ইতিহাসকে ছোঁয়া যায়নি। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পৃথিবীর সঙ্গে বিক্রমের যোগাযোগ। সাফল্যের উচ্ছাস নিমেশে ম্লান। যদিও গোটা দেশ আজ ইসরোর পাশে। এই ব্যর্থতার মধ্যেই রয়েছে আগামীর সাফল্যের সন্ধান, মনে করছে আসমুদ্র হিমাচল। উদাহরণ হিসাবে উঠে আসছে ১৯৭৯ সালে ভারতের প্রথম উপগ্রহ প্রেরণের ব্যর্থতা। তার এক বছরের মধ্যেই অবশ্য ধরা দিয়েছিল সাফল্য। যে কথা গল্পের আকারে ২০১৩ সালে এক অনুষ্ঠানে শুনিয়েছিলেন দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালাম। সাফল্যের পাশাপাশি আসবে ব্যর্থতা। তাকে কিভাবে মোকাবিলা করে এগিয়ে যে তে হবে সে পাঠই সেদিন দিয়েছিলেন দেশের বীর সন্তান কালাম। যা আজ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: ‘ভেঙে পড়ার কিছু নেই, বিশ্বাস রেখে এগিয়ে যান’, বিজ্ঞানীদের ফের আশ্বাস মোদীর
বিজ্ঞানী এপিজে আব্দুল কালাম ছিলেন ভারতের প্রথম স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিক্যাল (এসএলভি-তৃতীয়) প্রকল্পের পরিচালক। সেই সময় ইসরো-র চেয়ারম্যান ছিলেন অধ্যাপক সতীশ ধাওয়ান। উপগ্রহটি চাঁদের কক্ষপথে পাঠানোই ছিল লক্ষ্য। শ্রীহরিকোটায় প্রস্তুতি সম্পন্ন ছিল। কাউন্টডাউও শুরু হয়েছিল। শেষ মুহূর্তে কম্পিউটার নেতিবাচক ইঙ্গিত দেয়। কালাম অবশ্য সেদিন যন্ত্রের 'না' শোনেননি। উপস্থিত অন্যসব বিজ্ঞানীদের পরামর্শেই নিজের কাজের উপর বিশ্বাস রেখে উপগ্রহটি মহাকাশে প্রেরণের চেষ্টা করেন তিনি।
src="https://www.youtube.com/embed/Tx_ulXcRa2c" width="100%" height="415" frameborder="0" allowfullscreen="allowfullscreen">
এতে অবস্য সেদিন সাফল্য মেলেনি। উপগ্রহটি স্পেনের দিকে চলে যাচ্ছিল। কোনও মতে সেটিকে বঙ্গোপসাগরে নামানো হয়েছিল। সেদিনের ব্যর্থতার দায় কীভাবে সামলেছিলেন। কালামের কথায়, 'জীবন উপলব্ধি থেকে জেনেছিলাম ব্যর্থতা মোকাবিলার পন্থা। যা আমার জীবনের অন্যতম পাঠ।'
আরও পড়ুন: তীরে এসে তরী ডুবল? হারিয়ে গেল বিক্রম
ওই সময়, ইসরো-র চেয়ারম্যান সতীশ ধাওয়ান সাংবাদিক সম্মেলনে ব্যর্থতার দায় নিয়েছিলেন। তবে, ভরসা রেখেছিলেন তাঁর অনুজপ্রতীম বিজ্ঞানীদের উপর। বলেছিলেন, 'আমরা পরের বছর সাফল্য পাবই, কারণ দলের প্রত্যেকে ভাল কাজ করছে।'
বছর ঘুরতেই সতীশ ধাওয়ানের কথা বাস্তবে পরিণত হয়। ১৯৮০ সালের ১৮ই জুলাই রোহনি আরএস-১ চাঁদের কক্ষপথে সফলভাবে পৌঁছায়। সাফল্যের পরে সেদিন ধাওয়ানের নির্দেশে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন কালাম। তাঁর কথায়, 'ওই দিন আমি খুব গুরুত্বপূর্ণ পাঠ পেয়েছিলাম। ব্যর্থতা এলে তার দায় সংস্থার প্রধানের। কিন্তু, সাফল্য পেলে তা দলের সকলের। এটা কোনও পুঁথি পরে আমাকে শিখতে হয়নি। এটা অভিজ্ঞাতা থেকে অর্জিত।'