বাংলায় এনআরসি, সিএএ লাগু করবেন না, সে ঘোষণা আগেই করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 'সরকারিভাবে' এবার ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার (এনপিআর)-এর বিষয়েও অসম্মতি জানাল বাংলা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের শরিক হয়েছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও। ইতিমধ্যেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কেরালা। এবার এনপিআর নিয়ে কিছুটা আনুষ্ঠানিকভাবেই নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল এই দুই রাজ্য। কেরালা ও বাংলা এই দুই রাজ্য অংশগ্রহণ করছে না এনপিআর-এ এমনটাই জানিয়ে দেওয়া হল ভারতের রেজিস্ট্রার জেনারেল (আরজিআই)-কে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (এমএইচএ) সূত্র জানিয়েছে এই দুই রাজ্যের আঞ্চলিক আদমসুমারি অফিসের থেকে এই তথ্য জানান হয়েছে আরজিআইকে। সূত্র জানায়, "রাজ্যগুলি তাঁদের জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের কাছে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে যে এনপিআর শুরু করলে জনসাধারণের মধ্যে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তাই এই মুহূর্তের জন্য এই প্রক্রিয়াটি বন্ধ রাখতে হবে। সেই খবর আঞ্চলিক আদমসুমারি অফিসগুলি থেকে আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।" তবে রাজ্যগুলি যদি এনপিআর-এ সহযোগিতা না করে সেক্ষেত্রে কেন্দ্র কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সে সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক তরফে কিছু বলা হয়নি। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই আদমসুমারির জন্য যে পরিমাণ লোক নিয়োগ করতে হয় তা রাজ্য সরকারের কাছ থেকেই নিয়োগ করতে হয় কেন্দ্রকে।
আরও পড়ুন: ভিনদেশী কালো টাকার কারবারিদের নাগরিকত্ব দিতেই সিএএ: মমতা
যদিও এনপিআর করতে সাহায্য করবে রাজ্য সরকার, এমন বিশ্বাসই রাখছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আধিকারিকেরা। তাঁদের তরফ থেকে বলা হয়, "রাজ্যগুলি সহায়তা করবে না, এটা আমরা বিশ্বাস করতে পারছি না। আদমসুমারির বিষয়ে সব রাজ্যই ইতিবাচক ইঙ্গিত দিয়েছে। কেরালা ও বাংলাকে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তথ্যগুলি তাদের রাজ্যগুলির জন্য উপকারী হতে চলেছে। ২০১০ এবং ২০১৫ সালেও তাঁরা এই আদমসুমারিতে অংশগ্রহণ করেছিল। পশ্চিমবঙ্গ রেশন কার্ডের জন্য এই এনপিআরের তথ্যই ব্যবহার করেছিল।"
আরও পড়ুন: ‘সিএএ প্রত্যাহার হোক, বাতিল হোক এনআরসি-এনপিআর’, প্রস্তাব ২০ বিরোধী দলের বৈঠকে
যদিও কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের সঙ্গে এই ইস্যুতে কোনও কথা হয়নি। সরকারি আধিকারিকদের একজন অবশ্য বলেছেন, "সরকার বিশ্বাস করে যে জনসাধারণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।" তবে এনপিআরের বেশ কিছু বিষয় নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। নাগরিকত্ব নীতি, ২০০৩ অনুসারে যদি কোনও পরিবারের প্রধান তাঁদের তথ্য সরবরাহ না করে কিংবা ভুল তথ্য সরবরাহ করে, সেক্ষেত্রে ১০০০ টাকা জরিমানা করা হবে। ২০১০ সালেও একই কথা উল্লেখ করা ছিল এনপিআরের ফর্মে। উল্লেখযোগ্যভাবে ২০২০ সালের এই এনপিআর ফর্মে কিন্তু বাদ রাখা হচ্ছে এই সতর্কবার্তাটি। তবে তথ্য সংক্রান্ত একটি প্রতিশ্রুতি রাখা হবে সেখানে, এমনটাই জানা গিয়েছে।
Read the full story in English