করোনা ভাইরাসের থাবা এবার কলকাতাতেও! আশঙ্কার মেঘ ঘনীভূত হচ্ছে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। ধুম জ্বরে হঠাৎই কাবু হয়ে পড়েন চীনা যুবতী হুয়ামিন। প্রথমে তাঁকে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে রবিবার তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, এমনটাই অনুমান। তবে এ বিষয়ে এখনও স্পষ্ট উত্তর দেননি ডাক্তাররা। ইতিমধ্যে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে একের পর এক পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু হয়েছে। আইডি হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কোনো নমুনা পাওয়া যায়নি।
আইডি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা এক কর্মী জানান, এই আঠাশ বছরের মহিলা চিনে ঘুরতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে গত ২৪ জানুয়ারি কলকাতায় ফেরেন তিনি। এরপর হঠাৎই জ্বরে পড়েন হুয়ামিন। সাধারণ ওষুধে তাঁর জ্বর কমে না। এরপরই, করোনা ভাইরাসের সন্দেহে তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শক্তিবৃদ্ধি করছে করোনাভাইরাস, আতঙ্কে কাঁপছে চিন-সহ গোটা বিশ্ব
এ মুহূর্তে একের পর এক পরীক্ষা করছেন ডাক্তাররা। জানা যাচ্ছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে গুরুত্বর শ্বাসকষ্ট হতে পারে। কিন্তু হুয়ামিনের তেমন কোনো লক্ষণ এই মূহুর্তে ধরা পরেনি বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। তবে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের ডাক্তার মহল মনে করছেন, হুয়ামিনকে আরও বেশ কিছুদিন পর্যবেক্ষনে রাখা হবে। প্রয়োজনে তাঁর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পুণের ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি অফ ভাইরোলজিতে পাঠানো হতে পারে।
এদিকে, কলকাতার সার্ভে পার্কের বাসিন্দা রাজশ্রী বসুর পরিবার চীনের সাংহাইতে থাকেন। রাজশ্রীর স্বামী দেবাশিষবাবু সেখানকার স্কুলের শিক্ষক। ১৭ জানুয়ারিতে কলকাতায় ফেরেন তাঁরা। ফেরার পথে হঠাৎই শরীর খারাপ হয় রাজশ্রীদেবীর। চতুর্দিকে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা যেভাবে মানুষকে আতঙ্কিত করেছে, তাতে দেবাশিষবাবু সিদ্ধান্ত নেন, তাঁর স্ত্রী কোরোনা ভাইরাস আক্রান্ত কিনা তা যাচাই করে নেবেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে রাজশ্রীদেবী বলেন, ' নিজেই গত পরশু বেলেঘাটা আই ডি হাসপাতালে যাই। কিন্তু অপরিচ্ছন্ন নোংরা অন্ধকার ওয়ার্ড দেখে আমি আঁতকে উঠি। হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, পরীক্ষা করে আমাকে ছাড়া হবে দিন দুয়েক পর। কিন্তু আমার পক্ষে সেই ওয়ার্ডে থাকা সম্ভব ছিল না। হাসপাতাল থেকে অনুরোধ করা হলেও আমি বাড়ি ফিরে আসি। আমি এখন অনেকটাই সুস্থ আছি। যেহুতু চিন থেকে ফিরতে শরীরটা খারাপ হয়, তাই নিজের তাগিদেই পরীক্ষা করতে গিয়েছিলাম'।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে আগাম সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেলেঘাটা হাসপাতালকে নোভেল করোনা ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য বেছে নিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। সেখানে তৈরি রাখা হয়েছে দুটি আইসোলেশন ওয়ার্ড। কিন্তু সেই আইসোলেশন ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সোয়াইন ফ্লু যখন রাজ্যে থাবা বসিয়েছিল, তখন ওই ওয়ার্ড তৈরি করা হয়। সেই ওয়ার্ডেই নোভেল করোনা ভাইরাস সন্দেহে আক্রান্ত রোগীদের ভর্তি করা হবে।