বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ চরমে তুলেছে কোভিডের নয়া ভ্যারিয়েন্ট। তিন দেশের সীমা ছাড়িয়ে এবার আরও দুই দেশে করোনার এই নয়া প্রজাতির ভাইরাসে আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। ইজরায়েল ও বেলজিয়ামেও কোভিডের এই নয়া ভ্যারিয়েন্টের হদিশ। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকা, হংকং, বৎসোয়ানায় করোনার নয়া এই স্ট্রেনের হদিশ মিলেছিল। করোনার নয়া এই ধরনকে ‘উদ্বেগজনক’ তালিকায় রেখেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা WHO। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনার নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের নাম রেখেছে ‘Omicron’।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীরাই জানান, সেদেশে করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্টের হদিশ মিলেছে, যা অত্যন্ত শক্তিশালী। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম এই প্রজাতির ভাইরাসে ৬ জন আক্রান্ত হন। তার পর-পরই করোনার এই নয়া স্ট্রেনে আক্রান্তের হদিশ মেলে হংকং, বৎসোয়ানায়। পরে ইজরায়েল এবং বেলজিয়ামেও করোনার নতুন প্রজাতির ভাইরাস ‘Omicron’-এ আক্রান্তের হদিশ মেলে।
করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকেও অত্যন্ত সংক্রামক বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল। করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের হানাতেই বিশ্বের একের পর এক দেশে সংক্রমণের বিদ্যুৎ গতি তৈরি হয়েছিল। কাতারে-কাতারে মানুষ করোনার ডেল্টা ভাইরাসের হানায় কাবু হয়েছিলেন। ভারতেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে তছনছ-দশায় দায়ী ছিল ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। এক কথায় ডেল্টা হানায় মৃত্যু-মিছিল দেখেছে গোটা বিশ্ব। এবার করোনার ‘Omicron’ ভ্যারিয়েন্টটিকেও একইভাবে 'উদ্বেগজনক' তালিকায় রেখে গোটা বিশ্বকে সাবধানবাণী দিল WHO।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত প্রায় একশোটি জিনোম সিকোয়েন্সের রিপোর্ট মিলেছে। সংক্রমিত ব্যক্তিদের অনেকেই টিকার সব ডোজ পেয়েছিলেন। করোনার নতুন এই প্রজাতির ভাইরাস নিয়ে একটি বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য জানিয়েছে, “এই ভাইরাসটি বেশ কয়েকবার মিউটেট করেছে। সেটা উদ্বেগজনক। প্রাথমিকভাবে যে তথ্য এসেছে তাতে দেখা যাচ্ছে, এই ভাইরাস পুনরায় সংক্রমিত হয়ে পড়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকি বেশ খানিকটা বাড়িয়ে দেয়।”
WHO-এর এই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “দক্ষিণ আফ্রিকার প্রায় সব প্রদেশেই করোনার এই নয়া প্রজাতির ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। করোনার এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তকে আগের সংক্রমিতদের তুলনায় দ্রুত শনাক্ত করা যাচ্ছে।”
আরও পড়ুন- উদ্বেগ বাড়াচ্ছে করোনার দক্ষিণ আফ্রিকান স্ট্রেন! ইজরায়েলে মিলেছে প্রথম রোগীর সন্ধান
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, করোনার এই নয়া রূপ ডেল্টার চেয়েও বেশি প্রাণঘাতী কিনা তা এখনই বলা কঠিন। এক্ষেত্রে কঠোর নজরদারির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
অন্যদিকে, ভাইরোলজিস্ট শাহিদ জামিলের কথায়, “করোনার এই নয়া স্ট্রেন সম্পর্কে এখনও সব কিছু জানা যায়নি। ডেটা এখনও আসছে। তবে এখনও পর্যন্ত আমরা জানি যে এটিতে ৩০টিরও বেশি মিউটেশন রয়েছে। যার মধ্যে ১০টি স্পাইক প্রোটিনে রয়েছে। এই ভ্যারিয়েন্টটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে কিনা বা সহজেই একজনের থেকে অপরজনকে আক্রান্ত করে কিনা তা জানতে হলে এটির উপর প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ জরুরি। তবে আমাদের খুব সতর্ক হওয়া দরকার।”
Read full story in English
ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেসবাংলাএখনটেলিগ্রামে, পড়তেথাকুন