করোনাভাইরাসের পরীক্ষা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করতে হবে। এ জন্য সাধারণ মানুষের থেকে কোনও রকম অর্থ নিতে পারবে না সরকারি ও বেসরকারি ল্যাবরেটরিগুলো। বুধবার অন্তর্বর্তী রায়ে এমনই জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু, সর্বোচ্চ আদালতের এই রায় ঘিরেই বিভ্রান্ত বেসরকারি ল্যাবরেটরি কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষার জন্য ন্যূনতম খরচ কে বহন করবে? আপাতত এই প্রশ্নেই বিঘ্নিত বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে করোনা পরীক্ষা। সুপ্রিম কোর্টের রায় বাস্তবায়ণে গ্রহণযোগ্য সমাধান নির্ণয়ের জন্য কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী বেসরকারি ল্যাব কর্তৃপক্ষরা।
Advertisment
ডঃ ডাঙ্গে বা ডঃ লাল প্যাথোলজির মত বৃহৎ সংস্থাগুলো দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছে, তারা শীর্ষ আদালতের রায় মেনে চলতে আগ্রহী। তবে করোনা পরীক্ষার জন্য ন্যূন্যতম নির্দিষ্ট খরচ রয়েছে। কর্মীদেরও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পিপিই সহ নানা সরঞ্জাম কিনতে হয়েছে বা হচ্ছে। এক্ষেত্রে লাভ গার্ষ নাই হতে পারে, কিন্তু, খরচ না তুললে ভবিষ্যতে সংস্থা চালাতে প্রবল অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে।
সুপ্রিম রায়ে পর মুম্বইস্থিত থাইরোকেয়ার ল্যাবোরেটরি আপাতত করোনী পরীক্ষা বন্ধ রেখেছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরে কোভিড-১৯ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ল্যাব কর্তৃপক্ষ। এই ল্যাব প্রায় ২ হাজার নমুনা সংগ্রহ করেছে।
কেন্দ্র এর আগে বেসরকারি ল্যাবে করোনা পরীক্ষার খরচ ৪,৫০০ টাকা বেঁধে দিয়েছিল।ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে ব্যাপকহারে করোনা পরীক্ষার সিন্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। রাজ্যগুলিকেও নমুনা পরীক্ষার ন্যূনতম লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। আইসিএমআর ১২ রাজ্যে ৬৫টি বেসরকারি ল্যাবকে করোনবা পরীক্ষার ছাড়পত্রও দিয়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক হল মহারাষ্ট্রে। এ রাজ্যে ১৪ বেসরকারি ল্যাব অনুমতি পেয়েছে। তারপরই রয়েছে তেলেঙ্গানায় (১০), তামিলনাড়ু (৯)।
ডাঙ্গে ল্যাবের তরফে সিইও ডঃ অর্জুন ডাঙ্গে বলেন, 'করোনা পরীক্ষা অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। যোগ্যতাসম্পন্ন চিকিৎসক, কর্মী, সংক্রমণরোধী ব্যবস্থা, বিশেষ গাড়ি সহ নানা যন্ত্রপাতির আয়োজন করতে হয়। কেন্দ্র যে মূল্য নির্ধারণ করেছে তাতে লাভ থাকে না। কোন মতে খরচটা ওঠানো যায়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পালনের ক্ষেত্রে আশা করছি যে সরকার কিছু একটা ব্যবস্থা করবে যাতে ভবিষ্যতে বেসরকারি ল্যাবগুলো ভালভাবে চলতে পারে।' সরকারের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের খোঁজে ডঃ লাল ল্যাবরেটরির ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডঃ অরবিন্দ লাল।
থাইরোকেয়ার ল্যাবোরেটরির সিইও এ ভেলুমণি বলেন, 'বিনামূল্যে পরীক্ষার জন্য সরকার আমাদের নির্দেশ দিক। আমরা এখন বিভ্রান্ত। আপাতত পরীক্ষা স্থগিত রেখেছি। কারণ অহেতুক আমরা কেন সংকটে পড়বো? আমরা অপেক্ষমান।'
তবে, কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টে রায় বাস্তবায়ণে নিয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি। অন্যান্য দেশ কী করছে এক্ষেত্রে তা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কোরিয়ায় যেমন চিন ফেরত সবাইকেই বিনামূল্য়ে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। আমেরিকায় আবার অন্যনীতিতে করোনা পরীক্ষা চলছে।