একদন দিল্লির বাসিন্দা, একজন বাংলার এবং আরেক জন পঞ্জাবের। এঁদের মধ্যে দুজন পড়েছেন দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজে। তৃতীয় জন পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। এই তিনজনই এখন ভারতের গর্ব। এই তিন মহিলা সাত বছর পর UPSC পরীক্ষায় দেশের মধ্যে প্রথম থেকে তৃতীয় স্থানাধিকারী।
দিল্লির শ্রুতি শর্মা দেশের মধ্যে সেরার সেরা হয়েছেন। সোমবার ফল ঘোষণার পর দেখা যায়, এবার UPSC পরীক্ষায় মহিলাদের জয়জয়কার। দ্বিতীয় স্থানাধিকারী অঙ্কিতা আগরওয়াল কলকাতার বাসিন্দা। তৃতীয় গামিনী সিংলা পঞ্জাবের আনন্দপুর সাহিবের বাসিন্দা। ২০১৪ সালে প্রথম চারে ছিলেন মহিলারা। ইরা সিঙ্ঘল, রেণু রাজ, নিধি গুপ্তা এবং বন্দনা রাও দেশের গর্ব হয়েছিলেন।
এবছরের টপার শ্রুতি শর্মা সর্দার প্যাটেল বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। দিল্লির সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতক শ্রুতি স্নাতকোত্তরে পড়াশোনার জন্য জেএনইউ-তে ভর্তি হন। কিন্তু সিভিল সার্ভিসের পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার রেসিডেনশিয়াল কোচিং অ্যাকাডেমিতে ভর্তি হন।
বছর ২৫-এর তরুণী শ্রুতির বক্তব্য, "মেইন পরীক্ষার জন্য উত্তরপত্র লেখার প্রস্তুতি এবং নিজের নোটের উপরই ভরসা করেছিলাম। পরীক্ষায় আমার পারফরম্যান্স নিয়ে খুশিই ছিলাম। ভাল ফলের আশায় ছিলাম। কিন্তু শীর্ষ হব এটা আশাতীত ছিল। আমার বাবা ২০১৯ সালে আমাকে পরীক্ষায় বসতে বলেন। তখন আমি জেএনইউ-তে মাস্টার্স করছিলাম। সেই সময় আমার ইউপিএসসি-র প্রস্তুতি শুরু হয়। জামিয়ায় আমার অনেক বন্ধু আমাকে সাহায্য করেছে। এটা এমন একটা জায়গা যেখানে পড়ে আমার পরিশ্রম সার্থক হয়েছে।"
আরও পড়ুন প্রকাশিত UPSC-র ফলাফল, দেশে সেরার সেরা শ্রুতি শর্মা, প্রথম তিন জনই মহিলা
দ্বিতীয় স্থানাধিকারী অঙ্কিতা সেন্ট স্টিফেন্স থেকে পড়াশোনা করলেও আদতে তিনি কলকাতার মেয়ে। বর্তমানে তিনি ফরিদাবাদের ইন্ডিয়ান রেভেনিউ সার্ভিসে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তৃতীয়বারের চেষ্টায় তিনি আইএএস হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছেন। নিজের সাফল্য নিয়ে অঙ্কিতা বলেছেন, "কলকাতা জন্ম এবং বড় হওয়ার কারণে আমি বরাবরই পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারে যোগ দিতে চেয়েছিলাম। নারীশক্তির বিকাশ এবং দুস্থ শিশুদের জন্য কাজ করতে চাই। একজন আমলা হিসাবে সমাজে বদলের জন্য সবকিছু করার সুযোগ পেয়েছি, এটা হাতছাড়া করতে চাই না।"
২৬ বছরের অঙ্কিতা অর্থনীতিতে স্নাতক। ব্যবসায়িক সূত্রে কলকাতায় থাকে তাঁর পরিবার।
এদিকে, তৃতীয় স্থানাধিকারী গামিনী পঞ্জাব ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে বিটেক করেছেন। তিনি এই সাফল্যের জন্য উচ্ছ্বসিত হয়ে বলেছেন, "বিটেক করার পর বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে চাকরির প্রস্তাব পাচ্ছিলাম। কিন্তু সেদিকে না গিয়ে ইউপিএসসি-র জন্য প্রস্তুতি নিই। ২০২০ সালে প্রথম চেষ্টায় আমি সফল হতে পারিনি। কিন্তু মানুষের সেবা করার জন্য আমার লক্ষ্যে অবিচল ছিলাম। মাঝপথে পড়াশোনা ছাড়িনি। সেই পরিশ্রমের ফল পেলাম।"