করোনার ভয়ে ছেলেকে নিয়ে তিন বছর নিজেকে ঘরে বন্দি করে রেখেছিলেন এক মহিলা। সামনে এল হাড়হিম কাণ্ড। করোনা সংক্রমণের আতঙ্ক মানুষের মধ্যে কতটা প্রভাব ফেলেছে তার জলজ্যান্ত প্রমাণ সামনে এসেছে। দিল্লির কাছেই গুরুগ্রামে এক মহিলা তার বছর দশেকের সন্তানকে নিয়ে টানা তিন বছর নিজেকে ঘর বন্দী করে রাখেন। গুরুগ্রামের মারুতি বিহার কলোনির বাসিন্দা ওই মহিলার নাম মুনমুন মাঝি সংক্রমণের ভয়ে নিজেকে এবং তার ১০ বছরের শিশুকে ঘরে বন্দী করে রেখেছিলেন তিনি।
স্বামী কর্মসূত্র দূরে থাকায় তাকেও ঘরে ঢুকতে দেননি ওই মহিলা। বাধ্য হয়ে স্বামী তিন বছর ধরে ভাড়া বাড়িতে থাকছিলেন। তিনি ভিডিও কলের মাধ্যমে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। মঙ্গলবার পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবি সংস্থার লোকজন দরজা ভেঙে মহিলা ও শিশুকে উদ্ধার করে। পরে দুজনকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে মহিলা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে অস্বীকার করেন। বেসরকারি হাসপাতালে ছেলে ও নিজের চিকিৎসা করাতে চান তিনি।
মহিলার স্বামী পুলিশকে জানিয়েছে, কয়েক মাস তিনি আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের কাছে থাকেন। তিনি ভেবেছিলেন সংক্রমণ কমলে স্ত্রীর মনের ভয় দূর হবে। কিন্তু স্ত্রীর মানসিক সমস্যা বাড়তে থাকে। স্ত্রী রাজি না হলে দেড় বছর আগে বাড়ির পাশেই একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন তিনি। ভিডিও কলের মাধ্যমে স্ত্রী ও ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন তিনি।
আরও পড়ুন: < ‘মানবতা এখনও বেঁচে আছে’…! ছেলের চিকিৎসার জন্য ১১ কোটির ‘বেনামী অনুদান’, আপ্লূত দম্পতি >
করোনার ভয়ে ওই মহিলা তার ছেলেকে স্কুলে না পাঠিয়ে অনলাইনে পড়াশুনা করাতেন। সময়মতো স্কুলের ফি ও বাড়ি ভাড়া সবই দিয়েও দেন ওই মহিকা। রান্নাঘরের জিনিসপত্র অনলাইনে অর্ডার করে সেগুলিকে দরজার বাইরে থেকে স্যানিটাইজ করেই ঘরে ঢোকাতেন। করোনার ভয়ে গ্যাস সিলিন্ডারের অর্ডার দেওয়া বন্ধ করে হিটারে রান্না শুরু করেন মুনমুন।
মঙ্গলবার মহিলা ও তার সন্তানকে উদ্ধার করতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয় পুলিশকে। জোর করে উদ্ধার করতে গেলে মহিলা আত্মহত্যারও হুমকি দেন। পরে দরজা ভেঙ্গে মহিলা ও তার ছেলেকে উদ্ধার করা হয়। চিফ মেডিকেল অফিসার ডাঃ রেনু সারোহা জানান, মঙ্গলবার পুলিশ ওই মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। তাকে রোহতক পিজিআইতে রেফার করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ওই মহিলা সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।