীনে রুটিন জীবন শুরু করতে পারবেন। দেশ ছাড়তে তাঁরা রাজি ছিলেন না। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন তাঁদের অনেকেও আফগান মুলুক ছাড়তে তৈরি। তাঁদের একজন জানান, তাঁরা তাঁদের দোকান খুলতে শুরু করেছেন। তবে ব্যবসার পরিস্থিতি ভালো নয়। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকবে বলেই এখনও তিনি বিশ্বাস করেন। ওই ব্যক্তি বলেন, “গুরু তেগ বাহাদুরের ৪০০তম আবির্ভাব দিবসে গুরুপূরবে ভারতে তীর্থযাত্রায় গেলেও আফগানিস্তানে ফিরতে হবেই। আমাদের ব্যবসা এখানে। একসঙ্গে সব ছেড়ে দিতে পারি না। আমাদের এখানে যা আছে, আমরা ভারতে তা পেতে পারি না। আমরা সেখানে শরণার্থী হব। কে তাঁদের নিজের দেশ ছেড়ে যেতে পছন্দ করে?”
Read full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন