Advertisment

'রবিবার রাত ১১টায় শেষ কথা হয়েছিল', উৎকণ্ঠায় প্রহর গুনছে কলকাতার কাশ্মীরিরা

২০ বছর আগে কলকাতায় আসার পর এই প্রথম পরিবারের সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে আহমেদ ভাটের।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
article 370: Kashmiris living in Kolkata are in anxiety for families

জম্মু-কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনী।

রয়েছেন কলকাতায়, মন পড়ে আছে কাশ্মীরে। কোনওভাবেই যোগাযোগ করা যাচ্ছে না পরিবারের সঙ্গে। এ যেন একই দেশের দুই মুলুক।

Advertisment

পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের সমস্ত মাধ্যম এই মুহূর্তে অবরুদ্ধ। রবিবার রাত ১১টায় মোবাইলে শেষ কথা হয়েছে। তারপর থেকে আর কোনও যোগাযোগ নেই। বাবা-মা, স্ত্রী, ছেলে ও মেয়ে থাকেন শ্রীনগরে, রোজগেরে ছেলের বাস কলকাতায়। ২০ বছর আগে কলকাতায় আসার পর এই প্রথম পরিবারের সঙ্গে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে আহমেদ ভাটের। তাঁরই পাশে দাঁড়ানো জিশান নাজির জানালেন, কাল রাত দশটায় শেষ কথা বলেছেন পরিবারের সঙ্গে। ৩৭০ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্তের খবর কানে যাওয়া মাত্র কলকাতায় বসবাসকারী কশ্মীরিরা দিনভর চোখ রেখেছেন টিভির পর্দায়। তবে চোখেমুখে অস্বস্তি থাকলেও, কথা-বার্তায় উৎকণ্ঠা আড়াল করার চেষ্টা করছেন তাঁরা সকলেই।

আরও পড়ুন: ৩৭০ ধারা রদের পিছনে ‘রহস্য’ দেখছে বাংলার কংগ্রেস ও সিপিএম

কাশ্মীরে ৩৭০ ও ৩৫এ ধারা তুলে নেওয়ার ফলে সেখানে কী ঘটতে পারে? এই ঘোষণা কি আপনারা মেনে নিচ্ছেন? এইসব প্রশ্নগুলি পরপর শুনেই কেমন যেন ভাবলেশহীন হয়ে পড়লেন আহমেদ ভাট ও জিশান নাজির। আহমেদ বললেন, "জাতীয় স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন দেখা ও অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।" তাঁর বক্তব্য, "এই সিদ্ধান্তের ফলে কাশ্মীরে পর্যটনি শিল্প, যুবদের কর্মসংস্থান, শিল্প হলে তো ভাল। তবে ভবিষ্যতে কি হবে তা তো এখনই বলা সম্ভব নয়। সে জন্য় অপেক্ষা করতেই হবে।" তবে আহমেদ জানিয়ে দেয়, "সেখানকার ছাত্র-যুবরা এই ঘোষণার পর কী সিদ্ধান্ত নেয় তা দেখতে হবে। তাঁদের অবস্থানের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে।"

আরও পড়ুন: যুবা মোদীর ‘কথা রাখলেন’ প্রধানমন্ত্রী মোদী

বাড়ির লোকেরা গতকাল কী বলেছিলেন? আহমেদ বলেন, "পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছিল, কিছু একটা হতে চলেছে। তবে এই সিদ্ধান্ত হবে তা বোঝা যায়নি।" জিশানের বক্তব্য, "কালই বোঝা গিয়েছিল কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা হতে পারে। কারণ, জরুরি জিনিসপত্রগুলি কাশ্মীরারা কালই সংগ্রহ করে ঘরে রেখে দিয়েছে। কাল সেখানে ঘোষণা হয়েছিল, চিকিৎসকরা ছুটি নিতে পারবেন না, বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্তরাও বাইরে যাবেন না। তাছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতাও ছিল চোখে পড়ার মতো। গৃহবন্দি থাকতে হবে বুঝতে পেরেই বাড়ির লোকজন আগাম ওষুধ, খাবার, তেল, রান্নার সরঞ্জাম-সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বাড়িতে মজুত রেখেছে।"

সারাদিন দেশ যে ইস্যুতে তোলপাড় হল সেই ৩৭০ বা ৩৫ এ নিয়ে আদৌ তেমন ভাবিত নন আহমেদ-জিশানদের মতো কলকাতাবাসী কাশ্মীরিরা। তাঁদের চোখে মুখে কেবল প্রিয়জনদের নিরাপত্তা নিয়ে উৎকণ্ঠা। এখন শুধ একটাই আকুতি, ওরা সব যেন ঠিক থাকে। আর এসবের মধ্যেই ক্যালেন্ডার দিন গুনছে বখরি ঈদের।

Article 370 kolkata
Advertisment