নেই কেকে! মানতেই পারছেন না আসমুদ্র-হিমাচল। একটা মৃত্যু শেষ করল একটা যুগের। মৃত্যুর কারণ নিয়েও উঠেছে একাধিক বেনিয়মের অভিযোগ। কিন্তু সব কিছুকেও ছাড়িয়ে 'নক্ষত্রের দেশে' কেকে! আর তার মৃত্যুর পর ভাইরাল নজরুল মঞ্চের কনসার্টের ভিডিও। চরম অব্যবস্থার ভিডিও ইতিমধ্যেই ভাইরাল। এর মাঝেই আগুনে ঘি ঢেলেছেন বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ কুণাল সরকার। শিল্পীর কাছে ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন তিনি।
Advertisment
বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ কুণাল সরকার, গতকাল সন্ধ্যেয় কেকে'র মৃত্যুর পর এক ফেসবুক পোস্টে তুলে ধরেছেন মৃত্যুর পিছনে কতগুলি সম্ভাব্য কারণ। তিনি লিখেছেন, "এই মৃত্যু যতটা দুঃখ, ঠিক ততটাই লজ্জার"! ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, 'এক বেদনাদায়ক সন্ধ্যা' একই সঙ্গে লিখেছেন, যতটা দুঃখ, ততটাই লজ্জার।' পাশেই রেখেছেন কেকে-র মৃত্যুর কারণ। যার মধ্যে সবার প্রথমে উঠে এসেছে এদিন নজরুল মঞ্চে উপস্থিত দর্শকদের ভিড়।
তারপরেই বলেছেন, AC বেহাল- ভীষণ গরম। কারণ এদিন ক্যামেরায় ধরা পড়েছে AC না চলায় দরদরিয়ে ঘামছিলেন গায়ক। তুলে ধরেছেন মুখের উপর Fire Ext. স্প্রে করার ঘটনা। এছাড়াও চিকিত্সক কেকের মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন নজরুল মঞ্চের চরম অব্যবস্থাকে। আর এসবের জন্য শিল্পীর কাছে ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি সেলেব থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ সকলকেই ৪০ পেরনোর পরেই হেলথ চেকআপের পরামর্শও দিয়েছেন ডাঃ কুণাল সরকার। ফেসবুক পোস্টে এই ঘটনা তুলে ধরতেই শুরু হয় তোলপাড়। নজরুল মঞ্চের সেদিনের ঘটনার বেআব্রু ছবিই কী তুলে ধরলেন, বিশিষ্ট চিকিৎসক? এই প্রশ্নেই তোলপাড় হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া।
Advertisment
এদিকে এদিনের এই ঘটনার পরই সোমবার সন্ধ্যায় নজরুল মঞ্চে, এই নিয়ে নানান ধরনের গুজব। কেউ বলছেন মাত্রাতিরিক্ত লোক, আবার কেউ বলছেন এসি খারাপ হয়ে যাওয়ার কারণেই সেখানে দমবন্ধকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এদিকে অনুষ্ঠানের মাঝেই ক্রমাগত ঘামছিলেন কেকে। বার বার এমনও বলেছিলেন, লাইটের মাত্রা কম করলেই একটু স্বস্তি পাবেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। অনুষ্ঠান শেষের পর হোটেলে ফিরতেই মৃত্যু হল তাঁর। তবে গতকালের সমস্ত ঘটনাই অস্বীকার করেছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য।
প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, লোকের ভিড় এর সঙ্গে ওনার মৃত্যুর আদৌ কোনও সম্পর্ক নেই। আর যে বা যারা এই কথা বলছেন যে সেখানে ৭ থেকে ৮ হাজার লোক ছিল, এই তথ্যও ভুল। তাঁর কারণ মার্জিন লেভেলের বাইরে গিয়ে কোনও অনুষ্ঠানেই মানুষ যোগ দিতে পারেন না। অনেকেই বিনা পাশে উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ভেতরে ঢুকতে পেরেছিলেন আবার কেউ কেউ না। অনেকেই ফেরত চলে আসেন। আর এমন Ac'র সমস্যা এর আগে অনেক শিল্পীর শোয়েই হয়েছে। তবে তাদের মৃত্যু হয়নি।
প্রসঙ্গে উদাহরণ দিলেন, রক সঙ্গীত শিল্পী রূপম ইসলামের শোয়েরও। ছাত্রনেতার বক্তব্য, রূপমের শোয়ে এর থেকে অনেক বেশি ভিড় হয়, উত্তেজনা থাকে। যদিও বা তাঁর তরফে এমন কোনও অভিযোগ শোনা যায়নি। তবে আজ সকালেই রূপম নিজের ফেসবুক মাধ্যমে জানান যে নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠান করার কী অভিজ্ঞতা আমি জানি। এসি বন্ধ হয়ে যায়, স্টেজে সারি বেঁধে দর্শক দাঁড়িয়ে থাকে। শ্বাস নেওয়ার ক্ষমতা থাকে না। হয়তো কেউ বুঝবেন না কতটা কষ্ট করে প্রোগ্রাম করতে হয়। শো সংক্রান্ত সমস্ত তথ্যই হাওয়ায় উড়িয়ে দিলেন তৃণাঙ্কুর। তিনি বললেন, আমি গোটা অনুষ্ঠান জুড়ে উপস্থিত ছিলাম, আমার চোখে কোনওরকম কিছু ফল্ট পড়েনি। এমনকি ১০ মিনিটের বিরতি নেওয়ার প্রসঙ্গেও ইতি টেনেছেন ছাত্রনেতা। বললেন, শুধু সম্বর্ধনা দেওয়ার সময়ই উনি বিরতি পেয়েছিলেন। বাকি সময় শুধুই শো করতে ব্যাস্ত ছিলেন।