হিজাব পরা অপরিহার্য ধর্মীয় অনুশীলন নয়। মঙ্গলবার হিজাব মামলার রায়দানে এমনই জানাল কর্ণাটক হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তকে বহাল রেখে যাবতীয় মামলা খারিজ করে দিল হাইকোর্ট। হাইকোর্ট এদিন সাফ জানিয়েছে, হিজাব পরা ইসলামের অপরিহার্য ধর্মীয় অনুশীলন নয়।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট তার অন্তর্বর্তী নির্দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ুয়াদের গেরুয়া শাল, স্কার্ফ, হিজাব, ধর্মীয় নিশান বা ওই জাতীয় পতাকা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। যতদিন না চূড়ান্ত রায়দান হচ্ছে। এবার মঙ্গলবার রায়দানের পর মনে করা হচ্ছে, মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে। এদিন হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করতেই মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই সমস্ত পড়ুয়াদের কাছে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার আবেদন করেন। তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশ সমস্ত পড়ুয়াদের মেনে চলা উচিত। ক্লাস বা পরীক্ষা বয়কট করা উচিত নয়। আদালতের নির্দেশ না মেনে অশান্তি করলে প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ করবে।
এদিন রায়দানের আগে গোটা রাজ্যের একাধিক জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানো যায়। রাজধানী বেঙ্গালুরুতেও ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে দেওয়া হয়েছে।
বেঙ্গালুরুতে পুলিশ কমিশনার কমল পন্থ সমস্ত রকম জমায়েত, প্রতিবাদ কর্মসূচি বা উৎসব অনুষ্ঠান বাতিল করেছেন ২১ মার্চ পর্যন্ত। সোমবার সন্ধেয় হাইকোর্টের আধিকারিকদের সঙ্গে শীর্ষ পুলিশকর্তাদের বৈঠকের পরই এই নির্দেশিকা জারি হয়েছে। হিজাব কাণ্ডের মূল কেন্দ্র উদুপি এবং দক্ষিণ কন্নড়ে জেলা প্রশাসন সমস্ত স্কুল-কলেজে ছুটি ঘোষণা করেছে মঙ্গলবার।
আরও পড়ুন মদের দোকানে পাথর ছুঁড়ে ভাইরাল, কেন এমনটা করলেন কারণ জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি উমা ভারতীর
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি ঋতুরাজ অবস্থি, বিচারপতি কৃষ্ণ এ দীক্ষিত এবং জাইবুন্নিসা মহিদিন খাজির বেঞ্চ রায়দান স্থগিত রাখেন। উদুপি জেলায় কলেজ পড়ুয়া মুসলিম ছাত্রীদের পিটিশনের ভিত্তিতে এই মামলা চলছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি মামলার শুনানির শুরুতে আবেদনকারীরা জাবি করেন, ক্লাসরুমে হিজাব পরার অধিকার ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং বাক-স্বাধীনতার অঙ্গ। গত ৫ ফেব্রুয়ারি কর্ণাটক সরকারের শিক্ষা দফতরের নির্দেশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধের নির্দেশিকাকে তাঁরা চ্যালেঞ্জ করেন।
রাজ্যে দশম শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ২৮ মার্চ থেকে। একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষাও রয়েছে এপ্রিলে। গন্ডগোল হলে এই পরীক্ষাগুলি পিছিয়ে যেতে পারে।