বড় দিনে পার্কস্ট্রিটের ভিড়ে করোনা আতঙ্ক ছড়িয়েছে কলকাতায়। বর্ষবরণের রাতে কলকাতা পুলিশ সক্রিয় থাকলেও আতঙ্ক পিছু ছাড়েনি সাধারণের। নানা ভাবে ভিড় সামলানোর চেষ্টা করেছে পুলিশ। সংক্রমণ রোধে মুহূর্মুহ স্প্রে চলেছে পার্ক স্ট্রিটের রাস্তায়। কিন্তু রাতভর সচতেনতার প্রশ্ন থেকেই গেল? অভিজ্ঞ মহলের প্রশ্ন, রোগের সংক্রমণ আগে না উৎসব আগে?
গত ২৪ ও ২৫ ডিসেম্বর পার্কস্ট্রিটের ভিড় নিয়ে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য। একইসঙ্গে রাজ্যে উৎসবের শেষ নেই। রাজনৈতিক দলগুলির সভাসমাবেশ শুধু নয়, বড় দিনের কেক বিতরণ হয়েছে যত্রতত্র। ছোট পরিসরে হলেও সেই সব ক্ষেত্রেও ভিড় উপচে পড়েছে। করোনা বিধি মানা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। বছরের শেষ দিনও তার ব্যতিক্রম হল না। পার্কস্ট্রিট ছাড়াও বিভিন্ন হাউসিং কমপ্লেক্স, হোটেল-ক্লাবে চলল হইহুল্লোর। অনেক ক্ষেত্রেই মাস্কের বালাই ছিল না।
সন্ধ্যে থেকেই পার্ক স্ট্রিটে অল্পস্বল্প ভিড় হতে থাকে। তবে এদিন বড়দিনের ঠাসা ভিড়কে ছাপিয়ে যায়নি। কলকাতা পুলিশও যথেষ্ট সক্রিয় ছিল। ভিড় হলেই সরানোর চেষ্টা চলেছে। ভিড় কমাতে সাধারণের পথ ঘুরিয়ে দিয়েছে। কলকাতা পুলিশ সারাক্ষণ সচেতনতার প্রচার করে গিয়েছে। মাস্কহীনদের হাতে-নাতে ধরেছে পুলিশ। তবু মাস্কহীনদের দাপাদাপি লক্ষ্য করা গিয়েছে।
এদিন তুলনামূলক ভিড় কম থাকলেও একেবারেই উৎসবহীন ছিল না। বরং ভিড়ের ছোটখাটো জটলা ছিল। সব থেকে বড় কথা সেল্ফি আর ছবি তুলতে গিয়েই বিপদের সঙ্কেত দিয়েছে উৎসবে অংশগ্রহণকারী একটা বড় অংশ। ছবি তোলার প্রতিযোগিতায় গিয়ে উবে যাচ্ছিল মাস্ক। তারপর তা অনেকের আর মুখে থাকেনি। এটা কোনও একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ভাবলে ভুল হবে। যথেষ্টই ছিল এই অংশের মানুষ। সন্ধ্যে থেকেই মাস্কহীন ভাবে বহু মানুষকে ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে।
অভিজ্ঞ চিকিতসকরা এই ভিড়ের উৎসব বন্ধ করার দাবি জানিয়ে আসছেন প্রথম থেকেই। সরকারকেও এই ভিড়ের বিপদ নিয়ে সতর্ক করেছে। তবুও বর্ষশেষে শহরের নানা প্রান্তের হইহুল্লোর চলেছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন পুজো-পার্বনে যেখানে শব্দবাজি নিষিদ্ধ সেখানে এদিন সেই শব্দদানবও সক্রিয় ছিল। স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী রাজ্যে দীর্ঘ সময় ১হাজারের নীচে করোনা সংক্রমণ ছিল। বছরের শেষ দিন ৩ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এবার বাকি পুরনির্বাচনেও প্রচার চলবে 'করোনা বিধি' মেনেই। ২০২২ কী অপেক্ষা করছে বাংলার মানুষের জন্য তা সময়ই বলবে।