পুলওয়ামা হামলা নিয়ে ওঁদের কেউ প্রশ্ন তুলেছিলেন। কেউ আবার বালাকোটে এয়ার স্ট্রাইক নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন। ফেসবুক ও হোয়াটস অ্যাপে এ নিয়ে পোস্টও করেছিলেন ওঁরা। আর এর জেরেই বিপাকে পড়লেন উত্তরপ্রদেশের সরকারি স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক। পুলওয়ামা ও বালাকোটে এয়ার স্ট্রাইক নিয়ে ‘আপত্তিকর’ কথা সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করায় সে রাজ্যের কমপক্ষে ৭ জন সরকারি স্কুলের শিক্ষককে সাসপেন্ড করল উত্তরপ্রদেশ সরকার।
এছাড়াও সাসপেনশনের মুখোমুখি হয়েছেন বেসিক শিক্ষা অধিকারী(বিএসএ), গ্রুপ এ এডুকেশন সার্ভিস অফিসার। একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকের বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এ প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব প্রভাত কুমার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, বিএসএ-কে সাসপেন্ড করার আগে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন, চাকরির বাজারে ক্রমশ কমছে গ্রামীণ মহিলা কর্মীর সংখ্যা: রিপোর্ট
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি একটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে পুলওয়ামা হামলার নেপথ্যে চক্রান্ত থাকতে পারে বলে মুখ খুলেছিলেন মুজফফ্রনগরের বিএসএ দীনেশ যাদব। এ অভিযোগে দু’দিন পর ২১ ফেব্রুয়ারি তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। এ প্রসঙ্গে দীনেশ জানিয়েছেন, ‘‘আমি কোনও সার্ভিস রুল লঙ্ঘন করিনি। একটা গ্রুপে বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলাম। কর্তৃপক্ষের কাছে আমার বক্তব্য পেশ করেছি।’’
শিক্ষকদের একটি হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে পুলওয়ামা হামলা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সাসপেন্ড করা হয়েছে বারাবাঁকির প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরেন্দ্র কুমারকে। এ প্রসঙ্গে ওই শিক্ষকের বক্তব্য, ‘‘কর্তৃপক্ষকে আমার বক্তব্য জানাব। সাসপেনশনের সিদ্ধান্ত ঠিক নয়।’’
হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ‘স্যালুট’ জানিয়েছিলেন বলে অভিযোগ সুলতানপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক অমরেন্দ্র কুমারের বিরুদ্ধে। একথা বলে অমরেন্দ্র সার্ভিস রুল ভেঙেছেন বলে অভিযোগ। গত ২ মার্চ তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। এ প্রসঙ্গে ওই শিক্ষক বলেছেন, ‘‘চার্জশিট পেয়েছি। আমি কোনও আইন লঙ্ঘন করিনি। তদন্তকারী আধিকারিককে জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
আরও পড়ুন, ‘বার গার্ল’-দের দিকে টাকা ছোড়ার জরিমানা অনাথ আশ্রমে দান!
ফেসবুকে বালাকোটে এয়ার স্ট্রাইক নিয়ে প্রশ্ন তোলায় গত ৬ মার্চ সাসপেন্ড করা হয় রায়বরেলির প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক রবীন্দ্র কানোজিয়াকে। এ প্রসঙ্গে ওই শিক্ষক বলেছেন, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ। এখনও সাসপেনশনের অর্ডার পাইনি...।’’
রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি সাসপেন্ড করা হয় মির্জাপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিশংকর যাদবকে। এ প্রসঙ্গে রবিশংকর বলেছেন, ‘‘এ ধরনের কোনও মন্তব্য করিনি। কর্তৃপক্ষকে আমার বক্তব্য জানিয়েছি।’’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি সাসপেন্ড করা হয় আজমগড়ের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক নন্দজি যাদবকে। তিনি কিছু ভুল করেননি বলে জানিয়েছেন যাদব। ৬ মাস পর বেতন পাওয়া নিয়ে কটাক্ষের সুরে মন্তব্য করার অভিযোগে শ্রাবস্তীর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সত্যপ্রকাশ ভার্মাকে শো-কজ করা হয়েছে।
ফেসবুকে মোদীকে নিয়ে পোস্ট করার অভিযোগে গত ১৬ মার্চ সাসপেন্ড করা হয়েছে রায়বরেলির প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নীরঙ্কর শুক্লাকে। এখনও সাসপেনশন অর্ডার পাননি বলে দাবি তাঁর। মোদীকে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট করার অভিযোগে গত ১৬ মার্চ রায়বরেলির প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষক রাজেশ শুক্লাকেও সাসপেন্ড করা হয়েছে। ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট করার অভিযোগে শাহজাহানপুরে একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষক দিলীপ সিং যাদবের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Read the full story in English