বেআইনী বাজি ফাটানোর জন্য কলকাতা থেকেই বাজেয়াপ্ত হয়েছে কয়েকশো কিলোগ্রাম বাজি, অবৈধ বাজি ফাটানোর জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে ৭৫৮ জনকে। কিন্তু তাতেও রোখা গেল না দূষণ। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ (পিসিবি) জানিয়েছে, গত বছরগুলির তুলনায় শব্দদানবের প্রভাব কমলেও কমানো যায়নি দূষণের মাত্রা। বায়ু সূচকের রিপোর্ট অনুযায়ী, কালীপুজোর সন্ধ্যে ৭টার সময় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ছিল ১৯৬, পর্ষদের নিয়মানুসারে যা 'সন্তোষজনক'। গত বছরই এই একিউআই পৌঁছেছিল ২০১-এ।
আরও পড়ুন- ভাইফোঁটার বন্ধন অটুট করতে কলকাতায় মিষ্টির রকমারি
তবে উল্লেখযোগ্যভাবে রাত বাড়তে কিছুটা কমেছে দূষণের মাত্রা। রাত ১১টায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ছিল ১৩৯। উল্লেখ্য, একিউআই অনুযায়ী, ০-৫০ কে ধরা হয় 'ভালো', ৫১-১০০ 'সন্তোষজনক', ১০১-২০০ 'মাঝারি', ২০১-৩০০ 'খারাপ', ৩০১-৪০০ 'খুব খারাপ', ৪০১-৫০০ 'তীব্র', ৫০০-র ওপর হলে তাকে 'গুরুতর অবস্থা' হিসেবে ধরা হয়। তবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সন্ধ্যে সাতটা অবধি একিউআই ছিল ১৮৬। রবিবার রাত ১১টা অবধি সেই মাত্রা ছিল ১৭৩। অন্যদিকে, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল চত্বরে সোমবার অবধি সেই পরিমাণ ছিল ১৭৭। তবে এবারের দূষণের মাত্রা গতবারের থেকে অনেকটাই কম ছিল, এমনটাই প্রকাশিত হয়েছে রিপোর্টটিতে। গত বছরের তুলনায় অনেকটাই কম শব্দদূষণের মাত্রাও।
আরও পড়ুন, ভ্রাতৃদ্বিতীয়ার আড়ালে লুকিয়ে থাকা আসল গল্প
প্রতিবারের মতোই এবারের পুজোয় শব্দবাজির মাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল ৯০ ডেসিবেলে। তবে উত্তর এবং দক্ষিণ কলকাতার বিভিন্ন জায়গা থেকে অভিযোগ আসে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে। হরিদেবপুর এবং কসবা এলাকা থেকে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে পর্ষদে। পুলিশ টহলদারি চালালেও পুলিশ চলে যেতেই ফের শব্দবাজির তাণ্ডব শুরু হয় এলাকায়, এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীর। পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত বলেন, "গতকাল রাত্রে আমার মনে হচ্ছিল, আমি যুদ্ধক্ষেত্রে শুয়ে আছি। সুপ্রিম কোর্টের আদেশকে তোয়াক্কা না করেই এসব চলছে। প্রশাসন কার্যত 'নীরব' হয়েই ছিল।" তিনি আরও বলেন, "বায়ু দূষণ রোধে পিসিবিকে বহু আলোচিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। কারণ, আগামী দিনে একিউআই আরও বাড়বে।"
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ অবশ্য এই অভিযোগ মেনে নিতে অস্বীকার করে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, "আমরা রবিবার রাত থেকেই প্রচুর অভিযোগ পেয়েছি। আর যেখানেই অভিযোগ পেয়েছি, সেখানেই পদক্ষেপ নিয়েছি।" তবে দূষণের মাত্রা সম্পর্কে এখনই কিছু বলতে নারাজ কল্যাণবাবু। তাঁর বক্তব্য, "যতক্ষণ না আমরা প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করছি, ততক্ষণ এ বছরের পরিস্থিতি কতটা খারাপ তা বলা শক্ত।"
Read the full story in English