জলের তলায় হুগলি, হাওড়া, পূর্ব বর্ধমান, বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ অংশ। দক্ষিণবঙ্গজুড়ে বন্যা পরিস্থিতি। এ জন্য পাল্টা পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে দায়ী করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কয়েক মাস আগে আরামবাগ, পুরশুড়া, হাওড়া এলাকায় জল জমে ছিল। ফলে বাঁধ ভেঙে গিয়েছিল। সেই ভাঙা বাঁধের মেরামতি কেন হল না তা নিয়ে প্রস্ন তুলেছেন শুভেন্দু। জানতে চেয়েছেন যে, সেচ ও বাঁধ সংস্কারের জন্য বাজেটে বরাদ্দ অর্থের কত অংশ কাজের জন্য অর্থ দফতর মঞ্জুর করেছে?
বৃষ্টি বাড়তেই জল ছাড়ার পরিমাণও বাড়িয়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজ। প্লাবিত হুগলির আরামবাগ, খানাকুল, পুরশুড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল প্লাবিত। হাজার-হাজার পরিবার জলবন্দি। খানাকুল-আরামবাগে মোট ৬টি বাঁধ পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনা নামানো হয়েছে। কাজ করছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল। দুর্গতদের উদ্ধার করে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- রাজ্যে প্লাবন, ফের ‘ম্যান মেড বন্যা’র তত্ত্ব আউরে DVC-কে দুষলেন মমতা
রাজ্যে বন্যার জন্য এদিন ডিভিসিকে দুষে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'ঝাড়খণ্ডে প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। ফলে ওরা আমাদের না বলে রাত ৩টের সময় আসানসোলে জল ছেড়েছে। সমস্যা হল যে, ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলেই আমাদের সমস্যা ফেস করতে হচ্ছে, বিহারে বৃষ্টি হলে আমাদের ফেস করতে হয়। ওরা যদি ওদের ড্যামগুলো একটু পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রাখে, তা হলে অনেক জল জলাধারে ধরতে পারে। মাইথন, পাঞ্চেতে তো অনেক জল ধরার ক্ষমতা। কিন্তু ওরা প্রায় ৫০ বছর ধরে কোনও পরিষ্কার করে না। ড্রেজিং হয় না। ফলে খেসারত দিতে হচ্ছে আমাদের। এটা অন্যায়। যদি বৃষ্টির জলে আমাদের বন্যা হতো আমি বুঝতাম। বৃষ্টি বেশি হচ্ছে, আমি সামলাতাম। কিন্তু বন্যাটা হচ্ছে জল ছাড়ার জন্য। অর্থাৎ ম্যান মেড ফ্লাড।'
আরও পড়ুন- বাড়ির একতলা জলের তলায়, ডুবে মৃত্যু শিশুর
মমতার দাবি খারিজ করেছেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'এর আগে বন্যা পরিস্থিতি হল। কেন সেই ভাঙা বাঁধের মেরামতি হল না? আসলে গোটাই ভাতার সরকারের পরিণত হয়েছে। মানুষকে মিথ্যা বলাই তৃণমূল সরাকারের এজেন্ডা।'
পাশাপাশি শুভেন্দু বলেন, '২০১৯-২০, ২০-২১, ২১-২২ অর্থবর্ষে সেচ দফতরের জন্য বাজেটে কত বরাদ্দ ছিল? এবং বাঁধ মেরামতিতে কত মঞ্জুর করেছে অর্থ দফতর তা জানানো হোক। সেচ দফতরের মন্ত্রী থাকায় জানি বরাদ্দের মাত্রা ২০ শতাংশ অর্থের ছাড় দেওয়া হয়েছিল কাজের জন্য। ফলে মেরামতি তো দূর, রক্ষাণাবেক্ষণই হয়নি।'
বিরোধী দলনেতার দাবি, জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত ডিভিসি একা নিতে পারে না। কমিটিতে সেচ দফতরের সচিব ও ইঞ্জিনিয়ারও থাকেন। তাঁদের সঙ্গে পরামর্শ করেই বাঁধের জল ছাড়া হয়। এ দিন ডিভিসির তরফেও ঘোষণা করা হয়েছে যে, রাজ্যকে জানিয়েই গতরাতে জল ছাড়া হয়েছিল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন