Advertisment

বৈশাখীকে ‘চরম হেনস্থা-গালিগালাজ’, কলেজে ধুন্ধুমার

‘‘একটা সময় জোর করে দরজা ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করেন উনি। দরজায় দড়াম দড়াম করে ধাক্কা মারতে থাকেন। এই ঘটনায় আমি অসুস্থ বোধ করায় বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হই’’।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
baisakhi, বৈশাখী, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়, baiskahi banerjee, বৈশাখি, বৈশাখী ব্যানার্জী, বৈশাখী ব্যানার্জি, বৈশাখীকে চরম হেনস্থার অভিযোগ, কেঁদে ফেললেন বৈশাখী, baisakhi banerjee news, baisakhi banerjee latest news, Milli Al-Ameen College for Girls, মিল্লি আল আমিন কলেজ

কান্নায় ভেঙে পড়লেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি।

অধ্যাপিকা তথা শোভন-বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে মঙ্গলবার ধুন্ধুমারকাণ্ড ঘটল মিল্লি আল আমিন কলেজে। ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশের পর বেশ কিছুদিন বাদে এদিনই কলেজে গিয়েছিলেন বৈশাখী। আর তখনই ‘চরম হেনস্থা’র শিকার হতে হয় তাঁকে, এমনটাই অভিযোগ। মিল্লি আল আমিন কলেজের অধ্যক্ষা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে কলেজেরই ওই অধ্যাপিকা সাবিনা নিশাত ওমারের বিরুদ্ধে। এদিন গোলমালের সময় ‘বাধ্য হয়ে’ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করেন বলেও জানিয়েছেন বৈশাখী। পরে বৈশাখীকে ফোন করে পার্থ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী। এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে রীতিমতো কান্নায় ভেঙে পড়েন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisment

আরও পড়ুন: পুজোয় ১৫০টা শাড়ি পেয়েছি, শোভনদা একটা দিয়েছে: বৈশাখী

ঠিক কী ঘটেছে?

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে কাঁদতে কাঁদতে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ইস্তফা দেওয়ার পর (এর আগে হেনস্থার অভিযোগ তুলে ইস্তফা দিয়েছিলেন বৈশাখী। যদিও সেই ইস্তফাপত্র গ্রহণ করেননি শিক্ষামন্ত্রী) আজই কলেজে যাই। আমার ঘরে বসে কিছু কাজ করছিলাম। অধ্যক্ষের ঘরে ঢোকার আগে অনুমতি চাওয়াটাই রীতি। হঠাৎ দেখলাম, উনি (সাবিনা) ঢুকে পড়লেন। বললাম, অধ্যক্ষের ঘরে ঢোকার আগে অনুমতি চাওয়াটাই রীতি। একথা বলতেই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন আমাকে। কলেজের অন্য কর্মীরাও ওঁকে সামলাতে পারেননি। আমার নিরাপত্তারক্ষীও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেননি। একটা সময় জোর করে দরজা ভেঙে ঢোকার চেষ্টা করেন উনি। দরজায় দড়াম দড়াম করে ধাক্কা মারতে থাকেন। এই ঘটনায় আমি অসুস্থ বোধ করায় বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হই। স্থানীয় থানার ওসিকেও ফোন করে সুরাহা হয়নি। উনি (সাবিনা) তো বেনিয়াপুকুর থানা করায়াত্ত করে রেখেছেন। পরিচালন কমিটিও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। দীর্ঘদিন ধরে উনি এসব করছেন’’। উল্লেখ্য, বৈশাখীর আগে ওই কলেজের টিচার-ইন-চার্জ ছিলেন শবিনা। সেই পদ থেকে তাঁকে সরানোর ফলেই এই আচরণ বলে দাবি বৈশাখীর।

আরও পড়ুন: বৈশাখীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ, পুলিশের দ্বারস্থ শোভন-বান্ধবী

baisakhi banerjee, বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।

ইংরেজির অধ্যাপিকা শবিনার বিরুদ্ধে বৈশাখীর আরও অভিযোগ, ‘‘(সাবিনা) ১১টায় এলে রেজিস্ট্রারে লিখতেন, সকাল ৯টায় এসেছেন। ক’দিন নোটিস করার পর ওকে জিজ্ঞেস করতেই আমার মুখে বডি স্প্রে ছিটিয়ে দিয়েছিলেন একবার। উনি কোনও ক্লাসও নেন না। নিজের মতো আসেন, চলে যান’’। এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় আরও জানান, ‘‘এ সময়ই পার্থবাবুকে (শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়) ফোন করি। উনি প্রথমে ফোন ধরেননি। পরে আমায় রিং ব্যাক করেন। আমার কথা শুনে উনি বলেছেন, ভেঙে পোড় না, ব্যবস্থা নিচ্ছি’’। বৈশাখী বলেন, ‘‘আজ যা দেখলাম, এই পরিবেশে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। বুধবার ফের শিক্ষামন্ত্রীকে পদত্যাগপত্র পাঠাব’’।

এদিকে, মিল্লি আল আমিন কলেজের অশিক্ষককর্মচারী দিলীপ ওঁরাও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানান, ‘‘সাবিনা ম্যাডাম বৈশাখী ম্যাডামের গায়ে হাত তুলতে যাচ্ছিলেন। আমরা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করি। সাবিনা ম্যাডামাই বিশ্রি ভাষায় গালাগাল দেন বৈশাখী ম্যাডামকে’’। একই বয়ান শোনা গিয়েছে কলেজের অ্যাকাউন্টট্যান্ট সোহেল খানের মুখেও।

আরও পড়ুন: বৈশাখীর ‘চাকরি খেলেন’ মমতা! শোভনের পাশে বসে কাঁদতে কাঁদতে ইস্তফা ঘোষণা

অন্যদিকে, বৈশাখীর অভিযোগ অস্বীকার করে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে সাবিনা বলেন, ‘‘বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ই আমাকে গালিগালাজ দিয়েছেন। উনি আমার অ্যাটেন্ডেন্স রেজিস্ট্রার লুকিয়ে রেখেছেন, আমায় সই করতে দেননি। উনি কলেজে না এসে টাকা তোলেন। আজ আমি ওঁকে জিজ্ঞেস করতে যাই, কোথায় রেজিস্ট্রার রয়েছে, উনিই তখন গালিগালাজ দেন। উনি তো প্রায়ই খারাপ কথা বলে থাকেন। উনি দুর্নীতিগ্রস্ত। উনি নিজেই চক্রান্তের ঘটনা সাজান, তারপর নিজেই নির্যাতিতার ভূমিকা পালন করেন’’।

প্রসঙ্গত, এর আগে কলেজে ওই অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন বৈশাখী। সাংবাদিক বৈঠক ডেকে কাঁদতে কাঁদতে বৈশাখী বলেছিলেন, তাঁর সম্মান ভূলন্ঠিত হচ্ছে। এরপরই ইস্তফা দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেছিলেন বৈশাখী। যদিও বৈশাখীর ইস্তফাপত্র গ্রহণ করেননি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

kolkata news
Advertisment