উন্নাও কিশোরী ধর্ষণে অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ককে শুধু হেফাজতে নেওয়াই যথেষ্ট নয়। তাকে গ্রেফতার করারও নির্দেশ দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। সিবিআই আজ সকালে বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গারকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। এদিন আদালতে সরকারি আইনজীবী এ কথা জানানোর পরেই মুখ্য বিচারপতি ডি বি ভোসলে ও বিচারপতি সুনীত কুমারের বেঞ্চ তদন্তকারী সংস্থাকে অভিযুক্তকে গ্রেফতারির নির্দেশ দেয়। আদালতে সরকারি আইনজীবী জানিয়েছিলেন, ধর্ষণে অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ককে সিবিআই নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে, তাকে গ্রেফতার করা হয়নি।
একইসঙ্গে আদালত সিবিআইকে নিরপেক্ষ ও কড়া হাতে তদন্ত চালানোর নির্দেশ দিয়েছে। এ ঘটনায় অন্য অভিযুক্তেদর জামিন নাকচ করা যায় যায় কিনা সে দিকটিও তদন্তকারী সংস্থাকে খতিয়ে দেখতে বলেছে আদালত।
আরও পড়ুন অভিযুক্ত বিজেপি নেতাকে দাদা বলে ডাকত উন্নাও কিশোরী!
বৃহস্পতিবার সিবিআই তদন্তভার গ্রহণ করার পরেই বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গারেকে ভোর ৫টার সময়ে লখনউ দফতরে ডেকে পাঠায়। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, সিবিআই আধিকারিকরা অপরাধস্থল পরিদর্শনের পাশাপাশি জেল আধিকারিক, পুলিশ আধিকারিক ও বিজেপি বিধায়ক কুলদীপের পরিবারের লোকজনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।
উত্তরপ্রদেশ সরকার সিবিআই-এর হাতে এ মামলার তদন্তের দায়িত্বভার ন্যস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই, বৃহস্পতিবার গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গারের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। অন্যান্য ধারার সঙ্গে পকসো আইনেও অভিযুক্ত করা হয় কুলদীপকে। জেল হাজতে ধর্ষিতা কিশোরীর বাবার মৃত্যু, ও তাঁকে পিটিয়ে মারার অভিযোগে কুলদীপ সিং সেঙ্গারের ভাই অতুলের গ্রেফতারির ঘটনার বেশ কিছুদিন পর কুলদীপের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
এই ধর্ষণের ঘটনা প্রকাশ্যে আসে নিগৃহীতা কিশোরীর মুখ্যমন্ত্রীর যোগী আদিত্যনাথের বাড়ির সামনে আত্মহত্যার প্রচেষ্টার পর। অভিযোগ, ২০১৭ সালের ৪ জুন এক আত্মীয়ের সঙ্গে চাকরিপ্রার্থী হিসেবে বিধায়কের বাড়ি গিয়েছিল ওই কিশোরী। সে সময়েই তাকে ধর্ষণ করা হয়। এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ওই কিশোরীর পরিবারের তরফ থেকে আদালতে গিয়ে ধর্ষণ মামলায় বিজেপি বিধায়কের নাম অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানানো হয়। কিশোরীর মায়ের অভিযোগ, বহুবার এফআইআর দাখিল করার চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁরা ব্যর্থ হয়েছেন, কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
মামলা দায়ের করার পর, চলতি বছরের ৩ এপ্রিল, কিশোরীর বাবার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে অভিযোগ আনা হয়, এবং তার দুদিন পরে তাঁকে জেলে পাঠানো হয়। জেলেই মৃত্যু হয় কিশোরীর বাবর। পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট অনুযায়ী তাঁর শরীরে প্রচুর আঘাতের চিহ্ন ছিল।
গত বুধবার বিশেষ তদন্তদল এ মামলায় তাদের রিপোর্ট সরকারের কাছে জমা দেয়। তাদের দেওয়া রিপোর্টে একটি ভিডিও রয়েছে, যাতে দেখা যাচ্ছে বিজেপি বিধায়কের ভাই অতুল পুলিশের উপস্থিতিতে কিশোরীর বাবাকে মারধর করছে।