বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'মান ভাঙালেন' পার্থ চট্টোপাধ্যায়! বুধবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ জানিয়ে কাঁদতে কাঁদতে কলেজ অধ্যক্ষার পদ থকে ইস্তফার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন বৈশাখী। কিন্তু সকালে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলার পর আজ আর ইস্তফা দিলেন না শোভন-ঘনিষ্ঠ। আগে বলে থাকলেও বৃহস্পতিবার শেষ পর্যন্ত 'ব্যস্ততা'র কারণেই মিল্লি আল আমিন কলেজের অধ্যক্ষার পদ থেকে ইস্তফাপত্র আচার্য তথা রাজ্যপালকে পাঠালেন না কলকাতার প্রাক্তন মহানাগরিকের বান্ধবী। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বৈশাখী এদিন বললেন, "ওঁর অ্যাপোয়েন্টমেন্ট পাইনি আজ। আমিও একটা কাজে ব্যস্ত ছিলাম"। তবে কি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈশাখীর মধুরেণ সমাপয়েৎ হল? বৈশাখীর দাবি, ইস্তফার সিদ্ধান্ত থেকে তিনি সরবেন না।
আরও পড়ুন- বৈশাখীর কথায় ‘ব্যথা’ পেলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়
পার্থর সঙ্গে কী কথা হয়েছে বৈশাখীর?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "সকালে পার্থবাবুকে ফোন করেছিলাম। উনি বলেছেন, আবেগের বশে এমন সিদ্ধান্ত নিও না। উনি গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। উনি বলেছেন, দোষীরা শাস্তি পাবেই। আমায় ইস্তফার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার অনুরোধ করেছেন। আমি বললাম, আমার কথায় আঘাত পেয়ে থাকলে খুবই লজ্জিত। আসলে ওঁর উপর তো কোনও রাগ নেই"। তাহলে কি ইস্তফা দিচ্ছেন না বৈশাখী? জবাবে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী বলেন, "আমার কলেজেরও সকলে আমায় সকাল থেকে ফোন করছেন, বলছেন ফিরে আসার জন্য। ওঁরা বলছেন, আমি না থাকলে কলেজের কী হবে। কিন্তু আমার সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে তাতে আমি আমার সিদ্ধান্ত থেকে সরব না। ইস্তফা দেবই। যদি উনি (পার্থ) গ্রহণ না করেন সেটা আলাদা বিষয়"।
আরও পড়ুন- বৈশাখীর ‘চাকরি খেলেন’ মমতা! শোভনের পাশে বসে কাঁদতে কাঁদতে ইস্তফা ঘোষণা
বুধবার শোভন চট্টোপাধ্যায়ের পাশে বসে যে ভঙ্গিতে পার্থ-সহ মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন বৈশাখী। অথচ এর ২৪ ঘন্টার মধ্যেই যেভাবে বৈশাখী-পার্থ কথা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে, তাতে দু'পক্ষের মাঝে জমা বরফ আপাতত গলতে পারে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।
বুধবার ঠিক কী অভিযোগ করেছিলেন বৈশাখী?
সাংবাদিক বৈঠক ডেকে বৈশাখী বলেন, "দিদিকেই বলতে চাই। আপনি কি সত্যিই নির্দেশ দিয়েছেন যে, সাম্প্রদায়িক তকমা দিয়ে চাকরি খেয়ে নেবেন! নাকি আপনার নাম করে অন্য কেউ এসব বলছেন’’। মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন বৈশাখী। কাঁদতে কাঁদতে বৈশাখী এদিন বলেন, ‘‘আমার সম্মান ভূলুন্ঠিত হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীকে অনুরোধ করব, উষ্মা হলে, ক্রোধ হলে বকুন। কিন্তু, কেন আপনি এই অন্যায় অবিচার করছেন?’’
আরও পড়ুন- ‘যদি বেঁচে থাকি কাল সব বলব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই আমার সবথেকে বেশি ক্ষতি করেছেন’
এরপর সাংবাদিক বৈঠকে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমার এখনও আস্থা আছে। কারণ, ছোটরা ভুল করতে পারে, বড়রা ভুল করলে মানায় না"। তাহলে কি বৈশাখীর উপর এখনও অগাধ আস্থা রয়েছে পার্থর, উত্তর দেবে আগামী।