দিন কয়েক আগেই শোনা গিয়েছিল নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে সদ্য পাওয়া মরণোত্তর ভারত রত্ন সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন প্রয়াত কিংবদন্তী অসমিয়া সঙ্গীতশিল্পী ভূপেন হাজারিকার পরিবার। তাই নিয়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজনৈতিক মহলে। কিন্তু শুক্রবার ভূপেন হাজারিকার মার্কিন প্রবাসী পুত্র তেজের গলায় শোনা গেল অন্যরকম সুর। এক বিবৃতি মারফত তেজ জানিয়েছেন, যেভাবে তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক।
“বাবার হয়ে দেশের সর্বোচ্চ সম্মান গ্রহণ করা স্বপ্নের মতো একটা সুযোগ, জানিয়েছেন ৬৭ বছরের মার্কিন প্রবাসী তেজ হাজারিকা। ১৫ ফেব্রুয়ারি সকালে হোয়াটসঅ্যাপ মারফত প্রেরিত বার্তায় তেজ লিখেছেন, “ভারত সরকার বাবার হয়ে ভারতরত্ন গ্রহণ করার জন্য আমায় আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রগতিশীল এবং ঐক্যবদ্ধ এক ভারত গড়ে তোলার জন্য বাবা নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করেছিলেন। দেশ তাঁকে তাঁর যোগ্য সম্মান দিচ্ছে। এই সম্মান গ্রহণ করতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি। যেখানেই অন্ধকার, সেখানে আলো আনার জন্য আমি আমার বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করতে চেয়েছি বারবার”।
আরও পড়ুন, ভারতরত্ন হচ্ছেন প্রণব, ভূপেন
গত সোমবার আসামের এক স্থানীয় সংবাদপত্র ভূপেন পুত্রের সাক্ষাৎকার নেওয়ার পরই চারিদিকে খবর রটে যায় নাগরিকত্ব বিল, ২০১৬-এর প্রতিবাদে ভারতরত্ন প্রত্যাখ্যান করেছে সংগীতশিল্পির পরিবার। তেজ হাজারিকা এক বিবৃতি মারফত জানান, “আমি এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের পক্ষ থেকে কোনো আমন্ত্রন পাইনি, সুতরাং প্রত্যাখ্যানের প্রশ্নই আসছে না”। নাগরিকত্ব বিল প্রসঙ্গে ভূপেন পুত্র বলেছিলেন উত্তরপূর্ব ভারতের নাগরিক পঞ্জি বিষয়ে সংগীতশিল্পী মনে প্রাণে যা বিশ্বাস করতেন, এই বিল তার পরিপন্থী।
বিতর্ক গড়াতে থাকলে আসামের মুখ্যমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা হৃষিকেশ গোস্বামী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, “ওঁর পরিবার ইতিমধ্যেই এই পুরস্কারকে জনসমক্ষে স্বাগত জানিয়েছেন। ভারত রত্ন প্রত্যাখান করে তেজ হাজারিকা কী বলতে চাইছেন যে, তাঁর বাবা এই সম্মানের যোগ্য নন? উনি কেন আমেরিকায় বসে এই বিল নিয়ে মন্তব্য করছেন?”
আরও পড়ুন, ভারত রত্ন প্রত্যাখ্যান করলেন ভূপেন হাজারিকার পুত্র
সাম্প্রতিক বিবৃতিতে তেজ বলেছেন, “যদিও আমি আমার জীবনের অধিকাংশ সময় প্রবাসেই কাটিয়েছি, আমার শেকড় কিন্তু ভারতেই। আমি শুধু ভারতে জন্মেছি বলে নয়, আমার পরিবার ভারতেই রয়েছে। ভারতীয় গণতন্ত্রের প্রতি আমার সম্মান জন্মেছে বড় হওয়ার দিনগুলোতেই”।
তেজ ভূপেন হাজারিকার একমাত্র সন্তান। তিনি নিজে একজন লেখক এবং প্রকাশক। গুয়াহাটির ডঃ ভূপেন হাজারিকা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতাও তিনিই।