ভবানীপুরে উপনির্বাচন একপ্রকার প্রেস্টিজ ফাইট। তাই নন্দীগ্রামের পুনরাবৃত্তি চান না তিনি। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে যাতে কর্মীরা ডুবে না থাকে তাই জন্য বুধবার চেতলার কর্মিসভায় নেতা-কর্মীদের পেপ-টক দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বার্তা দিলেন, "দিদি জিতবে বলে বসে থাকবেন না। তা হলে আরও গভীর ষড়যন্ত্র হবে।" নন্দীগ্রামে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেও হেরে যাওয়ার পর শিক্ষা নিয়েছেন মমতা। এদিন তাঁর কথায় সেই ইঙ্গিতই প্রতিফলিত হল।
নন্দীগ্রামে তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন বলে এদিন দাবি করেছেন মমতা। তিনি বলেছেন, "প্রত্যেকটি বুথ অফিসার, আইসি, এমনকী ডিএমকেও বদলি করা হয়েছে। ছাপ্পা করা হয়েছে, ভোট করতে দেওয়া হয়নি।" তাই জন্য এবার সাবধানী মমতা। নেতা-কর্মীদের তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, "প্রত্যেক মানুষের বাড়ি বাড়ি যেতে হবে। প্রত্যেক দরজায় যেতে হবে। কমিশনের বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে।"
এদিনের বৈঠকে ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মালা রায়, মদন মিত্রের মতো শীর্ষ নেতাদের ওয়ার্ড ধরে ধরে দায়িত্ব দিয়েছেন নেত্রী। তাঁর তৎপরতা থেকে স্পষ্ট, আত্মবিশ্বাসের কোনও জায়গা নেই। তিনি এদিন নেতা-কর্মীদের বলেছেন, "২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এরপরই পুরভোট হবে। সব ভোটেই আমাদের জিততে হবে।"
এদিন ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে বর্ষীয়ান নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কেও আশ্বস্ত করেছেন মমতা। তিনি বলেছেন, "আমি ভাবলাম শোভনদা এত পুরনো ছেলে। চিরকাল শোভনদা এই এলাকায় থাকে। তাই ভেবেছিলাম শোভনদা এবার নিজের এলাকায় লড়ুক। তাছাড়া দেবার (দেবাশিস কুমার) প্রতি আমার একটা কমিটমেন্ট ছিল। ওকে বলেছিলাম সুব্রতাদা লোকসভায় বাঁকুড়া থেকে জিতলে তোকে বালিগঞ্জে দাঁড়াতে হবে। তাই আমি শোভনদার সিটটা দেবাকে দিয়েছি। শোভনদাকে ভবানীপুর। আর নিজে ষড়যন্ত্রের বলি হয়েছি। মনে রাখবেন আমি সবাইকে নিয়েই চলি। এটা আমাদের পরিবার।"
আরও পড়ুন ভবানীপুরে মমতার বিরুদ্ধে বামপ্রার্থী সিপিএম-র যুবনেতা শ্রীজীব বিশ্বাস
তবে এদিন বার বার মমতার কথায় উঠে এসেছে ষড়যন্ত্রের কথা। কর্মীদের এদিন তিনি বলেছেন, "ওরা (বিজেপি) অনেক সভা-মিছিল করবে। মন খারাপ করবেন না, মাথা গরম করবেন না। এই লড়াই আমাদের জিততে হবে।" এই কথা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, কর্মীদের সংযত থাকতে বলছেন তিনি। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে ভর না করে জেতার লক্ষ্যে মনোনিবেশ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন তিনি। নন্দীগ্রামের পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় তাই কোনওরকম কসুর রাখছেন না দলনেত্রী।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন