Advertisment

উত্তরপ্রদেশে নির্যাতিতার বাবার মৃত্যু, ধৃত অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়কের ভাই

উত্তরপ্রদেশের উন্নাও জেলায় নির্যাতিতা কিশোরীর বাবার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার করা হল বিজেপি নেতার ভাইকে। ওই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধেই ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন কিশোরী।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
kuldip singh senger

ধর্ষণে অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গের।

উত্তরপ্রদেশের উন্নাও জেলায় নির্যাতিতা কিশোরীর বাবার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার করা হল বিজেপি নেতার ভাইকে। ওই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধেই ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিলেন কিশোরী। মঙ্গলবার সকালেই এ ঘটনায় বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গেরের ভাইকে গ্রেফতার করল পুলিশ। নির্যাতিতার বাবাকে মারধরের অভিযোগে এদিন অতুল সিং সেঙ্গেরকে গ্রেফতার করে লখনউ ক্রাইম ব্রাঞ্চ। রাজ্যের ডিজির নির্দেশেই বিজেপি বিধায়কের ভাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। ধৃতের বিরুদ্ধে ৩০৪, ৩২৩ ও ৫০৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অন্যদিকে এই ঘটনায় সোমবারই বিধায়কের সমর্থক বলে পরিচিত ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত চারজনের নাম বিনীত, বাউয়া, শাইলু ও সোনু। এ ঘটনায় যোগীরাজ্যে বিজেপির যে আরও অস্বস্তি বাড়ল, তাতে সন্দেহ নেই।

Advertisment

২০১৭ সালের জুন মাসে ১৭ বছরের কিশোরীরকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গেরের বিরুদ্ধে। বছর ঘুরলেও অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন ওই কিশোরী ও তাঁর পরিবার। এ নিয়ে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের দ্বারস্থও হয়েও কোনও ফল না মেলেনি বলে অভিযোগ। এমনকি, থানায় অভিযোগ জানানোয় তাঁদের হুমকি দেওয়া হয় বলেও জানিয়েছেন তিনি। রবিবার এ ঘটনা নয়া মোড় নেয়। অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করা হলে আত্মহত্যার হুমকি দেন অভিযোগকারিণী। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বাড়ির সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। পুলিশ এসে তাঁদের উদ্ধার করে। এর পরের দিনই কিশোরীর বাবার হেফাজতে মৃত্যু ঘটে। সে ঘটনা জানাজানি হতে হৈচৈ শুরু হয়। এরপরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ-প্রশাসন।

অন্যদিকে সোমবার কিশোরীর বাবার একটি ভিডিও ক্লিপ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। যে ঘটনার জেরে মাখি থানার স্টেশন হাউস অফিসার ও আরও ৫ পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়।

আরও পড়ুন, উত্তরপ্রদেশে নির্যাতিতার বাবার মৃত্যু পুলিশ হেফাজতে! অস্বস্তিতে যোগী সরকার

উন্নাও জেলার জেল সুপারিনটেন্ডেন্ট এ কে সিং জানিয়েছেন যে, গত ৪ এপ্রিল যখন কিশোরীর বাবাকে জেলে নিয়ে আসা হয়েছিল, তখন তাঁর দেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল। ৫ এপ্রিল কিশোরীর বাবার বমি হওয়ায় জেলা হাসপাতালের চিকিৎসককে জেলে ডেকে পাঠানো হয় বলেও তিনি জানিয়েছেন। ৬ এপ্রিল কিশোরীর বাবাকে ওষুধ দেওয়া হয়। রক্ত পরীক্ষা, মূত্র পরীক্ষা ও আলট্রাসোনোগ্রাফির জন্য গত ৭ এপ্রিল কিশোরীর বাবাকে জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষায় কোনও কিছু না মেলায় সে রাতেই তাঁকে জেলে আনা হয় বলে জানিয়েছেন এ কে সিং। পরের দিন ফের পেট ব্যথা ও বমি হয় কিশোরীর বাবার। সেদিন তাঁর রক্তচাপও কম ছিল। সে করণে কিশোরীর বাবাকে ওইদিন রাত ৮টা ৪৫ মিনিট নাগাদ জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ভোর ৩টে ৪৫ মিনিট নাগাদ হাসপাতালে মারা যান কিশোরীর বাবা।

অন্যদিকে এখনও ধর্ষণে অভিযুক্ত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিং সেঙ্গেরের বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর দায়ের করা হয়নি।  গতকালই নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কুলদীপ। তাঁর ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্যই এসব মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন বিজেপি বিধায়ক। এমনকি, সঠিক তদন্তে যাতে আসল অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হয়, সে ব্যাপারে পুলিশ-প্রশাসনর কাছে আর্জি জানিয়েছেন কুলদীপ।

yogi adityanath national news
Advertisment