৫০০০ পরিবারকে উচ্ছেদ! রেলের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা, আজ শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট উত্তরাখণ্ড হাইকোর্টের সিদ্ধান্তর ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে। শুনানির সময় বিচারপতি বলেন, "আমরা রেলওয়ে এবং রাজ্য সরকারকে নোটিশ জারি করছি। বর্তমানে, আমরা হাইকোর্টের সিদ্ধান্তর ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছি।"
এদিন নৈনিতাল হাইকোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি উত্তরাখণ্ড সরকারকে নোটিশ জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টও রেলকে নোটিশ জারি করেছে। পাশাপাশি শীর্ষ আদালত জানিয়েছে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রেলের তরফে কোন উচ্ছেদ অভিযান চালানো যাবে না। মামলার পরবর্তী শুনানি ৭ ফেব্রুয়ারি। হালদোয়ানিতে বুলডোজারের সিদ্ধান্তের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, এক সপ্তাহের মধ্যে এতগুলো মানুষকে সরিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বড় ধরনের স্বস্তি পেয়েছেন ৫ হাজার পরিবার। এই রায়কে নিজেদের জয় হিসাবেই দেখছেন এলাকার মানুষজন।
একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের পর মুখ্যমন্ত্রী ধামির বক্তব্যও সামনে এসেছে। ধামি বলেন, আমরা আগেও বলেছি এটা রেলের জমি। এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করব। বিচারক এদিন আরও বলেন, এক মাস পর পরবর্তী শুনানি হবে। শুনানির সময় বিচারপতি বলেন, "তারা দাবি করছে যে তারা বছরের পর বছর ধরে বসবাস করছে। এটা ঠিক যে রেলের তরফে জায়গাটির উন্নয়নের কাজ করতে হবে, তবে যারা দীর্ঘদিন সেখানে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা উচিত।"
আরও পড়ুন: < ‘আবাস যোজনার নামে টাকা তুলেছেন বিজেপি নেতারা’, বিস্ফোরক দাবি মুখ্যমন্ত্রীর >
আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা আদালতকে বলেন, রেলের তরফে প্রথমে ২৯ একর জমি রেলের বলে দাবি করা হলেও পরে রেল ৭৮ একর জমি নিজেদের বলে দাবি করে। বিচারপতি কৌল রেলের উদ্দেশ্যে বলেন, "দুই ধরনের মানুষ রয়েছেন- যার দাবি আছে, এবং যার কোন দাবি নেই। জমি দখল করে উন্নয়ন করার অধিকার আপনার আছে, তবে সবার কথা শুনে একটা মাঝামাঝি পথ খুঁজে বের করা উচিত। "
রেলের তরফে ঐশ্বরিয়া ভাটি বলেন, সমস্ত প্রক্রিয়া রাতারাতি হয়নি, পুরো আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিচারপতি কৌল বলেন, "কিন্তু বিষয়টি মানবিক দিক থেকে দেখা উচিত, ততক্ষণ পর্যন্ত যাতে আর কোন নির্মাণ না হয় তা নিশ্চিত করুন।"
শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্ট রেলকে প্রশ্ন করে ‘সেখান থেকে যদি দখল সরানো হয়, তাহলে সেখানে যারা রয়েছেন রেল তাদের পুনর্বাসনের কী ব্যবস্থা করেছে? এ ছাড়া, আদালত আরও বলেছে যে স্বাধীনতার সময় থেকে মানুষ সেখানে বসবাস করে আসছে। এমন পরিস্থতিতে তাদের সেখানে রাতারাতি সরিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। তাদের জন্য বিকল্প কিছু ব্যবস্থা করতে হবে। আদালত বলে, এত বছর ধরে মানুষ সেখানে বসবাস করছে, এমন পরিস্থিতিতে হঠাৎ করে এমন কড়া পদক্ষেপ কী করে সম্ভব? কিন্তু তাদের অধিকার ও পুনর্বাসনের দিকে নজর দেওয়াও খুবই জরুরি।
আরও পড়ুন: < বন্দে ভারতে হামলা: পাশের রাজ্যের নাম উঠতেই নীরবতা ভাঙলেন মমতা >
পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে এই সব লোকদের অন্য কোথাও থাকার ব্যবস্থা করতেও বলেছে শীর্ষ আদালত। রেলের তরফে ৭৮ একর জমিতে ৪৩৬৫ টি অবৈধ কাঁচা-পাকা বাড়ি ভেঙ্গে ফেয়ার সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নেওয়া হয়। আধাসামরিক বাহিনী, RPF এর সাহায্যে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নেয় রেল। উল্লেখ্য ২০০৭ সালে দখল অপসারণের মহড়া নেওয়া হলেও রেল তার জমি খালি করতে পারেনি। এখন, নৈনিতাল হাইকোর্টের কঠোর নির্দেশের পর, দখল সরাতে প্রস্তুতি নেওয়া হয় রেলের তরফে।