রাজ্যের পুলিশের ওপর ভরসা না রেখে বিজেপির একাধিক নেতা কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা কর্মীদের বেষ্টনীতে থাকেন। এবার রাজ্যপালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে সংঘাত তৈরি হলো। জানা যাচ্ছে, এবার থেকে কলকাতা পুলিশ নয়, রাজ্যপালের নিরাপত্তায় থাকতে চলেছে সিআরপিএফ। এমন প্রস্তাবই দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
উল্লেখ্য, গত মাসে বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি আয়োজিত নবীন বরণ অনুষ্ঠান এবং একটি সেমিনারে যোগ দিতে গিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চরম হেনস্থা’র শিকার হন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। বাবুলকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন যাদবপুরের পড়ুয়াদের একাংশ। পাশাপাশি তাঁর উদ্দেশে ‘গো ব্যাক’ স্লোগানও দেওয়া হয়। এই ঘটনা ঘিরে মুহূর্তেই পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। বাবুলের সঙ্গে পড়ুয়াদের একাংশের রীতিমতো ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। বাবুল সুপ্রিয়কে থাপ্পড়, ঘুষি মারার অভিযোগ ওঠে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর জামাও ছিঁড়ে দেওয়া হয় এবং চুলের মুঠি ধরে টানা হয় বলে অভিযোগ। পাশাপাশি তাঁর চশমা খুলে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন, সারদাকাণ্ডে জেলে গিয়ে সুদীপ্ত সেনকে জেরা সিবিআই-এর
সেদিন প্রায় ৬ ঘণ্টা ধরে পড়ুয়াদের ঘেরাওয়ে ক্যাম্পাসে আটকে পড়েন বাবুল। শেষমেশ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। বাবুলকে উদ্ধার করতে গিয়ে যাদবপুরে বিক্ষোভে কিছুক্ষণ আটকে পড়ে রাজ্যপালের গাড়িও। সূত্রের খবর, সেদিনের ঘটনা রাজভবন থেকে রাজ্য প্রশাসনকে জানানো হয়। পুরো বিষয়টির দিকে নজর রাখে কেন্দ্রীয় সরকার। বুধবার সিআরপিএফের কয়েকজন আধিকারিক যান রাজভবনে। সূত্রের খবর, জেড ক্যাটাগরি প্রাপ্ত রাজ্যপালের নিরাপত্তায় এখন থেকে দায়িত্বে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
অন্যদিকে, সম্প্রতি জিয়াগঞ্জে শিক্ষক পরিবারকে খুনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সরব হন রাজ্যপাল। যা একেবারেই ভাল চোখে দেখেনি রাজ্যের শাসক শিবির। এরপর রেড রোডে দুর্গাপুজোর কার্নিভালে তাঁকে অপমান করা হয়েছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন রাজ্যপাল। যা নিয়ে উত্তাল হয় বঙ্গ রাজনীতি।
আরও পড়ুন, বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে গুলি, প্রাণ হারালেন বিএসএফ জওয়ান, আহত এক
এমন নানা ঘটনায় রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যপালের মতবিরোধ যখন চলছে, ঠিক সেই সময় তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কলকাতা পুলিশকে সরিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে রাজভবনের সংঘাত নয়া মাত্রা পেল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।