দিল্লি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিজেপি নেতাদের 'বিদ্বেষমূলক' মন্তব্যে 'ভীতির' সঞ্চার হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী মোদীকে খোলা চিঠি লিখে সেই আতঙ্কের কথাই জানালেন ১৭৫ জন মহিলা। এদের মধ্যে যেমন রয়েছেন বহু বিশিষ্ট নারী অধিকার আন্দোলনকারী, তেমনই আছেন সিএএ বিরোধী মহিলা প্রতিবাদীও।
অনুরাগ ঠাকুর থেকে পরভেশ ভর্মা, কখনও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নিশানায় পড়তে হয়েছে সিএএ বিরোধী অন্দোলনকারীদের। গত সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে বলেছিলেন,'দেশ কে গদ্দারোঁ কো', পাল্টা বিজেপি কর্মীরা বলতে থাকেন 'গোলি মারো শালো কো'। এখানেই শেষ নয়। শাহিনবাগের বিক্ষোভকারীদের সম্পর্কে বেনজির আক্রমণ করেন বিজেপি সাংসদ পরভেশ ভর্মা। তিনি বলেছিলেন, 'শাহিনবাগের বিক্ষোভকারীরা ঘরে ঢুকে মেয়ে-বোনেদের ধর্ষণ করতে পারে।' আর যোগী আদিত্যনাথ তো সিএএ বিরোধী মহিলা আন্দোলনকারীদের নিন্দায় আগেই সরব হন। আন্দোলনকারীরা হিংসা ছড়ালে তাদের সম্পত্তি কেড়ে নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন।
আরও পড়ুন: ‘ঘরে ঢুকে মেয়ে-বোনদের ধর্ষণ করতে পারে শাহিনবাগের বিক্ষোভকারীরা’
আর এতেই চরম আতঙ্কগ্রস্ত মহিলারা। নেতাদের উস্কানিতে বড় বিপদ ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। চিঠিতে মহিলাদের তরফে বলা হয়েছে, উস্কানিমূলক মন্তব্যের জেরে সিএএ বিরোধী মহিলা আন্দোলনকারীদের উপর হামলা হতে পারে। 'হিংসার বাতাবরণ' গড়ে তোলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, তিন দিনের ব্যবধানে রবিবার মধ্যরাতে জামিয়ার পাঁচ নম্বর গেটের বাইরে স্কুটিতে চড়ে এসে গুলি ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। এর খুব কাছেই জামিয়া সমন্বয় কমিটির অন্তর্গত সিএএ বিরোধী আন্দোনকারীদের অবস্থান চলছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, দুষ্কৃতীদের এক জন লাল জ্যাকেট পড়ে এসেছিল। ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে গুলির খোল মেলেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার আগে শাহিনবাগ অবস্থানের বাইরেও গুলি চলেছে।
আরও পড়ুন: জামিয়া গুলিকাণ্ডে ‘সরাসরি যুক্ত’ মন্ত্রী অনুরাগ, থানায় অভিযোগ দায়ের
এই ঘটনার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন মহিলা আন্দোলনকারীরা। যা অত্যন্ত গুরুত্ববাহী বলেই মনে করা হচ্ছে। এই চিঠিতে সাক্ষর করেছেন, অর্থনীতিবিদ দেবীকা জৈন, আন্দোলকারী লায়লা ত্যাবজি, প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত মধু ভাণ্ডারী, লিঙ্গ অধিকার কর্মী কমলা ভাসিন। এছাড়াও সাক্ষর রয়েছে অল ইন্ডিয়া প্রোগ্রেসিভ ওমেনস অ্যাসোসিয়েশন, ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ওমেনস-এর সদস্যাদের।
বিদ্বেষমূলক বক্তবের কারণে কমিশনের নির্দেশে আগেই দিল্লি ভোটের প্রচারে ৭২ ঘন্টার জন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের উপর।। বেজেপি সাংসদ ভার্মাকেও ৯৬ ঘন্টা প্রচারে মানা করা হয়। রাজধানীতে ভোটের প্রচারের ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও গ্রেফতারের দাবি জানায় আম আদমী পার্টি।
Read the full story in English