Advertisment

করোনার বিড়ম্বনা, ফিট সার্টিফিকেট ছাড়া হাজিরায় নিষেধাজ্ঞা কলকাতার কিছু সংস্থার!

"রিপোর্ট নেগেটিভ হলেও বেশ কিছু দিন এখন অফিস যেতে পারব না। ছুটির সঙ্গে, মাইনে কাটবে অফিস, চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে"।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল।

করোনার বিড়ম্বনা! আলোর গতিবেগে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। হাসপাতাল, বেসরকারি সংস্থা, অলিতে গলিতে, ওষুধের দোকানে এখন একটাই প্রসঙ্গ- করোনা। যতনা না সচেতনতা, তার চেয়ে ঢের বেশি চর্চা। এরই মধ্যে কলকাতার বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থা নির্দেশ দিয়েছে, বাইরে থেকে ঘুরে কলকাতায় আসার পর জ্বর, সর্দি হলেই অফিসে আসা বন্ধ করতে হবে। করোনার পরীক্ষা করাতে হবে। পরীক্ষার রিপোর্ট যদি নেগেটিভ হয়, তাহলেই মিলবে অফিসে প্রবেশ করার অনুমতি।

Advertisment

শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে চেক আপ করাতে এসেছেন প্রায় পনেরো থেকে কুড়ি জন। এঁদের প্রায় সকলেই অফিসের নিয়মের গুঁতোয় আসতে বাধ্য হয়েছেন। এমনই এক ব্যক্তি রাজর্ষি রায়চৌধুরি জানিচ্ছেন, "করোনা ভাইরাসের পর্যাপ্ত পরীক্ষা নিরীক্ষার ব্যবস্থা নেই বেলেঘাটা আইডিতে। পরীক্ষার নমুনা নিয়ে, রিপোর্ট আসতে কতদিন সময় লাগবে জানি না"। রাজর্ষিবাবু বলেন, "কুয়েত যাব, তাই সেখানের বিমানবন্দরে দেখাতে হবে ফিটনেস সার্টিফিকেট। এদিকে যাওয়ার তারিখ গত পরশু। জানি না কী হবে?"

আরিফ তাঁর বন্ধুর সঙ্গে নেপাল ঘুরতে গিয়েছিলেন, নেপাল থেকে ফেরার পর যে দিন অফিস যান, সেদিন ঢোকা মাত্রই তাঁকে জানান হয়, করোনা ভাইরাসের পরীক্ষা করাতে হবে। যতদিন না ফিটনেস সার্টিফিকেট দেখাতে পারবেন ততদিন অফিসে প্রবেশ নিষেধ।

আরও পড়ুন: বাংলাতেও করোনা? হাসপাতালে ভর্তি ৭, নজরদারিতে শতাধিক

এক বেসরকারি ব্যাঙ্কে কাজ করেন প্রতিমা হালদার। অফিসে কাজ করার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সেইদিনই অফিস থেকে তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা তার পরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি জানিয়েছেন, অফিসের কাজেই দিন পনেরো আগে দিল্লি গিয়েছিলেন। মূলত, সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে অফিস। শুক্রবার সকালে এক চিনা দম্পতি তাঁদের মেয়েকে নিয়ে বেলেঘাটা আইডি হাসাপাতালে আসেন, তাঁর মেয়ের জ্বর হয়েছে। এক বেসরকারি স্কুলে লেখাপড়া করে সে। স্কুলের তরফ থেকে জানান হয়েছে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা তা পরীক্ষা করাতে হবে। ডাক্তারের রিপোর্ট দেখে তবেই স্কুলে যেতে পারবে সে। এই দম্পতি বলেন, "পূর্ববংশরা চিনের বাসিন্দা। কিন্তু তাঁরা প্রায় দীর্ঘ বহু বছর চিনে যায়নি। এলাকায় যেহুতু চিনা সম্প্রদায়ের সঙ্গেই আমরা বসবাস করি, তাই স্কুল থেকে একটা পরীক্ষা করিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আপাতত, মেয়ের স্কুলে যাওয়া বন্ধ। কবে রিপোর্ট আসবে তা জানি না"।

ডাঃ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, "এখন সব পরীক্ষা পুনেতে হচ্ছে না বলেই জানি। কলকাতার এনআইসিইডি-তে পরীক্ষা করা হবে। সময় লাগবে দুই দিন থেকে তিন দিন। হঠাৎ করে কেউ হাসপাতালে গিয়ে যদি বলে আমার করোনা ভাইরাস হয়েছে কিনা পরীক্ষা করব, সেভাবে হবে না। তাঁকে দেখাতে হবে, ১৫ জানুয়ারির পর সে বিদেশ থেকে এখানে এসেছে। এরপর, এনআইসিইডি-র আধিকারিকরা তাঁদের রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করবে। তবে সামান্য কোনো জ্বর, সর্দি, কাশিতে আক্রান্ত হওয়া মানেই তাঁকে পরীক্ষা করাতে হবে, এমনটা নয়"। তিনি আরও বলেন, "সম্প্রতি স্বাস্থ্য দফতরের জারি করা নিয়ম অনুযায়ী, পরীক্ষা করার পর নেগেটিভ এলেও ১৪ দিন বাড়িতে থাকতে হবে। আর যদি পজেটিভ হয়, এরপর তার চিকিৎসা শুরু হবে। সেরে ওঠার পর , আবারও তার পরীক্ষা করা হবে, দুটি পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এলে, মাস খানেক বাডিতে থাকার পর সে কাজে যোগ দিতে পারবে"। এদিকে আরিফ জানাচ্ছে, রিপোর্ট নেগেটিভ হলেও বেশ কিছু দিন এখন অফিস যেতে পারব না। ছুটির সঙ্গে, মাইনে কাটবে অফিস, চিন্তায় রাতের ঘুম উড়েছে। একই মন্তব্য করেছেন প্রতিমা দেবী।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus
Advertisment