অযোধ্যা মামলার রায়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করবে না সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ড। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন বোর্ড চেয়ারম্যান জাফর আহমেদ ফারুকি। সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড রামজন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার অন্যতম মামলাকারী ছিল। তবে, সুপ্রিম কোর্টের রায় পরবর্তী পদক্ষেপ ঘিরে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের নেতাদের মতভেদ স্পষ্ট হয়েছে।
আরও পড়ুন: অযোধ্যার বিতর্কিত জমির সবটাই কেন হিন্দুদের হাতে তুলে দিল সুপ্রিম কোর্ট?
সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডর চেয়ারম্যান আহমেদ ফারুকি বলেন, 'অযোধ্যা মামলার সম্পূর্ণ রায় সামনে আসেনি। তবে রায় শুনেছি। তবে, এখনও পর্যন্ত রায়ের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানানোর কোনও পরিকল্পনা নেই সুন্নি সেন্ট্রাল ওয়াকফ বোর্ডের।' পরে বোর্ডের তরফে বিস্তারিতভাবে সবটা জানানো হবে বলে জানিয়েছেন ফারুকি।
আরও পড়ুন: অযোধ্যা রায়: ক্ষুব্ধ পাকিস্তান
অযোধ্যার বিতর্কিত জমিতেই হবে রাম মন্দির। অন্য দিকে মসজিদ নির্মাণের জন্য অযোধ্যাতেই ৫ একর বিকল্প জমি দেওয়া হবে মুসলিম পক্ষকে। শনিবার অযোধ্যা মামলার চূড়ান্ত রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে, এই রায়ের পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হবে বলে জানিয়েছেন সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের আইনজীবী জাফারিয়াব জিলানি। সুপ্রিম কোর্টে এই রায়দানের পর সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের আইনজীবী জানান, 'এই রায়কে সম্মান জানাচ্ছি। কিন্তু সন্তুষ্ট নই।' তখনই তিনি জানিয়েছিলেন বোর্ড সুপ্রিম কোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জানাতে পারবে।
আরও পড়ুন: ‘রাম ভক্তিই হোক কিংবা রহিম ভক্তিই, এটা ভারত ভক্তির সময়’
তবে, আইনজীবী জাফারিয়াব জিলানির দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন আহমেদ ফারুকি। তাঁর কথায়, 'যে কেউ মন্তব্য করতে পারে, কিন্তু তা সঠিক নয়।' পরে অবশ্য জিলানি বলেন, 'সাংবাদিক বৈঠক আয়োজন করেছিল অল ইন্ডিয়া পার্সোনাল ল'বোর্ড। তার সম্পাদক হিসাবে আমি ওই কথা বলেছি, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের আইনজীবী হিসাবে নয়।'
ইন্ডিয়ার মুসলিম লিগের তরফে জানানো হয়েছে সংগঠনটটি অযোধ্যা রায়কে সম্মান জানাচ্ছে। আবার অল ইন্ডিয়া পার্সোনাল ল'বোর্ড শনিবারই রায় ঘিরে তাদের অসন্তোষের কথা জানিয়েছে। এই রায়ে 'ন্যায়-বিচার' মেলেননি বললে মনে করে ওই সংগঠন। এআিএমআইএম প্রধান সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসিও অযোধ্যা নিয়ে আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট নন। মসজিদের ৫ এককর জমি প্রত্যাখ্যান করা উচিত বলে মনে করেনন তিনি। রায়ের কিছু অংশকে দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করে শান্তির আবেদন জানিয়েছেন র অল ইন্ডিয়া পার্সোনাল ল'বোর্ডের সচিব জিলানি। বলেছেন, “এতে কারও জয় বা পরাজয় হয়নি। আমরা সম্ভাব্য আইনি পথে যাব। আমরা সকলের কাছে শান্তি বজায় রাখার আবেদন করছি।” তাঁর যুক্তি, ‘‘কোর্ট এক দিকে মেনে নিয়েছে, রামলালার মূর্তি বসানো হয়েছে ১৯৪৯ সালে। তার আগে ওখানে নমাজ পড়া হত এবং মসজিদ ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও সিদ্ধান্ত অন্যদের বিশ্বাসের পক্ষে এবং বাস্তব ইতিহাসের বিরুদ্ধে গিয়েছে।”
দিল্লির জামা মসজিদের শাহী ইমাম বলেন, 'কোর্টর রায় সবাইকেই মানতে হবে। এননিয়ে বিতর্ক অপ্রয়োজনীয়।' মুসলিম মজলিস-এ-মুশওয়ারাতের সভাপতি নাভিদ হামিদ বলেন, 'মুসলমানদের থেকে ৬৭ একর নিয়ে ৫ একর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এটা স্বান্তনা, যা আমাদের নেওয়া উচিত নয়।' জমিয়তে উলামা-ই-হিন্দ সভাপতি আরশাদ মাদানী জানিয়েছেন 'হতাশার কোনও জায়গা নেই।'
আরও পড়ুন: এক নজরে অযোধ্যা মামলার ইতিবৃত্ত
অযোধ্যা মামলায় ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিতর্কিত জমি দেওয়া হল হিন্দুদের। আর মসজিদ নির্মাণের জন্য অযোধ্যাতেই পাঁচ একর বিকল্প জমি দেওয়ার নির্দেশও দিল দেশের শীর্ষ আদালত। মন্দির নির্মাণের জন্য আগামী তিন মাসের ভেতর প্রকল্প তৈরি করে মন্দির নির্মাণ ট্রাস্ট গঠন করতে হবে বলেও জানিয়েছেন সাংবিধানিক বেঞ্চের পাঁচ বিচারপতি। কেন্দ্রকে এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
Read the full story in English