উত্তরপ্রদেশের বদায়ুনে হামলার শিকার হলেন এক দলিত ব্যক্তি। অভিযোগ, নিজের জমির ফসল পরে কেটে আগে উচ্চবর্ণীয়দের জমির ফসল কেটে দিতে হবে, এই হুকুমে না বলেছিলেন তিনি। তারই শাস্তি হিসেবে মূত্রপান করিয়ে, মারধোর করে গোঁফ ছাঁটা হয়েছে সীতারাম বাল্মীকি নামের এক ব্যক্তির। এ ঘটনার জেরে আরও একবার শিরোনামে যোগীরাজ্য।
গত ২৩ এপ্রিল গ্রামের উচ্চবর্ণের কয়েকজন সীতারাম বাল্মীকি নামের ওই দলিত ব্যক্তির উপর এমন নির্যাতন চালান বলে অভিযোগ। ওইদিন নিজের ১০ বিঘা গমক্ষেতের ফসল তোলার জন্য সীতারাম বাড়ি থেকে বেরোন বলে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী জয়মালা। সেদিন এই গ্রামের উচ্চবর্ণীয় বিজয় সিং, পিংকু সিং, শৈলেন্দ্র সিং ও বিক্রম সিং, এই চারজন তাঁদের ২০ বিঘা জমির ফসল আগে তুলে দেওয়ার হুকুম দেন সীতারামকে। সীতারাম জানান, তিনি অসুস্থ, ফলে তাঁর পক্ষে এ কাজ করা সম্ভব নয়। এর পরেই শুরু হয় মারধোর। প্রথমে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে নিমগাছে বেঁধে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এরপরে তাঁর গোঁফ কামিয়ে দেওয়া হয়। জোর করে সীতারামকে মূত্রপান করানো হয় বলেও অভিযোগ করেছেন সীতারামের স্ত্রী। স্বামীকে বাঁচাতে ১৪ বছরের ছেলেকে সঙ্গে করে হাতজোড় করে কাকুতিমিনতি করেন জয়মালা। কিন্তু তাতে কর্ণপাত করেননি কেউ। মারধোর চলার সময়ে, নিগ্রহকারীরা হুংকার দেন, ‘‘সরকার আমাদের!’’
আরও পড়ুন, আবারও ধর্ষণ! উত্তরপ্রদেশে একদিনে ৪টি যৌন নির্যাতনের অভিযোগ
কাকুতিমিনতিতে কাজ না হওয়ায় স্বামীকে বাঁচাতে ১০০ ডায়াল করে পুলিশে খবর দেন সীতারামের স্ত্রী। পুলিশ এসে সীতারামকে উদ্ধার করলেও, রাতের দিকে ফের তাঁদের বাড়িতে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। সে ঘটনার পর গ্রেফতার করা হয় নিগৃহীত সীতারামকেই। পরদিন সকালে জামিনে ছাড়া পান সীতারাম। হেফাজতে নেওয়ার পর সীতারামকে পুলিশও মারধর করেছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁর বাবা রাম গুলাম।
আরও পড়ুন, ফের ধর্ষণ করে খুন শিশুকে, এবার উত্তরপ্রদেশ
এ ঘটনায় সোমবার ৪ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বদাউনের এসএসপি অশোক কুমার শর্মা। ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ঘটনার জেরে এক পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। সীতারামের বাড়ির সামনে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন, দুই দলিত কিশোরী ও এক মুসলিম কিশোরের রহস্যমৃত্যু রাজস্থানে
এদিকে অভিযুক্তদের দাবি, ফসল তোলার কাজের জন্য সীতারাম অগ্রিম ৬ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। পরে তিনি কাজ করতে অস্বীকার করেন।
এরই মধ্যে মঙ্গলবার থেকে খোঁজ মিলছে না সীতারামের। পরিবারের লোকজনও তাঁর হদিশ জানাতে পারেনি।