Advertisment

কলকাতায় ভুয়ো কলসেন্টার, পুলিশের জালে মহিলা

মার্কিন ইউটিউবারের ভিডিও ভাইরাল হতেই নড়েচড়ে বসে কলকাতা পুলিশ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Punjab Police picks up BJP spokesperson Mr Tajinder Singh Bagga from his West Delhi house

প্রতীকী ছবি

ভুয়ো কলসেন্টার চালানোর অভিযোগে রবিবার কলকাতা পুলিশ এক মহিলাকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কলসেন্টারের অন্যতম মালিক সন্দীপ বিশ্বাসের সহযোগী হিসাবে কাজ করছিলেন এই মহিলা। ১২ মে থেকে কলকাতায় ভুয়ো কলসেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে কলকাতা পুলিশের অপরাধ দমন শাখা।

Advertisment

সিআইডি ডিআইজি মিরাজ খালিদ ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, "প্রচুর জাল নথি, রেজিস্টার, ডায়েরি, লিজের চুক্তিপত্র, মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ল্যাপটপ, নগদ সহ ৩০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। হেয়ার স্ট্রিট, বাউবাজার এবং শেক্সপিয়র সরণি এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে ভুয়ো কলসেন্টার চালানোর অভিযোগে - তিনটি কল সেন্টার থেকে মোট ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি'র বিশেষ দল। পুলিশ সূত্রে খবর বিমা পলিসিতে বিনিয়োগের ভুয়ো প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে অভিযুক্তরা। তিনটি কল সেন্টারই সিল করা হয়েছে।

কিছুদিন আগেই ইউটুইবে একটি ভিডিও ভাইরাল হয় যেখানে দেখা গিয়েছে এক মার্কিন ইউটিউবার কলকাতার একাধিক ভুয়ো কল সেন্টারের কাজ কর্মের ভিডিও সামনে এসেছেন। ইউটিউবার মার্ক রবার একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন যাতে তিনি কীভাবে শ’খানেক আরশোলা-ইঁদুর আর স্মোক বোমার সঙ্গে উগ্র গন্ধ ব্যবহার করে হাজারখানেক কর্মীকে উত্যক্ত করে কলকাতার ভুয়া কল সেন্টার বন্ধ করেন। ভিডিওটি তার ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করা হয়েছে এবং বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মেও ভাইরালও হয়েছে এই ভিডিও। সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন কলকাতাতে এমন অনেক কল সেন্টার রয়েছে যেগুলি মূলত টার্গেট করে ইউরোপ এবং আমেরিকার অবসরপ্রাপ্ত বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের তাদের কথায় জালে ফাঁসিয়ে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত এই কলসেন্টারগুলি এমনও দাবি করা হয়েছে এই ভিডিওতে।

মিঃ রবার তার ভিডিওতে বলেছেন যে ‘তিনি এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অ্যাকটিভ ছিল এই সমস্ত কলসেন্টারগুলি। এমন অনেক কল সেন্টারের মধ্যে মাত্র চারটি কল সেন্টারের তথ্য ফাঁস করেছেন তিনি’। একই সঙ্গে তিনি দাবি করেছেন এমন কল সেন্টারগুলি অবিলম্বে বন্ধ করা উচিৎ।

বছর বিয়াল্লিশের মার্কের দাবি, অতীতে কলকাতা পুলিশের সাইবার-নিরাপত্তা বিভাগকে জানিয়েও কোন কাজ হয়নি। তাই নিজেই বেছে নেন এই অ্যাডভেঞ্চারের পথ। তিনটি কল সেন্টারের নাম-ধামও প্রকাশ করেছেন মার্ক।সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন চতুর্থ কল সেন্টারের ব্যাপারে সম্প্রতি তথ্য যায় কলকাতা পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগে পরে পুলিশ রেড করে বন্ধ করে সেই কল সেন্টারটিকে। পুরো ভিডিওটি মিস্টার রবারের ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর অফিসে পুলিশ কেন? জানতে চেয়ে মুখ্যসচিবকে তলব রাজ্যপালের

তিনি ব্যাখ্যা করেছেন কিভাবে তারা তাদের মিশন সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন, যার ফলে শুধু এই চারটি নয় বরং ভারত জুড়ে আরও অনেক ভুয়ো কল সেন্টার বন্ধ হয়ে গেছে।পাশাপাশি কল সেন্টারের বিষয়ে একাধিক প্রমাণ ও তথ্য সামনে আনেন এই ইউটিউবার। তথ্য অনুসারে জানা গিয়েছে শুধুমাত্র ২০২১ সালেই মার্কিন নাগরিকদের কাছ থেকে প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার আত্মসাৎ করে এই কলসেন্টার গুলি। মিঃ রবার এর আগে আমেরিকান মহাকাশ সংস্থা নাসা এবং অ্যাপলে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি এক দশক আগে নিজের ইউটিউব চ্যানেল সামনে আনেন এবং ইউটিউবে প্রায় ২১ মিলিয়নেরও বেশি ফলোয়ার রয়েছে তার।

মার্ক দাবি করেন, কলকাতার চারটি কল সেন্টারের অফিসে আরশোলা, গ্লিটার বোমা, স্মোক বোমার ব্যবহার করেন তাঁরা। ভিডিওতে তিনি বলেন এই ভুয়ো কল সেন্টারগুলির কিছু কর্মীর সঙ্গে কয়েকদিন কাজ করে তাঁদের টিম। এই সব সংস্থার সিসি ক্যামেরার অ্যাকসেস নেন তাঁরা। তারপর তাঁদের জালিয়াতির ভিডিও তৈরি করেন। এরপর গোটা ভিডিও নিজের ইউটিউব চ্যানেলে পোস্ট করেন মার্ক রবার। এই ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসে কলকাতা পুলিশ। ভিডিও ভাইরাল হওয়ার সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই ভুয়ো কলসেন্টার অভিযানে বড়সড় সাফল্য পেল কলকাতা পুলিশ।

kolkata police Call center scam
Advertisment