Advertisment

খাবার শেষ, হাতে টাকাও নেই, চরম দুর্দশায় ভিন রাজ্যে বাংলার শ্রমিকরা

অসহায় বাংলা থেকে ভিন রাজ্যে কাজে যাওয়া শ্রমিকরা। অনেকেই এখন রাজ্য ছাড়ার জন্য আফসোস করছেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

লকডাউনে চরম দুর্দশায় ভিন রাজ্যে বাংলার শ্রমিকরা।

বাড়তি লাভের আশায় বাংলা ছেড়েছিলেন মালদার মইদুল, সাবাজ, আজেমরা। ভাল-মন্দ মিলিয়ে চলছিল ভালই। কিন্তু, লকডাউনের জেরে গভীর সংকটে তাঁরা। কাজ বন্ধ, নেই উপার্জন। মিলছে না চাল-ডালও। ফলে আধ পেটা খেয়েই আপাতত দিন গুজরান। কিন্তু, দিন দু'য়েকের মধ্যেও তাও ফুরোবে। তখন কী হবে? অপাতত এই প্রশ্নেই অসহায় বাংলা থেকে ভিন রাজ্যে কাজে যাওয়া শ্রমিকরা। অনেকেই এখন রাজ্য ছাড়ার জন্য আফসোস করছেন।

Advertisment

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস দেশের বিভিন্ন রাজ্যে কাজে যাওয়া এইসব শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছে। ফোনের ওপার থেকে কথা বলার সময় কেউ কাঁদছেন, কারোর আবার আশঙ্কা ও আতঙ্কে গলা বুজে আসছে।

৩০ বছর বয়সী মালদার কালিয়াচকের মইদুল হরিয়ানায় রেওয়ারিতে নির্মাণ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। রোজ ৩৫০ মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন তিনি। লকডাউনের ফলে কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে গত রবিবার থেকে। ফলে আয় নেই। উপরন্তু, পেট চালাতে জমানো যেটুকু অর্থ রয়েছে তা দিয়েও চাল কেনা দায়। কারণ, বাইরে গেলেই জুটছে পুলিশের মার। দু'য়ে মিলিয়ে প্রাণ জেরবার। তাঁর কথায়, 'দু'দিনের মত আলু-চাল রয়েছে। বাজারও আমাদের বাসা থেকে প্রায় দু'কিলোমিটার দূরে। বাজার যেতে গেলেই পুলিশ মারছে। এমনকী পুলিশের থেকে সাহায্য চাইতে গিয়েও আমাদের দলের এক যুবক মার খেয়ে ফিরেছে।'

আরও পড়ুন: Live- ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৮৭৩

মোথাবাড়ির মহম্মদ শাহবাজ রেওয়ারিতেই সুপারভাইজারের কাজ করে মাসে পান পনেরো হাজার টাকা। লকডাউনের ফলে সেই টাকাও আর মিলবে কিনা জানা নেই তাঁর। প্রবল সমস্যায় পরে ফোনে শাহবাজ বলছিলেন, 'জেলায় সিভিক ভলেন্টিয়ারের কাজ করে যা পেতাম তাতে সংসার চলত না। তাই হরিয়ানায় কাজে চলে এসেছি। আমি এখন আফসোস করছি। বেতন জুটবে কিনাও বুঝতে পারছি না। দু'দিন পর কী খাব তা জানি না। বাঁচবো কিভাবে তা ভেবে পাচ্ছি না।'

একই ছবি, রাজস্থানের শিকারে কাজে যাওয়া ৮০ জন বাঙালি শ্রমিকের। এঁরা বেশিরভাগই প্লাসটিকের দ্রব্য  বেচে দিনে প্রায় ৬০০ টাকা লাভ করতো।

শিকারের বাঙালি শ্রমিক মালদার সৈয়দপুরের হাবিবুল শেখ জানান ২০ জন শ্রমিক ১০ ফুটের ঘরে কোনক্রণে মাথা গুঁজে রয়েছেন। বলেন, 'ধারে একবস্তা চাল নিয়ে এসেছি। দু'কিলো আলু রয়েছে এখনও। সেটা দিয়ে আর কতদিন চলবে? এরকম চললে না খেয়ে মরতে হবে।' একই জায়গায় বসবাসকারী কালিয়াচকের বাসিন্দা মহম্মদ আজেমের (৪২) কথায়, 'রবিবার থেকেই শাটডাউন হবে জানতাম না। তাই জমানো টাকায় প্লাসটিকের মাল কিনে ফেলেছি। এখন আর হাতে টাকা নেই। প্রয়োজনীয় সব দ্রব্যের দামও দু-তিন গুণ বেড়ে গিয়েছে।'

Read  the full story in English

coronavirus
Advertisment