নিরাপত্তার দাবি মিটেছে। কিন্তু যারা ১১ জুন রাতে এনআরএসে ডাক্তার পরিবহকে নির্মম ভাবে মেরেছিল, তারা আজও ঘুরে বেড়াচ্ছে শহরের রাস্তায়। কেন তাদের গ্রেফতার করা হল না এখনও? সেই প্রশ্ন নিয়ে স্বাস্থ্য দফতর থেকে লালবাজার ঘুরছেন চিকিৎসকরা। সূত্রের খবর, প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, 'লিগাল কেস, সবটাই সময় সাপেক্ষ'। রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য, পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও ডিজিপি-র উপস্থিতিতে গত শনিবার বৈঠক করেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
বৈঠক শেষে পথে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জুনিয়ার ডাক্তাররা। তাঁরা জানিয়েছেন, "রাজ্যের প্রশাসনকে ১১ জুনের রাতে ঘটে যাওয়া নিন্দনীয় ঘটনাকে ফের মনে করিয়ে দিতে চাই। ১৭ জুন নবান্নে ইতিবাচক বৈঠকের পর দেড় মাস কেটে গেলেও এখনও বহাল তবিয়তে ঘুরছে দোষীরা।"
ডাঃ অর্চিষ্মান ভট্টাচার্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "তদন্ত কত দূর এগোলো, তার ফলো আপের ব্যাপারে জানতে বেশ কয়েকবার পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছি। প্রদীপ মিত্রের উপস্থিতে ২ জুলাই আমরা বৈঠক করি, সে সময় আমাদের কাছ থেকে ১৫ দিন সময় চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ২৫ দিন কেটে যাওয়ার পরও এখনও কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেননি পুলিশ। সে কারণে আমরা ২৪ জুলাই লালবাজারে লিখিত ভাবে চিঠি পাঠাই। তারপরই স্বাস্থ্যভবন থেকে আমাদের ডেকে পাঠানো হয়। ডিএইচএস ও ডিএমইর উপস্থিতিতে বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে ফের আমাদের সহযোগিতা করার অনুরোধ করা হয় এবং তাঁরা আরও কিছু দিন সময় চেয়ে নেন।"
ডাঃ অর্চিষ্মানবাবুর কথায়, বৈঠকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন "এটি লিগাল কেস, তাড়াহুড়ো করা যাবে না।" ইতিমধ্যে ৩৬০ ধারা জারি করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর ১৫ জন কে সিসিটিভি ফুটেজে চিহ্নিত করা হয়েছে, পাশাপাশি তারা যাতে বাংলাদেশের সীমানা পার করে পালিয়ে যেতে না পারে তার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। তাহলে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না? রাজ্যের প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন তুলেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। ডাঃ অর্চিষ্মান জানিয়েছেন, তাঁদের প্রশ্নের জবাবে প্রশাসনের তরফ থেকে বলা হয়, "কোনো নির্দোষ মানুষকে ধরতে পারব না। কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তদন্ত চলছে। ডাঃ পরিবহ এখনও এতটাই আতঙ্কগ্রস্ত, যে তাঁর কোনো বিবৃতি নেওয়া সম্ভব হয়নি"। সূত্রের খবর, এই বৈঠক শেষে জুনিয়র ডাক্তারদের থেকে মঙ্গলবার অবধি সময় চেয়ে নিয়েছেন ডিরেক্টর জেনারেল বীরেন্দ্র। পাশাপাশি বলেছেন, "দোষীরা শাস্তি পাবেই, তোমরা ধৈর্য্য ধরো"।
বৈঠক আশাব্যঞ্জক বলে মনে করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁরা জানিয়েছেন, ৩০ জুলাই কলকাতার রাস্তায় মহামিছিলের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। "তবে আমরা কখনই আমাদের ক্ষমতার প্রকাশ করতে চাই না। সমস্ত ডাক্তাররা এই মিছিলে পা মেলালে ফের ব্যাহত হতে পারে চিকিৎসা ব্যবস্থা। তাই সেদিকটা নিয়েও ভাবনাচিন্তা করছি আমরা।"