ইনকাম ট্যাক্সের জুজু, এনআরসি, বাজারদর, নাকি আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস? ঠিক কোন কারণে শহর কলকাতার পুজোর রোশনাই এবার একটু ফিকে মনে হচ্ছে? ষষ্ঠীর দিন সন্ধ্যায় দক্ষিণ কলকাতার নামিদামি পুজোগুলিতে ভিড় ছিল উল্লেখযোগ্য ভাবে কম। নস্টালজিয়ায় মোড়া ‘প্যান্ডেল হপিং’এর শখ বা ইচ্ছা তাহলে কি চলে গেল শহরবাসীর মন থেকে?
আরও পড়ুন: Durga Puja 2019 Live Updates: নবমীর সকাল থেকেই শুরু ঠাকুরদেখা
এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বিভিন্ন পুজো কমিটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা। তবে তাঁদের কথায়, দর্শনার্থীদের সংখ্যা প্রত্যেকবারের তুলনায় বরং এবারে একটু বেশিই। এখন শুধু শহরবাসী নন, বিভিন্ন জেলা থেকেও মানুষ ভিড় জমান শহরের রাস্তায়। তাহলে কেন চোখে পড়ছে না সেই দমবন্ধ করা জনজোয়ার? নলিন সরকার স্ট্রিট পুজো কমিটির সিদ্ধার্থবাবু বলেন, “দর্শনার্থী কমেনি, এখন পুজো মানুষ মহালয়ার পরের দিন থেকেই পালন করা শুরু করে দেন। বলা যেতে পারে, পাঁচদিনে এখন আর পুজো পালন করা হয় না। তাই অনেক মানুষ আগেভাগেই ঠাকুর দেখা শুরু করে দিয়েছেন। যার ফলে ভিড়ের ঘনত্ব কমেছে”।
মুদিয়ালির এক কর্মকর্তা বলেন, “আবহাওয়া দপ্তর জানিয়ে দিয়েছিল, পূজোয় এবার ভারী বৃষ্টি হবে, তাই বহু মানুষ আগাম ঠাকুর দেখা সেরে নিয়েছেন।” তবে উত্তর কলকাতায় বজায় ছিল ঐতিহ্য। সপ্তমীর সন্ধ্যায় কলকাতার উত্তর প্রান্তে লো ল্যান্ড, দাদাভাই সংঘ বেশ ভালই ভিড় টেনেছে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ আধিকারিক।
আহিরীটোলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির এক সদস্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, “আগে থেকে মানুষ ঠাকুর দেখা শুরু করার ফলে হয়তো ভিড় সামলানো সম্ভব হয়েছে, কিন্তু বৃষ্টির কারণে আমরা কাজ শেষ করে উঠতে পারি নি। সেই অবস্থাতেই দর্শনার্থীরা এসে হাজির হন।”
অনেকের মতে, কিছু বছর ধরে আবার এক নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন পূজা মন্ডপের কর্মকর্তারা। কাশি বোস লেনের সৌমেনবাবু বলেন, “আম বাঙালির কাছে পায়ে ফোসকা নিয়ে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার পথ হেঁটে ঠাকুর দেখার মজাই আলাদা। যত দিন যাচ্ছে, থিম তথা এক প্রকার শিল্প দেখতে মানুষের উচ্চাকাঙ্ক্ষা বেড়েছে বই কমেনি। শুধু ধরন বদলে যাচ্ছে। আগে মানুষ দিন দুপুরে ঠাকুর দেখার পর্ব শেষ করে ফেলতেন, এখন সারারাত ধরে ঠাকুর দেখতে পছন্দ করেন।” দেখা যাক, অষ্টমীর সন্ধ্যারাত সেই ধারা বজায় রাখে কিনা।