Mamata Banerjee-Mukul Roy: গত চার বছর ধরে রাজনৈতিক কারণে দূরত্ব বেড়েছিল। কিন্তু ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভাঙেনি কখনও। মুকুল রায়ের স্ত্রী কৃষ্ণার মৃত্যুতে সেই সম্পর্কের বাঁধন যেন আরও শক্ত হয়ে গেল। ব্যক্তিগত বোঝাপড়াকে তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার বিকেলে মুকুলের সল্টলেকের বাড়িতে যান মমতা। সেখান তিনি জানান, রায় পরিবারে যাতায়াত ছিল তাঁর। মুকুলের স্ত্রী কৃষ্ণা সুস্থ হয়ে ফিরে আসবেন, সেই আশাও করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তা আর হল না।
এদিন সল্টলেকের বাড়িতে গিয়ে খুব আক্ষেপ করেন মমতা। বলেন, "মুকুল আমার দীর্ঘদিনের সহকর্মী। মুকুল-পত্নীর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল। অনেক বার ওঁদের পরিবারে গিয়েছি। মা যখন বেঁচেছিল দেখাও হয়েছে। ভেবেছিলাম কৃষ্ণা সুস্থ হয়ে উঠবে। সবরকম চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু কিছু করা গেল না।"
এদিন ভোর পৌনে পাঁচটায় প্রয়াত হন কৃষ্ণা রায়। বুধবার তাঁর পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, "শুভ্রাংশু চেন্নাইতে রয়েছে। আগামিকাল সকাল সাতটায় দেহ নিয়ে ফিরবে ওরা। এখান থেকে ছেলের সঙ্গে কাঁচরাপাড়া বাড়িতে দেহ নিয়ে যাবে মুকুল। তারপর অন্তেষ্ট্যি সম্পন্ন হবে।" এদিন কৃষ্ণা রায়ের মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পর একে একে সল্টলেকের বাড়িতে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের ভিড় বাড়তে থাকে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুজিত বোস দেখা করেন মুকুলের সঙ্গে। দুপুর সাড়ে তিনটে নাগাদ আসেন মুখ্যমন্ত্রী। ছিলেন আধ ঘণ্টার মতো।
আরও পড়ুন দুঃসংবাদ মুকুল রায়ের পরিবারে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত স্ত্রী
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে করোনা সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছিলেন মুকলের স্ত্রী। আর স্ত্রীর অসুখের সময়ই বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়কের। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন কৃষ্ণা রায়কে দেখতে যান তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কথা বলেন শুভ্রাংশুর সঙ্গে। এরপরই মুকুলের সঙ্গে বিজেপির দূরত্বের জল্পনা তৈরি হয়। তড়িঘড়ি দেখা করতে হাসপাতালে যান রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মুকুলকে ফোন করে স্ত্রীর খোঁজ নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কৃষ্ণা রায়ের ফুসফুস প্রতিস্থাপনের জন্য অঙ্গদাতার খোঁজ চলছিল। সেই খোঁজ পাওয়ার পর গত ১৭ জুন চেন্নাইয়ের হাসপাতালে এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। মায়ের সঙ্গে চেন্নাইয়ে যান ছেলে শুভ্রাংশুও। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হল না। মাতৃহারা হলেন বীজপুরের প্রাক্তন বিধায়ক। সেইসঙ্গে জীবনসঙ্গীকে হারিয়ে নিঃসঙ্গ হলেন মুকুল রায়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন