বুধবার কলকাতা বিমানবন্দরে স্পাইসজেট টেকনিশিয়ানের 'অপ্রত্যাশিত' মৃত্যুর তদন্তের নির্দেশ দিল ডিরেক্টর জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন বা ডিজিসিএ। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রকের এক আধিকারিক বলেন, "ইতিমধ্যেই তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে এবং শীঘ্রই তদন্তের ভিত্তিতে রিপোর্টও জমা দেওয়া হবে।" সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার তদন্ত শুরুর নির্দেশ আসার পরেই দেখা হয় যে বিমানের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ বিমানবন্দরের রীতিনীতি মেনেই করা হচ্ছিল কি না।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার রাত আন্দাজ একটার সময় স্পাইসজেট সংস্থার বিমানের নীচের দিকের দরজার অংশ পরীক্ষা নিরীক্ষা করছিলেন সংস্থার ইঞ্জিনিয়র বছর বাইশের রোহিত বীরেন্দ্র পান্ডে। আচমকাই সেই অংশটি বন্ধ হয়ে গিয়ে দরজা আটকে মৃত্যু হয় রোহিতের। এই ঘটনার পরই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায় বিমানবন্দরে। রোহিতের পরিবারের তরফে স্পাইস জেট সংস্থার দিকে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়। বিমানবন্দরের এক আধিকারিক বলেন, "এটি একটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা এবং এর সঠিক তদন্ত প্রয়োজন। অন ডিউটি যেসব কর্মীরা ছিলেন তাঁদের তরফে কোনও ভুলভ্রান্তি ছিল কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমনকি, সমস্ত নিরাপত্তা নিয়ম অনুসরণ করা হয়েছিল কি না তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে"।
আরও পড়ুন, স্পাইস জেট কর্মীর মর্মান্তিক মৃত্যু ঘিরে ধোঁয়াশা
যদিও রোহিতের এই অস্বাভাবিক মৃত্যু মেনে নিতে পারেন নি তাঁর পরিবারের সদস্য এবং বন্ধুরা। এই মর্মে তাঁরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ন্যায়বিচার চেয়ে প্রচারও করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিমানবন্দরের এক কর্মী তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় দেওয়া একটি পোস্টকে উদ্ধৃত করে বলেন, "একজন ট্রেইনি টেকনিশিয়ান যখন স্পাইসজেটের বিমানের চাকার দিকের অংশে কাজ করছিল, ঠিক সেই সময়েই বিমানের ল্যান্ডিং গেটের দরজা বন্ধ হয়ে গেল। মর্মান্তিক এই ঘটনায় তাঁর পরিবারের সঙ্গে রয়েছি আমরা। রোহিত তাঁর পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। বিধবা মা ছাড়া তাঁর পরিবারে ছোট দুই বোন আছে। ডিজিসিএর উচিত জরুরি ভিত্তিতে এই পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা"।
স্পাইসজেট সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিমানের দরজার হাইড্রলিক গোলযোগের জন্য আচমকাই বন্ধ হয়ে যায় দরজা। দুর্ঘটনার পর রোহিতকে বম্বারডিয়ার Q400 বিমানটির ল্যান্ডিং গিয়ার ডোর ভেঙে উদ্ধার করা হলেও ততক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় বিমান সংস্থাটি।
বিমানবন্দরের আধিকারিকদের মতে, দুর্ঘটনা ঘটে রাত ১টা ৪৫ মিনিটে। অন্য একটি বিমানসংস্থার এক কর্মীর কাছ থেকে জানা যায়, বছর বাইশের রোহিত বীরেন্দ্র পান্ডে দিল্লিতে থাকতেন। তাঁর পরিবার ছিলেন মুম্বইয়ে। গত তিন মাস যাবৎ তিনি কলকাতা বিমানবন্দরে কর্মরত ছিলেন। অন্য আরেক কর্মীর বক্তব্য, "রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলাকালীন একজন সহায়ক এবং একজন কর্মচারীরও থাকার কথা। কিন্তু..." থেমে যায় কথা। কিন্তু এই মৃত্যু ঘিরে বহু প্রশ্ন জেগে ওঠে।
Read the full story in English