Advertisment

অক্সিজেন আকাল! ১টি সিলিন্ডারে শ্বাস নিচ্ছেন ৩ রোগী, মেঝেতে লুটিয়ে দেহ

দিল্লির হাসপাতালের গেটের বাইরে ভেজা চোখের পরিজনদের ভিড়। করজোড়ে কেউ তাকিয়ে আকাশে, বিড়বিড় করে আওড়াচ্ছেন, 'প্লিজ ঠাকুর বাবা যেন সুস্থ হয়ে ওঠে"।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

কিছুক্ষণ আগে পর্যন্ত তাঁরা একে অপরের অচেনাই ছিলেন। কেউ কাউকে চেনা তো দূরঅস্ত, অস্তিত্বও জানতেন না। অথচ অদৃষ্টের এমনই পরিহাস যে এই মুহুর্তে অক্সিজেন চাহিদার জন্য, জীবন বাঁচানোর জন্য একাত্ম হয়ে এই ব্যক্তিরাই। পার্বতী দেবী, ওম দত্ত শর্মা এবং দীপকরা এখন একটি নলেই অক্সিজেন নিয়ে বাঁচছেন।

Advertisment

তবে অক্সিজেন সিলিন্ডার তিনটি নয়। একটি সিলিন্ডার থেকে জীবনদায়ী গ্যাস নিচ্ছেন তিনজন। হাসপাতালে বেড নেই। কিন্তু প্রাণ তো বাঁচাতে হবে। তাই হাসপাতালের মেঝেতে শুয়েই শেষ লড়াই চলছে এই তিন কোভিড রোগীর। দিল্লির জিটিবি হাসপাতালের ছবিটা এটাই। রাজধানী কোভিড যেমন বাড়ছে, তেমন বাড়ছে অক্সিজেনের চাহিদা।

আরও পড়ুন, ‘ঘরে নেই অক্সিজেন, হাসপাতালে নেই বেড’, চোখের সামনেই মৃত্যু দেখছে দেশ

কিন্তু কেন এই রোগীরা এমনভাবে পড়ে রয়েছেন হাসপাতালে। ওম দত্ত শর্মার পরিবারের তরফে বলা হয়, "হাসপাতালে একটিও স্ট্রেচার ছিল না যেখানে শোওয়ানো যেতে পারে। মেঝে জায়গা ছিল। তাই সেখানেই রাখা হয়েছে। এরপর হয়ত জায়গা না ও পেতে পারি।" শুক্রবারই একই অবস্থায় চোখের সামনে ৪০ বছর বয়সি ছেলের মৃত্যু দেখেছেন ওম দত্ত। পরিবার চায় না আর প্রিয়জন হারাতে। অতএব…

তবে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা বেড থেকে মেঝে সব রোগীদের প্রতি ঘণ্টায় ঘণ্টায় অক্সিমিটার পর্যবেক্ষণ করে চলেছেন। ওম দত্তের ১৮ বছরের নাতি কাঁদতে কাঁদতে বসে রয়েছেন দাদুর পাশে। বাবাকে হারানো রাতের কথা স্মরণ করেই বলেন, "এই হাসপাতালে কোনও বিছানা ছিল না। সিকিউরিটিরা আমাকে চলে যেতে বলেছিল। কিন্তু শ্বাসকষ্টের জন্য বাবার মুখ দিয়ে রক্ত বেরতে শুরু করে। কোনওরকমে এখানে একটা অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা করতে পেরেছিলাম। কিন্তু আধ ঘন্টার মধ্যে সব শেষ!"

আরও পড়ুন, মর্মান্তিক! অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন ২৫ রোগী

শুধু দিল্লিতে নয়, দেশের একাধিক প্রান্তে জ্বলছে গণচিতা। কবরে জমছে মৃতের স্তুপ, শ্মশানে লম্বা লাইন। দৈনিক মৃত্যুতে ভারতে প্রতিদিন তৈরি হচ্ছে একের পর এক রেকর্ড। অক্সিজেনের অভাবে এভাবে মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না কেউ। মৃত্যুঞ্জয় হওয়া এবার আরও অনেক কঠিন! দিল্লির হাসপাতালের গেটের বাইরে ভেজা চোখের পরিজনদের ভিড়। করজোড়ে কেউ তাকিয়ে আকাশে, বিড়বিড় করে আওড়াচ্ছেন, 'প্লিজ ঠাকুর বাবা যেন সুস্থ হয়ে ওঠে"।

Read the full story in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus corona virus corona COVID-19 Corona India
Advertisment