একের পর এক নয়া প্রজাতির আক্রমণে বিপর্যস্ত ভারত সহ বিশ্বের ১০ টি দেশ! দুয়ারে কী আছড়ে পড়তে চলেছে চতুর্থ ঢেউ? অন্তত পরিসংখ্যান তেমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। গতকালের তুলনায় অনেকটাই বাড়ল দৈনিক সংক্রমণ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুসারে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ হাজার ৯৩০ জন। সেই সঙ্গে একদিনে করোনার বলি ৩৫ জন।
গতকাল এই সংখ্যা ছিল ১৬ হাজার ১৫৯ জন। সেই সঙ্গে একদিনে করোনার বলি হয়েছিলেন ২৮ জন। এর মাঝেই বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস বলেছেন ভারত সহ বিশ্বের ১০ টি দেশে নয়া কোভিড স্ট্রেন BA.2.75 এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। যকে সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণ হিসাবে অভিহিত করা হয়েছে। তবে এই নয়া স্ট্রেন কতটা শক্তিশালী তা জানতে আরও কিছুদিন এই ভ্যারিয়েন্টকে নিবিড় ভাবে পর্যবেক্ষণ করা দরকার বলেও জানিয়েছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা। “বিশ্বব্যাপী রিপোর্ট করা করোনা আক্রান্তের সংখ্যা গত দু সপ্তাহে প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে হু।
দেশ জুড়েই করোনার বাড়বাড়ন্ত অব্যাহত। লাখ পেরিয়েছে অ্যাকটিভ আক্রান্তের সংখ্যা। কেন হটাৎ করে এতটা বেড়ে গেল সংক্রমণ? গতকাল বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে করোনার চরিত্র বদল হলেও এখনও পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়নি এই ভাইরাস। সেই সঙ্গে করোনার এই বাড়বাড়ন্তের জন্য ওমিক্রন সাব-ভেরিয়েন্ট BA.4 এবং BA.5 এর দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়াকেই দায়ী করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : <ক্লাসে আসেনি কোনও পড়ুয়া, বিবেকের দংশনে ৩৩ মাসের বেতন ফেরালেন শিক্ষক>
পাশাপাশি হু জানিয়েছে বিশ্বের প্রায় ১১০ টি দেশে নতুন করে করোনা প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও মোট সংক্রমণের অর্ধেক এই দুই প্রজাতির জন্য দায়ী। হু’র তথ্য অনুসারে ২৫ জুন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে BA.5 ভ্যারিয়েন্ট ৩৬.৬ শতাংশ এবং BA.4 ভ্যারিয়েন্ট ১৫.৭ শতাংশ সংক্রমণের জন্য দায়ী। অর্থাৎ দেশের মোট সংক্রমণের ৫২ শতাংশের জন্য দায়ী এই দুই নয়া ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। এছাড়াও হু জানিয়েছে বিশ্বব্যাপী সংক্রমণ গত কয়েকদিনে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সঙ্গে কিছু দেশে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে ভারতে ইতিমধ্যেই BA.2.75-এর একটি নতুন সাব ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করা হয়েছে যাকে সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য দায়ি করা হয়েছে।
বিশ্বব্যাপী করোনার বাড়বাড়ন্তের কারণ কী?
ডব্লিউএইচও প্রধান এদিন দাবি করেন, ‘করোনা ভাইরাসের চরিত্র বদলালেও এখনও পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়নি এই ভাইরাস”। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে ভ্যাকসিনের কারণে বিশ্বব্যাপী প্রায় ২০ মিলিয়ন জীবন বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। ডাব্লুএইচও প্রধান বলেছেন বিশ্বের বেশ কয়েকটি নিন্ম আয়ের দেশে এখনও করোনা টিকা দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়নি যা ভবিষ্যতের পক্ষে আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
আরও পড়ুন: <দ্বিতীয় বার ছাদনাতলায় ভগবন্ত মান, মায়ের পছন্দের পাত্রীকে বিয়ে করছেন মুখ্যমন্ত্রী>
তিনি বলেন, মাত্র ৫৮টি দেশ ৭০ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। অনেক দেশেই বুস্টার ডোজের সংখ্যা সেভাবে বৃদ্ধি পায়নি। ফলে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। করোনা থেকে বাঁচার একমাত্র হাতিয়ার টিকাকরণ ও সঙ্গে কোভিড প্রটোকল মেনে চলা বলেও এদিন উল্লেখ করেন হু প্রধান।
ভারতে চলতি সপ্তাহে প্রায় ৬৪ হাজার নতুন সংক্রমণ ঘটেছে। পাশাপাশি ইতালিতে ৫ জুলাই একদিনে নতুন করে কোভিড ১৯ এ আক্রান্ত হয়েছেন ১.৩৫ লাখেরও বেশি মানুষ। ফ্রান্সে গত 24 ঘন্টায় ২ লাখের বেশি নতুন আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন মঙ্গলবার জানিয়েছে দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ সংক্রমণের পিছনে রয়েছে BA.4 এবং BA.5 সাব ভ্যারিয়েন্ট।