Advertisment

৩৫ বছরের আইনি যুদ্ধে জয়, হাইকোর্টের নির্দেশে বকেয়া বেতন পাচ্ছেন শিক্ষিকা

বাম আমলে গিয়েছিল চাকরি, দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর বিচার পাইয়ে দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Bengal Teacher wins 35 year long legal battle

৭৬ বছর বয়সে এসে অবশেষে আইনি যুদ্ধে জিতলেন শিক্ষিকা। ২৫ বছরের বকেয়া বেতন ১০ শতাংশ সুদ সমেত পাবেন বৃদ্ধা।

৩৫ বছরের লড়াই শেষে যুদ্ধজয়। বাম আমলে আচমকাই চাকরি চলে গিয়েছিল স্কুল শিক্ষিকার। স্কুলে ঢোকার অনুমতিটুকু দেননি প্রধান শিক্ষক। তার পর ৩৫ বছর ধরে প্রাপ্য বেতনের জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন শ্যামলী বসু। আদালতের চক্কর কাটতে কাটতে চুল পেকে গিয়েছে। ৭৬ বছর বয়সে এসে অবশেষে আইনি যুদ্ধে জিতলেন শিক্ষিকা। এসএসসি দুর্নীতি নিয়ে শিরোনামে আসা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসেই মিলল বিচার। ২৫ বছরের বকেয়া বেতন ১০ শতাংশ সুদ সমেত পাবেন বৃদ্ধা।

Advertisment

১৯৭৬ সালে শ্যামপুরের হাইস্কুলে চাকরি পান শ্যামলী বসু। সমস্ত নিয়ম মেনেই তাঁর নিয়োগ হয় স্কুলে। কিন্তু ঠিক চার বছর পরে আচমকা একদিন চাকরি চলে যায় তাঁর। বাম আমলে একদিন হঠাৎ তাঁকে স্কুলে আসতে বারণ করে দেন প্রধান শিক্ষক। এর পর চাকরি ফিরে পেতে আইনি লড়াই শুরু করেন শ্যামলী। প্রধান শিক্ষক থেকে স্কুল শিক্ষা দফতর, এই মন্ত্রী সেই মন্ত্রী, এই আদালত থেকে অন্য আদালত চক্কর কাটতে থাকেন।

দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে শিক্ষা দফতরে অনেক মন্ত্রী এসেছেন, আবার চলেও গেছেন। সবার কাছেই চিঠিপত্র পাঠিয়ে যেতেন শিক্ষিকা। কিন্তু উত্তর আর আসত না। উত্তর এলেও চাকরি ফিরে পাওয়ার কোনও আশার আলো দেখতে পেতেন না শ্যামলীদেবী। এর পর মামলা যায় হাইকোর্টে। অবশেষে ওঠে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। দাবাং বিচারপতি হিসাবে নামডাক রয়েছে অভিজিৎবাবুর। তাঁর এজলাসেই হল যুদ্ধজয়। বৃহস্পতিবার বিচারপতি রায় দিলেন, ২৫ বছরের বকেয়া বেতন ১০ শতাংশ সুদ সমেত দিতে হবে শিক্ষিকাকে।

আরও পড়ুন রাজ্যের স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বড়সড় ঘোষণা SSC-র

২০০৫ সালে হিসাবমতো অবসর নিয়েছেন শ্যামলীদেবী। তাই ১৯৮০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ২৫ বছরের বকেয়া বেতন পাবেন তিনি। এদিন আদালতের রায়ের পর এজলাসেই কান্নায় ভেঙে পড়েন শিক্ষিকা। পরে তিনি জানান, দেরিতে হলেও শেষ পর্যন্ত যে তিনি সুবিচার পেয়েছেন, তাতেই তিনি খুশি।

শ্যামলীদেবীর আইনজীবী রবিলাল মৈত্র জানিয়েছেন, এত বছর ধরে নিজের দাবি আদায়ে মামলা চালিয়ে যাওয়া সহজ ছিল না। পদে পদে নিরাশা ছিল। তবুও লড়াই ছাড়েননি তিনি। ১৯৮০ সালে চাকরি চলে যাওয়ার পর কেন তাঁর চাকরি কেড়ে নেওয়া হল তা জানতে শিক্ষা দফতরে আবেদন করেছিলেন শ্যামলীদেবী। শিক্ষা দফতর কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে না পারায় ১৯৮৬ সালে আদালতের দ্বারস্থ হন শ্যামলীদেবী।

আরও পড়ুন হাঁসখালির নির্যাতিতার পরিবারকে ১ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবিতে মামলা হাইকোর্টে

২০১৩ সালে হাইকোর্ট তাঁর পেনশনের ব্যবস্থা করলেও ২৫ বছরের বকেয়া বেতন নিয়ে কোনও সুরাহা হয়নি। তাই লড়াই জারি রাখেন শ্যামলী। আজ, এতদিন পর আইনি লড়াইয়ে জয় পেলেন শ্যামলীদেবী। তাঁর এই দীর্ঘ লড়াই বহু মানুষের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে বলাই বাহুল্য।

West Bengal Calcutta High Court
Advertisment