দু'মাস ধরে 'চিকিৎসা' চলছে মৃত বাবার, আইপিএস-এর বাংলোয় প্রবেশ নিষেধ পড়শিদের

"অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসার শেষ কথা নয়, বিজ্ঞানের বাইরেও অনেক কিছু রয়েছে। আমার বাবা বেঁচে রয়েছেন। ওনার চিকিৎসা চলছে। ছয় দশকের বেশি সময় ধরে যোগা করেছেন বাবা। এখন যোগ-নিদ্রায় রয়েছেন।

"অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসার শেষ কথা নয়, বিজ্ঞানের বাইরেও অনেক কিছু রয়েছে। আমার বাবা বেঁচে রয়েছেন। ওনার চিকিৎসা চলছে। ছয় দশকের বেশি সময় ধরে যোগা করেছেন বাবা। এখন যোগ-নিদ্রায় রয়েছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
mp ips officer

এডিজেপি-র সরকারি বাংলো

বিগত মাস দুয়েক ধরে ৫৫ বছরের রাজেন্দ্র মিশ্র প্রতিবেশিদের বলে আসছেন তাঁর সরকারি বাংলোর ঘরেই চিকিৎসা হচ্ছে ৮৪ বছরের বাবার। চিকিৎসায় সাড়াও দিচ্ছেন তিনি। কিন্তু পরিবারের সদস্য ছাড়া ঘরে ঢোকার অনুমতি নেই কারোর। এ পর্যন্ত গল্পটা নিতান্তই সাধারণ। আসল কথা হল, মধ্যপ্রদেশের আইপিএস অফিসার রাজেন্দ্র মিশ্রের বাবাকে ১৪ জানুয়ারি মৃত ঘোষণা করেছে ভূপালের এক বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

Advertisment

মা, ভাই-বোন ছাড়াও প্রবেশানুমতি রয়েছে ভেষজ চিকিৎসক। পাঁচমারি থেকে চিকিৎসার উপকরণ জোগাড় করে আনেন তিনি।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ১৪ জানুয়ারি মৃতের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল ডেথ সার্টিফিকেট। কিন্তু অতিরিক্ত ডিজিপি রাজেন্দ্র মিশ্র বলছেন তাঁর কাছে সে সব কিছুই নেই। রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের তরফে এডিজিপির বাংলোয় লোক পাঠানো হলে তিনি ঘরে ঢুকতে দেননি কাউকেই।

আরও পড়ুন, মাসুদ নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে, সময় লাগবে: চিন

Advertisment

"অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসার শেষ কথা নয়, বিজ্ঞানের বাইরেও অনেক কিছু রয়েছে। আমার বাবা বেঁচে রয়েছেন। ওনার চিকিৎসা চলছে। ছয় দশকের বেশি সময় ধরে যোগা করেছেন বাবা। এখন যোগ-নিদ্রায় রয়েছেন। চিকিৎসকেরা এসে জাগাতে চাইলে ওনার কিছু হয়ে যেতে পারে। সেটাকে হত্যাই বলা যায় না"? বললেন ১৯৮৭ ব্যাচের আইপিএস আধিকারিক।

ঈন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে মিশ্র আরও বলেন, "আমার বাবা যদি মারা যেতেন, এতদিনে দেহের পচন শুরু হয়ে যেত না? মৃতের কি চিকিৎসা করা যায়?  আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপারে বাইরের লোক মাথা ঘামাচ্ছে কেন বুঝতে পারছি না। আমার বাবার চিকিৎসা করানো আমার মৌলিক অধিকার"।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ৬ জন অ্যালোপ্যাথি এবং আয়ুর্বেদ চিকিৎসক নিয়ে ওড়িশা সরকারের একটি দল আধিকারিকের বাংলোয় তাঁর অসুস্থ বাবাকে দেখতে গিয়েছিল। বাড়ির বাইরে থাকা পুলিশ বাড়ির ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি।

আরও পড়ুন, বাংলায় মিডিয়া পর্যবেক্ষকের দাবি বিজেপির, প্রতিবাদ মমতার

গত মাসে, রাজেন্দ্র মিশ্রের মা মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টে লিখিত ভাবে আবদন করে আদালতের হস্তক্ষেপ থেকে নিস্তার পেতে চান। মানবাধিকার কমিশনে তিনি অভিযোগ জানান, তাঁর আত্মসম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত করছে আদালত।

মধ্যপ্রদেশের রাজ্য প্রশাসন জানিয়েছে, আদালতের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। যে হাসপাতালে ১৩ জানুয়ারি ভর্তি হয়েছিলেন রাজেন্দ্র মিস্রের বাবা কূলমণি মিশ্র, সেই বানশল হাসপাতালের মুখপাত্র লোকেশ ঝাঁ জানিয়েছেন, "পরদিনই ওই রোগী মারা যান। ডেথ সার্টিফিকেট পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল"।

সোমবার রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ ডিজেপিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আগামী ২৬ মার্চের মধ্যে অতিরিক্ত ডিজিপি-র বাড়িতে লোক পাঠিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে হবে।

Read the full story in English