পুলিশের উপর আস্থা হারিয়েছিল। কিন্তু ভরসা রেখেছিলেন, সত্যের জয় একদিন হবেই। আর তাই হল। যোগী প্রশাসন থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা, প্রত্যেকে যখন ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছিলেন, তখনও বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা রেখেছিলেন হাথরাসের নির্যাতিতার পরিবার। শুক্রবার যখন সিবিআই চার্জশিট পেশ করে গণধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে চারজনের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর কথা জানাল তখন বাকরুদ্ধ হয়ে যায় নির্যাতিতার পরিবার।
নির্যাতিতার দাদা জানিয়েছেন, মা-বাবাকে চার্জশিট ফাইল করার ব্যাপারে তিনি কিছু জানাননি। "টিভিতে খবরটা দেখে বাবা কেঁদে ফেলেন। আমরা চার্জশিট নিয়ে কোনও আশায় ছিলাম না। তাই আমরা তা নিয়ে কাউকে কিছু বলিনি। দেখতে চাইছিলাম, ওঁরা কী বলেন।" বলেছেন নির্যাতিতার বড় দাদা। প্রসঙ্গত, হাথরাস কাণ্ডে শুক্রবার চার্জশিট জমা দিল সিবিআই। চার্জশিটে চার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ১৯ বছরের দলিত তরুণীকে গণধর্ষণ ও খুনের চার্জ এনেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। হাথরাস আদালত এবার এই চার্জশিটের ভিত্তিতে ট্রায়াল শুরু করবে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ৩৫৪, ৩৭৬ এ, ৩৭৬ ডি এবং ৩০২ ধারায় শ্লীলতাহানি, গণধর্ষণ এবং খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। আইপিসি এবং এসসি এসটি আইনে মামলা রুজু হয়েছে।
আরও পড়ুন হাথরাস কাণ্ডে চার্জশিট জমা দিল সিবিআই, ৪ জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ-খুনের মামলা
আরেক ভাই বলেছেন, "ঘটনার পর থেকে পড়শি, গ্রামবাসী এমনকী জেলাশাসকও আমাদের বিরুদ্ধে ছিলেন। তাঁরা আমাকেই বোনের খুনি হিসাবে অভিযুক্ত করেছিল। এই খুনকে পরিবারের সম্মান রক্ষায় খুন হিসাবে দেখিয়েছিল। কিন্তু আমাদের আশা ছিল। সত্যের সিঁড়িতে এটা আমাদের প্রথম ধাপ। এবার আদালতের উপর নির্ভর করছে ন্যায় বিচার। আমরা রায়ের অপেক্ষা করব। প্রমাণ করব, আমরাই সত্যি ছিলাম।" যদিও উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার কথা রেখে পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। কিন্তু নির্যাতিতার পরিবারের দাবি, জীবন অনেক বদলে গিয়েছে আগের থেকে। গ্রামের সবাই তাঁদের থেকে দূরে চলে গিয়েছেন। বদনাম হওয়ার ভয়ে। সিআরপিএফ জওয়ানরা এখনও তাঁদের বাড়িরে বাইরে প্রহরারত। কিন্তু সংখ্যায় আগের থেকে কম।
অভিযোগ, দলিত তরুণীকে উচ্চবর্ণের কয়েক জন যুবক গত ১৪ সেপ্টেম্বর গণধর্ষণ করে। এরপর গত ২৯ সেপ্টেম্বর দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যু হয় নির্যাতিতার। এরপর শোরগোল পড়ে যায় ঘটনা নিয়ে। গত ৩০ সেপ্টেম্বর নির্যাতিতার মরদেহ জোর করে গভীর রাতে পরিবারের আপত্তি সত্ত্বেও সৎকার করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে হাথরাস পুলিশের বিরুদ্ধে। যদিও পুলিশের দাবি ছিল, পরিবারের মতেই নির্যাতিতার মরদেহর সৎকার করা হয়েছে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন