রোজভ্যালিকাণ্ডের তদন্তে নয়া মোড়। চিটফান্ড কেলেঙ্কারির তদন্তে এবার সিবিআই-এর মুখোমুখি হলেন কলকাতার আরেক প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার গৌতমমোহন চক্রবর্তী। শুক্রবার সিজিও কমপ্লেক্সে প্রায় ৪০ মিনিট গৌতমমোহনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সূত্রের খবর, এদিন সিবিআই-এর কাছে বেশ কিছু নথি তুলে দিয়েছেন কলকাতার প্রাক্তন নগরপাল।
কেন গৌতমমোহন চক্রবর্তীকে জিজ্ঞাসাবাদ?
সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, রোজভ্যালিকাণ্ডে ২০১০ সালে সেবির তরফে চিঠি দেওয়া হয়েছিল কলকাতা পুলিশকে। সে সময় কলকাতার নগরপাল ছিলেন গৌতমমোহন চক্রবর্তী। রোজভ্যালিকাণ্ডে সে সময় একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছিল। সেই প্রেক্ষিতে কী তদন্ত করেছিল কলকাতা পুলিশ, সে ব্যাপারে জানতেই গৌতমমোহনকে তলব করে সিবিআই।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কী জানালেন গৌতমমোহন চক্রবর্তী?
সিবিআই-এর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সংবাদমাধ্যমে কলকাতার প্রাক্তন সিপি বলেন, ‘‘আমি যখন নগরপাল ছিলাম, সে সময় রোজভ্যালির তদন্ত চলছিল। সে সময় কী তদন্ত হয়েছিল, তদন্তের অগ্রগতি কী ছিল। সে ব্যাপারে জানতে চেয়েছিল সিবিআই। আমি যতদূর জানি, সে সময় কোনও এফআইআর হয়নি। ২০১১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত এফআইআর হয়নি’’। কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার এও বলেন, ‘‘তদন্তের স্বার্থে আবার ডাকা হলে আসব। তদন্তে সহযোগিতা করছি’’।
উল্লেখ্য, রোজভ্যালি কেলেঙ্কারিতে এর আগে কলকাতার আরেক প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের প্রাক্তন গোয়েন্দা প্রধান দময়ন্তী সেনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। জানা গিয়েছিল, কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান থাকাকালীন রোজভ্যালি সংক্রান্ত বিভিন্ন অভিযোগ জমা পড়েছিল দময়ন্তী সেনের কাছে। আর্থিক দুর্নীতি সংক্রান্ত সেসব অভিযোগের তদন্ত করেন দময়ন্তী। এ সংক্রান্ত বিষয়ে সেবিতে রিপোর্টও পাঠান পার্ক স্ট্রিট গণধর্ষণকাণ্ডের অন্যতম তদন্তকারী দময়ন্তী। রোজভ্যালিকাণ্ডের সেই তদন্তের বিষয়ে জানতেই কলকাতা পুলিশের বর্তমান অতিরিক্ত কমিশনার (৩)-কে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ করে।
অন্যদিকে, এর আগে রোজভ্যালি মামলায় ডিসি বন্দর ওয়াকার রাজাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। জানা গিয়েছিল, ২০১২ সালে কাস্টমস হাউসে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ছিলেন সেবি ও আরওসি-র আধিকারিকরা। সিবিআই-এর দাবি, সিআইডি-র হয়ে ওই বৈঠকে ছিলেন রাজা। বৈঠকে ওয়াকার রাজা জানিয়েছিলেন, অভিযোগ না থাকায় রোজভ্যালির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। এরপর সেবির তরফে রোজভ্যালির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রের কপি পাঠানো হয়। এরপর রোজভ্যালির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কিনা, এ ব্যাপারে জানতেই ওই আইপিএসকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে খবর।