Trump’s claim : মোদী সরকারকে ফেলতে ১৮২ কোটি? ট্রাম্পের তোলপাড় ফেলা দাবির সত্যতা কতটা?

Trump’s claim : ১৮২ কোটি টাকা খরচ... মোদী সরকারকে ফেলতে 'মাস্টারপ্ল্যান' বাইডেনের? ইউএসএআইডির তহবিল সম্পর্কে ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি! ভারতকে ২১ মিলিয়ন ডলার তহবিল দেওয়ার ট্রাম্পের দাবি কতটা সত্য?

author-image
IE Bangla Web Desk
আপডেট করা হয়েছে
New Update
News in West bengal Live: পশ্চিমবঙ্গের খবর লাইভ

ভারতকে ২১ মিলিয়ন ডলার সাহায্য! তোলপাড় ফেলা দাবি ট্রাম্পের

Trump’s claim : ১৮২ কোটি টাকা খরচ... মোদী সরকারকে ফেলতে 'মাস্টারপ্ল্যান' বাইডেনের? ইউএসএআইডির তহবিল সম্পর্কে ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি! ভারতকে ২১ মিলিয়ন ডলার তহবিল দেওয়ার ট্রাম্পের দাবি কতটা সত্য? 

Advertisment

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক চাঞ্চল্যকর ভাষণ এখন শিরোনামে। তিনি অভিযোগ করেছেন,  জো বাইডেন প্রশাসন ভারতে অন্য কোন সরকার গঠন করতে চেয়েছিলেন। মায়ামিতে এক অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, ভারতের নির্বাচনের জন্য বাইডেন সরকার ২১ মিলিয়ন ডলার তহবিল প্রদান করেছে। তিনি সেই তহবিল নিয়ে একাধিক প্রশ্নও তুলেছেন। ট্রাম্প এই ঘটনাকে মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের সাথে তুলনা করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে ২১ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৮২ কোটি টাকা) ব্যয় করার অভিযোগ করেছেন। 

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ সামনে এনেছেন। তিনি বলেছেন যে ভারতের নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য ২১ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৮২ কোটি টাকা) খরচ করা হয়েছে। ট্রাম্প প্রশ্ন তোলেন বাইডেন কী এর মাধ্যমে অন্য কোন দলকে নির্বাচনে জিততে সাহায্য করার চেষ্টা করছেন?ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পর  ভারতেও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা।

এই বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, যখন রাশিয়া মাত্র কয়েক ডলার খরচ করে মার্কিন নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে, তখন তাকে বড় ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। কিন্তু ভারতে, নির্বাচনকে প্রভাবিত করার জন্য বাইডেন প্রশাসন কোটি কোটি ডলার ব্যয় করেছে এবং এ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। ট্রাম্প আরও বলেন, ভারত সরকারের উচিত এই বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা এবং এটি গুরুত্ব সহকারে দেখা।

Advertisment

এই বিষয়টি সামনে আসার পর ভারতের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে জোর বাকবিতণ্ডা শুরু হয়েছে। বিজেপি এই নিয়ে কংগ্রেসকে নিশানা করেছে। 'ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বহিরাগত হস্তক্ষেপ' বলে অভিহিত করেছে এবং কংগ্রেসকে আক্রমণ করে বলেছে যে ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার জন্য বিদেশী শক্তিকে কাজে লাগানোর এক প্রচেষ্টা। বিজেপি নেতা অমিত মালব্য বলেছেন যে বিদেশি সংস্থাগুলি ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলিতে "পরিকল্পিত অনুপ্রবেশ" করছে এবং এর মধ্যে জর্জ সোরোসের মতো ব্যক্তিরাও থাকতে পারেন, যাকে কংগ্রেস এবং গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হয়।

FBI-ডিরেক্টরের দায়িত্ব নিয়েই বিরাট হুঙ্কার কাশের, চমকে উঠল তামাম বিশ্ব

তদন্ত হওয়া উচিত- কংগ্রেস
একই সাথে, কংগ্রেস এই বিষয়ে পাল্টা জবাব দিয়েছে এবং বলেছে যে ভারতের মতো গণতান্ত্রিক দেশে কোনও ধরণের 'বিদেশী হস্তক্ষেপ' বরদাস্ত করা হবে না। কংগ্রেস মোদী সরকারের কাছে গত কয়েক দশক ধরে ইউএসএআইডি কর্তৃক ভারতে প্রদত্ত সমস্ত তহবিলের বিবরণ প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছে। কংগ্রেস বলছে যে আমেরিকা যদি আগেও এই ধরনের তহবিল দিয়ে থাকে, তাহলে সেটিরও তদন্ত হওয়া  উচিত।

