ভোটার কার্ড, জমির কাগজ, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট বা প্যান কার্ড, অভিভাবকদের এনআরসি ক্লিয়ারেন্স সহ ১৫টি নথি নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না বলে নির্দেশ দিল গুয়াহাটি হাইকোর্ট। অসমের এক মহিলাকে ট্রাইবুন্যাল বিদেশি হিসেবে চিহ্নিত করায় হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন তিনি। নাগরিকত্বের প্রমা হিসাবে জমা দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপ্রদত্ত একাধিক নথি। কিন্তু হাইকোর্ট ওই মহিলার আবেদন খারিজ করে দেয়।
যদিও আসামে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি তৈরির সময় নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে জমি ও ব্যাঙ্কের কাগজপত্রের নথি গ্রহণ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: উধাও আসাম এনআরসির তথ্য! তবে ‘সুরক্ষিতই রয়েছে’
আসাম এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে প্রায় ১৯ লক্ষ মানুষের নাম। তালিকা থেকে নাম বাদ পড়া মানুষরা নিজেকে নাগরিক তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করছেন। অসংখ্য ট্রাইবুন্যালে চলছে শুনানি। আর ট্রাইবুন্যালে প্রত্যাখ্যাত হলেও সুযোগ থাকছে হাইকোর্ট, এমনকী সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ারও।
ট্রাইব্যুনালে ‘বিদেশি' ঘোষণা করার পর জাবেদা বেগম ওরফে জাবেদা খাতুন হাইকোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করেন। তিনি হাইকোর্টে যে ১৪টি কাগজ জমা দেন, তার মধ্যে অন্যতম ছিল তাঁদের গ্রামের প্রধানের লেখা শংসাপত্র, যেখানে ওই মহিলার বাবাকে ও স্বামীকে ওই গ্রামের বাসিন্দা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু ট্রাইব্যুনালের মতোই হাইকোর্টও জানায়, 'জাবেদা তাঁর বাবা-মা'র কোনও নথি দিতে সক্ষম হননি।'
আরও পড়ুন: ভারতে এখনই এনআরসি নয়, লোকসভায় জানালেন মন্ত্রী
রায়ে হাইকোর্ট জানায়, 'প্যান কার্ড ও ব্যাঙ্কের নথি নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। জমির রাজস্ব জমার রসিদও কোনও ব্যক্তির নাগরিকত্বের প্রমাণে নয়। সুতরাং ট্রাইবুন্যালে যে ভাবে প্রমাণপত্র সম্পর্কে রায় দেওয়া হয়েছে, আমাদের মতে তা সঠিক।' জাবেদার আইনজীবী আহমেদ আলির কথায়, 'মক্কলের তরফে নাগরিকত্ব প্রমাণের যেসব নথি জমা দেওয়া হয়েছিল তাতে আদালত সন্তুষ্ট নয়। নির্দেশে বলা হয়েছে, জাবেদা তাঁর বাবা-মা'র কোনও নথি প্রমাণে সক্ষম হননি।'
হাইকোর্টের আরেক আইনজীবী সৈয়দ বুরহানুর রহমানের মতে, '১০৯৭ সালের ভোটার তালিকা তৈরির সময় জাবেদা তাঁর স্বামীর নথির জমা দিয়েছিলেন।বা-মা'র নথির উল্লেখ ছিল না। ফলে তাঁকে 'ডি' ভোটার বা সন্দেহভাজনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যে রায় হয়েছে তাতে আদালতের কিছু করার নেই। গ্রাম প্রধান তাঁর নথিগুলি অনুমোদনের পরও কেন তা গ্রাহ্য হল না তা জানতে চেয়ে ফের একবার আবেদন করতে পারেন জাবেদা। মহিলা বর্তমানে তাঁর ভাইয়ের নাগরিকত্ব সহ রাষ্ট্রপ্রদত্ত সব নথি জমা করতে পারেন। তিনি যে ওই ব্যক্তির বোন ধারা ৫০ অনুশারে তা প্রমাণের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।'
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন