হিন্দু দেব দেবীর ছবি সম্বলিত কাগজে মুড়ে মাংস বিক্রির অভিযোগে উত্তরপ্রদেশের সম্বল জেলায় এক মুসলিম দোকানিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মতো মারাত্মক অভিযোগ। ধৃতের নাম তালিব হোসেন। ধৃতের বিরুদ্ধে পুলিশকে হামলারও অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই ঘটনার চারদিন পর, বোমা ফাটালেন ধৃত তালিবের ছেলে তাবিশ। তিনি বাবার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে অস্বীকার করে বলেন, “আমার বাবা সম্পূর্ণ নির্দোষ; তিনি ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে একটি রেস্তোরাঁ চালাচ্ছেন। কেউ কখনও আমাদের সম্পর্কে এমন অভিযোগ আনেনি। এই মামলার কোনও ভিত্তি নেই”।
তিনি বলেন, “আমাদের দোকানের তরফে কাগজে মুড়ে কেবল রুটি দেওয়া হয়। কখনওই মাংস দেওয়া হয় না। মাংস দেওয়ার জন্য আমরা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহার করি। বাবাকে ফাঁসানো হয়েছে”।
সম্বল পুলিশের তরফে তালিবকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩ এ, (বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতা প্রচার), ২৯৫ এ (ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা), ৩৫৩ (সরকারি কর্মচারীকে আক্রমণ করা) এবং ৩০৭ (হত্যার চেষ্টা) ধারায় মামলা করা হয়েছে।
এফআইআর অনুসারে, পুলিশ জানিয়েছে রাস্তায় টহল দেওয়ার সময় সূত্রের মাধ্যমে খবর পেয়ে দোকানে হানা দিয়ে দেখে তালিব হিন্দু দেবদেবীর ছবি দিয়ে পুরনো খবরের কাগজে মাংস মুড়িয়ে রেখেছেন। এফআইআরে বলা হয়েছে, মালিককে এই ব্যাপার জিজ্ঞাসা করা হলে ছুরি বের করে পুলিশের ওপরই হামলা চালায় তালিব।
পরিবারের সদস্যরা এবং রেস্তোরাঁর কর্মীরা বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করে বলেছেন,”এটা সাজানো গল্প”। রেস্তোরাঁর এক কর্মী আব্দুল রশিদ বলেন, ‘প্রায় ১৫ বছর এই হোটেলে কাজ করি কখনও এমন কোনও ঘটনা নজরে আসেনি। এটা পুলিশের সাজানো ঘটনা। তালিব ছুরি দিয়ে কাউকে আঘাত করেনি। বিলিং ডেস্কে কোনও ছুরি ছিল না’।
আরও পড়ুন: <সাংবাদিক গ্রেপ্তার ইস্যুতে বিরোধী শিবিরের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর তোপের মুখে মোদী>
তালিবের ভাগ্নে শাহনওয়াজ এবং রেস্তোরাঁর অন্যান্য কর্মীরা জানান, “এই ঘটনায় তারা রীতিমতো আতঙ্কিত”। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার বেশ কয়েকজন দোকানদার বলেন, তালিব নির্দোষ এবং সে পুলিশের ওপর কোনও হামলা করেনি।
এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে সিনিয়র পুলিশ অফিসাররা কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তালিবের আইনজীবী ইকদাদার হুসেন পাশা বলেছেন, “একজন লোককে মুসলিম হওয়ার কারণে টার্গেট করা হচ্ছে”।
তালিবের ছোট ভাই আনিস বলেন, “তাবিশ (তালিবের ছেলে) এখন (রেস্তোরাঁয়) সবকিছু সামলাচ্ছে। আমরা জানতাম না আমাদের সঙ্গে এমন কিছু হবে। রবিবার তাবিশ তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে দিল্লিতে ছিলেন তালিবের ছোট ছেলে ছিল মোরাদাবাদে। গভীর রাতে আমরা গ্রেফতারের খবর পেয়েছি।” পাশাপাশি তিনি বলেন, পুলিশকে অনেকবার অনুরোধ করা হয়েছে কিন্তু পুলিশ কোন কথাই শুনতে রাজি হয়নি”।