দেশজুড়ে প্রবল প্রতিবাদের জেরে শেষমেশ পিছু হঠল কেন্দ্রীয় সরকার। বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করে নিল মোদী সরকার। আজ গুরু নানকের জন্মদিনে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে এই ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কৃষকদের ফের জমিতে ফিরে চাষের কাজে মনোনিবেশের বার্তা প্রধানমন্ত্রীর।
Advertisment
দেশজুড়ে সাঁড়াশি প্রতিবাদের জেরে শেষমেশ পিছু হঠল কেন্দ্র। নতুন তিনটি কৃষি আইনের প্রতিবাদে তুমুল বিক্ষোভ চলে রাজধানীতে। রাজ্যে-রাজ্যে বিক্ষোভে সোচ্চার হন কৃষকরা। নতুন তিনটি কৃষি আইনের মাধ্যমে কৃষকদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলে কৃষকদের সংগঠনগুলি। ২০২০-র সেপ্টেম্বরে তিনটি বিল পাশের পর থেকে রাস্তায় নেমে প্রবল বিক্ষোভে সোচ্চার হন লক্ষ-লক্ষ কৃষক। হরিয়ানা, পাঞ্জাব থেকে কৃষকরা এসে ভিড় জমান রাজধানী দিল্লির সীমানায়। মাসের পর মাস ধরে দিল্লির সীমানা ঘেরাও করে চলে বিক্ষোভ। সেই বিক্ষোভে উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, বিহার-সহ একাধিক রাজ্য থেকে কৃষকরা গিয়ে জড়ো হন। কংগ্রেস-সহ বিজেপি বিরোধী একাধিক দলের নেতারাও বিক্ষোভে পাশে ছিলেন শুরু থেকেই।
নতুন তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি ওঠে সর্বত্র। এমনকী আইন বাতিলের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে মামলা পর্যন্ত হয়েছে। শীর্ষ আদালত অবশ্য ওই তিনটি কৃষি আইন কার্যকরের ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে। আজ গুরু নানকের জন্মদিনে বড় ঘোষণা করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মেদী। জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে এদিন তিনি বলেন, 'এই আইন আনার পিছনে আমাদের সত্ উদ্দেশ্য ছিল। শুরু থেকেই কৃষকদের বোঝানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। তিনটি আইনকে স্বাগতও জানিয়েছিল একাধিক কৃষক সংগঠন। তবে দু'বছর ধরে সেই আইনের প্রয়োগ বন্ধ রাখা হয়েছিল। এবার তিনটি কৃষি আইনই প্রত্যাহার করে নেওয়া হল।'
Advertisment
একাংশের কৃষককে বোঝাতে পারা যায়নি বলেই কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে হল বলে এদিন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই আইন প্রত্যাহারের পরেই কৃষকদের উদ্দেশ্যে তাঁর আরও ঘোষণা, 'এবার জমিতে ফিরে যান। চাষের কাজে মনোনিবেশ করুন। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কেন্দ্র ক্ষুদ্র চষিদের সুবিধা দিয়েছে। কেন্দ্রের কৃষি বাজেট আগের তুলনায় পাঁচ গুণ বাড়ানো হয়েছে। কৃষকদের জন্য একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।'
এদিকে, কেন্দ্রের তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের পিছনে অন্য কারণ দেখছে ওয়াকিবহাল মহল। বছর ঘুরলেই গোবলয়ের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। বিধানসভা ভোট রয়েছে পঞ্জাব, গোয়াতেও। সদ্য সমাপ্ত উপনির্বাচনগুলিতে একাধিক রাজ্যে বিজেপির ফল ভালো হয়নি। সেই কারণেই কেন্দ্র-বিরোধী স্বর চাপা দিতেই মোদী সরকারের এই পদক্ষেপ বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।