ভোট পরবর্তী হিংসা ছড়ানোর জন্য কোনওভাবেই মিঠুন চক্রবর্তীর বলা সংলাপ দায়ী নয়, বলে মন্তব্য করেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ। আদালতের এই মন্তব্যে আপাতত স্বস্তিতে বর্ষীয়ান এই অভিনেতা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরের অন্যতম প্রধান মুখ ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। ব্রিগেড-সহ একাধিক জনসভাতে গেরুয়া শিবিরের হয়ে প্রচারে নামতে দেখা যায় অভিনেতাকে। প্রচারে ঝড় তুলতে তিনি নিজের একাধিক ছবির সংলাপ টেনে আনেন। ভোটপরবর্তী হিংসার অন্যতম কারণ হিসাব মিঠুনের সেই সব সংলাপের প্রসঙ্গ টেনে বর্ষীয়ান এই অভিনেতার বিরুদ্ধে মানিকতলা থানায় এফআইআর করেন মৃত্যুঞ্জয় পাল নামে এক ব্যক্তি। মিঠুনের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, উস্কানিমুলক মন্তব্য, শান্তিভঙ্গের চেষ্টা-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়।
সেই দায়ের করা এফআইআর খারিজের জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বর্ষীয়ান অভিনেতা। তাঁকে এবিষয়ে পূর্ণ সহযোগিতার নির্দেশ দেয় আদালত। একাধিকবার মিঠুনকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। বুধবার এই মামলার শুনানিতে, গেরুয়া শিবিরের প্রচারে মিঠুন তাঁর ছবির যেসকল সংলাপ ব্যবহার করেছিলেন, তা কোনওভাবেই ভোটপরবর্তী হিংসা ছড়ানোর জন্য দায়ী হতে পারে, মনে করেন না বিচারপতি কৌশিক চন্দ। উল্টে তিনি প্রশ্ন করেন "তাঁর জনপ্রিয় সংলাপ বলায় হিংসা ছড়ায়, এমন কোন উদাহরণ আছে কি?"
এদিনের শুনানিতে মিঠুনের আইনজীবী বিকাশ সিংকে সেভাবে কোনA প্রশ্ন করেনি আদালত। তবে এই মামলায় সরকারি কৌঁসুলি শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায়কে একাধিক প্রশ্ন করেন বিচারপতি চন্দ। এপ্রসঙ্গে আদালত ১৯৭৫ সালের জনপ্রিয় হিন্দি ছবি "শোলের" প্রসঙ্গ টেনে এনে বিচারপতি চন্দ বলেন, "শোলের আমজাদ খান থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত হাজার হাজার সিনেমায় জনপ্রিয় ডায়লগ শোনা গেছে, আমি কি বলতে পারি তা থেকে কোন হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে"?
আরও পড়ুন যুব মোর্চা নেতার মৃত্যুতে মামলা দায়ের পুলিশের, পার্টি অফিসের নেতাদের বয়ান রেকর্ড
মিঠুনের জনপ্রিয় সংলাপই যে হিংসার প্রকৃত কারণ তাও মানতে নারাজ বিচারপতি চন্দ। সরকারি কৌঁসুলির উদ্দেশ্য তিনি বলেন, "মিঠুন চক্রবর্তীর ডায়লগটিও জনপ্রিয়, তিনি স্বীকার করেছেন যে তিনি ওই ডায়লগ বলেছেন। এর পরেও কি তদন্তের প্রশ্ন রয়েছে?" একই সঙ্গে তিনি স্পষ্ট ভাবেই জানান, "ভোট পরবর্তী অশান্তি ছড়ানোর সঙ্গে মিঠুন চক্রবর্তীর এই ডায়লগের সম্পর্ক থাকতে পারে না।" আগামী মঙ্গলবার দুপুর দুটোয় এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে, সেদিন এবিষয়ে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট আদালতে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি চন্দ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন