গার্হস্থ্য হিংসা ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের মনোভাব স্পষ্ট করলেন নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। বুধবার রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, নারী ও শিশু সুরক্ষা নিয়ে সরকার আপসে নারাজ। তবে, বিয়ে মানেই হিংসা নয়। আর পুরুষ মাত্রেই ধর্ষক নন।
এর আগে সিপিআই সাংসদ বিনয় বিশ্বম বৈবাহিক ধর্ষণ সম্পর্কে সরকারের মনোভাব জানতে চান। বিশ্বমের প্রশ্ন ছিল, ধর্ষণ নিয়ে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারা এবং গার্হস্থ্য হিংসার সংজ্ঞা অনুযায়ীই সরকার গার্হস্থ্য হিংসা আইনের ৩ নম্বর ধারাকে বিবেচনা করছে কি না? জবাবে মন্ত্রী বলেন, 'আমাকে যদি দেশের প্রতিটি বিয়েকেই হিংসাশ্রয়ী বিয়ে, এবং দেশের প্রতিটি পুরুষকেই ধর্ষক বলে নিন্দা করতে বলেন, তবে সেটা এই মর্যাদাপূর্ণ কক্ষের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।' একথা বলার পাশাপাশি বিষয়টিকে আর বাড়তে দিতে চাননি স্মৃতি। তিনি বলেন, 'প্রবীণ সদস্যরা জানেন যে রাজ্যসভার ৪৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী বিচারাধীন কোন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার অনুমতি দেওয়া হয় না।'
বিষয়টিতে অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে স্মৃতি জানান, রাজ্য সরকারগুলোর সাহায্যে দেশের সর্বত্র মহিলাদের সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। দেশজুড়ে ৩০টি হেল্পলাইন চলছে। ৬৬ লক্ষ মহিলাকে সাহায্য করা হয়েছে। পাশাপাশি, এককেন্দ্রিক ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের পাঁচ লক্ষাধিক মহিলাকে সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রীর কথার সূত্র ধরেই সিপিআই সাংসদ জানিয়ে দেন, তিনিও দেশের প্রত্যেক পুরুষকে মোটেও ধর্ষক বলতে চাননি। তবে, নারী সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য সরকার যাতে সংসদে পেশ করে, সেই আর্জিও তিনি জানান।
আরও পড়ুন একদিন আগেই নিয়েছেন অবসর, প্রাক্তন ইডি কর্তাকে প্রার্থী করল বিজেপি
জবাবে স্মৃতি জানান, সাংসদ চাইছেন রাজ্যগুলোর থেকে তথ্য নিয়ে কেন্দ্র যাতে পেশ করে। কিন্তু রাজ্যের হয়ে কোনও তথ্য কেন্দ্র সংসদে পেশ করতে পারে না। আলোচনায় অংশ নিয়ে বিজেপি সাংসদ সুশীল মোদি বলেন, সরকার যদি বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে, তবে বিয়ে বলে আর কিছুই থাকবে না। কারণ, কখন স্ত্রীর সম্মতি ছিল আর কখন ছিল না, তা ঠিক করা কঠিন। জবাবে স্মৃতি জানান, বিষয়টি বিচারাধীন। তাই বিস্তারিত আলোচনা করা যাবে না। একইসঙ্গে মন্ত্রী জানান, সরকার এই ব্যাপারে আইন কমিশনের ১৭২ নম্বর রিপোর্ট আর ২০১৩ সালে দেওয়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট মেনে চলছে।
ডিএমকে নেতা এম মহম্মদ আবদুল্লাহ প্রশ্ন করেন, গার্হস্থ্য হিংসা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে স্কুল এবং কলেজস্তরে সরকার কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে? জবাবে মন্ত্রী জানান সরকার দেশের প্রত্যেকটি জেলা স্তরে 'বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও'-এর জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছে। যার মাধ্যমে মহিলা, বিশেষ করে তরুণীরা তাঁদের সাংবিধানিক অধিকার এবং দায়িত্ব সম্পর্কে জানতে পারছেন, সচেতন হচ্ছেন।