কংগ্রেস নেতারা বিজেপির বিরুদ্ধে এই বিষয়টিকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ করেছেন। কংগ্রেস বলছে, বিদেশ থেকে যদি কোনও সাহায্য দেওয়া হয়ে থাকে, তা তদন্ত করা উচিত, কিন্তু বিজেপি রাহুল গান্ধীকে টার্গেট করার জন্য এই ইস্যুকে ব্যবহার করছে। এটা লক্ষণীয় যে রাহুল গান্ধী বহুবার বিদেশে গিয়ে ভারতের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার আবেদন করেছেন, যার ভিত্তিতে বিজেপি তাকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করেছে।

এদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি (DOGE) ১৬ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করেছে যে তারা ভারতে ভোটারদের বুথমুখী করতে USAID থেকে যে  ২ কোটি ১০ লক্ষ ডলারের তহবিল দিত তা বাতিল করা হয়েছে। ট্রাম্পের পদক্ষেপের পর, ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি, বিরোধী কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় 'বহিরাগত প্রভাবের' অভিযোগ তুলেছে। 

মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেন, "কেন ভারতে ভোটারদের বুধমুখী করার জন্য ২১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আমরা দিচ্ছি ? ওদের প্রচুর অর্থ রয়েছে ৷ বিশ্বের সর্বোচ্চ কর প্রদানকারী দেশগুলির মধ্যে ভারত অন্যতম। ওদের করের পরিমাণ এত বেশি যে, আমরা সেভাবে বাণিজ্য করতে পারি না।"ট্রাম্পের দাবি, অতিরিক্ত ভারতীয় শুল্কের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেখানে খুব বেশি বাণিজ্য করতে পারে না ৷

ট্রাম্পের দাবি কতটা সত্য?
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তদন্তে জানা গেছে যে এই ২১ মিলিয়ন ডলার ২০২২ সালে বাংলাদেশের জন্য অনুমোদিত হয়েছিল।  ভারতের জন্য নয়। তদন্ত রিপোর্ট অনুসারে, এই ২১ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে, ১৩.৪ মিলিয়ন ডলার ইতিমধ্যেই বিতরণ করা হয়েছে।  শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে অপসারণের মাত্র সাত মাস আগে বিপুল অর্থ বরাদ্দ করা হয়। বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে DOGE-এর তালিকায় থাকা দুটি USAID তহবিল, যেগুলি কনসোর্টিয়াম ফর ইলেকশনস অ্যান্ড পলিটিক্যাল প্রসেস স্ট্রেংথেনিং (CEPPS) এর মাধ্যমে পাঠানো হয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যয়ের সরকারি   তথ্য সূত্র অনুসারে, ২০০৮ সাল থেকে ভারতে কোনও USAID-অর্থায়নকৃত CEPPS প্রকল্প নেই। 

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের একজন মুখপাত্র ইউএসএআইডির নির্দিষ্ট কর্মসূচি সম্পর্কে মন্তব্য করতে চাননি। তবে তিনি বলেন যে ইউএসএআইডি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের উন্নয়নে এক গুরুত্বপূর্ণ  অংশীদার।  শাসনব্যবস্থা এবং গণতন্ত্রের প্রচারের সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন পরিষেবা খাতকে উন্নত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন  করে আসছে। গত সেপ্টেম্বরে, ইউএসএআইডি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে ২০০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের   চুক্তি স্বাক্ষর করে। তবে, ট্রাম্পের নতুন নীতির অধীনে, মার্কিন সরকার বিশ্বব্যাপী ইউএসএআইডির তহবিল পুনর্মূল্যায়ন করছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আশা করে যে ট্রাম্প প্রশাসন বাংলাদেশ এবং বৃহত্তর বিশ্বের উন্নতির জন্য এই নীতি পরিবর্তন পুনর্বিবেচনা করবে।

Donald Trump