সরকারের বিরুদ্ধেই এবার সরব শাসকদলের দুই নেতা। মন্দিরের উৎসব-মেলায় মুসলিম ব্যবসায়ীরা দোকান দিতে পারবেন না, কর্ণাটক সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে এবার প্রতিবাদ করেছেন দুই বিজেপি বিধায়ক। সিদ্ধান্তকে 'অন্যায়, অগণতান্ত্রিক এবং পাগলামি' বলেছেন দুই শাসকপক্ষের নেতা। যা নিয়ে অস্বস্তি গেরুয়া শিবিরের অন্দরে।
উদুপি এবং শিবামোগা জেলায় মন্দির উৎসবে মুসলিম ব্যবসায়ীদের দোকানে নিষেধাজ্ঞা ঘিরে সরগরম কর্ণাটক। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, হিন্দু দাগরণ ভেদিকে, বজরং দল এবং শ্রীরাম সেনার মতো হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির আবদার মেনে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্ণাটক সরকার। এরই বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন দুই বিধায়ক এ এইচ বিশ্বনাথ এবং অনিল বেনাকে। যদিও বিজেপি সরকার ২০০২ সালে তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের নির্দেশিকাকেই অনুসরণ করেছে বলে দাবি করেছে।
বিশ্বনাথ বলেছেন, "এটা পাগলামি। কোনও ঈশ্বর বা ধর্ম এধরনের শিক্ষা দেয় না। সব ধর্মকেই গুরুত্ব দিতে হয়। রাজ্য সরকারের এই বিষয়ে পদক্ষেপ করা উচিত। আমি জানি না সরকার কেন এই ইস্যতে নীরব।" রবিবার মাইসুরুতে এই সিদ্ধান্তকে অগণতান্ত্রিক আখ্যা দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেছেন, "ইংল্যান্ডে কতজন ভারতীয় রয়েছেন? বিশ্বে কতজন ভারতীয় রয়েছেন, তাহলে কি মুসলিম দেশগুলিতে ভারতীয়রা কাজ করেন না? এই দেশগুলি যদি আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করে তাহলে কী হবে! মুসলিমরা দেশভাগের পর ভারতেই থেকে গেছেন। ওঁরা জিন্নার দেশে যাননি। এটা আমাদের মানতে হবে, ওঁরাও ভারতীয়। অন্য কোনও দেশের নাগরিক নন।"
আরও পড়ুন ভোটের পর প্রথম, বিধানসভায় সৌজন্য বিনিময় যোগী-অখিলেশের, ভিডিও ভাইরাল
বিধায়কের প্রশ্ন, "আমি বুঝতে পারছি না কোন ভিত্তিতে মুসলিম ব্যবসায়ীদের নিশানা করা হচ্ছে। এটা রাজ্যের জন্য ভাল নয়। সরকারের উচিত এটা নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া নাহলে মানুষ পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেবে।" প্রসঙ্গত, বিশ্বনাথ প্রাক্তন মন্ত্রী এবং জনতা দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। ২০১৯ সালে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন।
এদিকে, মুসলিম অধ্যুষিত বেলাগাভি উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক অনিল বেনাকে জানিয়েছেন, "মুসলিম ব্যবসায়ীদের উপর নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে তিনি। তিনি বলেছেন, মন্দির উৎসবে কোনওমতেই মুসলিম ব্যবসায়ীদের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো যায় না। আমাদের এগুলোর অনুমতি দেওয়া উচিত নয়। সংবিধানে সবার সমানাধিকারের কথা বলা আছে। যে কোনও জায়গায় যে কেউ ব্যবসা করতে পারেন। আমরা কোনও নিষেধাজ্ঞা চাপাতে পারি না।"