বাজারের জন্য নির্ধারিত সময়েই মিষ্টি বিক্রি করতে আগ্রহী শহরের আধিকাংশ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা। লকডাউনের মধ্যে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত মিষ্টির দেকান খোলা রাখতে অনুমতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে, তার বদলে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতে চায় ব্যবসায়ীরা। এরফলে বাজার করার সময়ই মানুষ মিষ্টি কিনতে পারবেন ও বারংবার রাস্তায় বেরোতে হবে না বলে মনে করেন তাঁরা। এই মর্মেই রাজ্য প্রশাসনের কাছে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আর্জি জানানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির তরফে।
সমিতির অন্যতম সদস্য ও শহরের অন্যতম মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠান কে সি দাসের কর্ণধার ধীমান দাস দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, 'চারঘন্টা মিষ্টি বিক্রির জন্য যথেষ্ট। তবে, সময়সূচির বদল করতে হবে। সরকারি এই সিদ্ধান্তে অন্তত দুধ নষ্টের পরিমান ৭৫ শতাংমশ কমিয়ে আনা যাবে।'
লকডাউন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই অধিকাংশ মিষ্টান্ন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কারিগর দেশে চলে গিয়েছেন। কোনও কোনও দোকানে নামমাত্র কর্মচারী রয়ে গিয়েছেন। আপাতত তাই ন্যূনতম কারিগর দিয়ে দোকান চালুর বিষয়টিও ব্যবসায়ীদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। ধীমান দাস জানান, 'বড় প্রতিষ্ঠান চালানো কার্যত অসম্ভব। তবে, পরিবারভিত্তিকভাবে যেখানে মিষ্টি তৈরি হয়ে তাকে তাঁদের কিছুটা সুবিধা হবে।' বড় মিষ্টির দোকানগুলো লকডাউন কাটলেই খুলবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: লকডাউনে দিনে নষ্ট ৩ লক্ষ লিটার দুধ, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দুগ্ধ ব্যবসায়ীদের
লকডাউনের জেরে গ্যালন গ্যালন দুধ প্রত্যেকদিন নষ্ট হচ্ছে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়ে সুরাহার দাবি জানিয়েছিল জোড়াসাঁকো দুগ্ধ ব্যবসায়ী সমিতি। স্বাভাবিক সময়ে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় প্রত্যেক দিন প্রায় ৩ লক্ষ লিটার দুধের প্রয়োজন হয়। যার মধ্যে ২ লক্ষ লিটারই কেনে মিষ্টির দোকানগুলো। কিন্তু, তা বন্ধ থাকায় প্রবল সমস্যার মুখোমুখি দুগ্ধ ব্যবসায়ীরা। সমিতির তরফে সভাপতি রাজেশ সিনহা বলেন, 'চার ঘন্টা মিষ্টির দোকান খোলার নির্দেশে কিছুটা হলেও ক্ষতি কমতে পারে। তবে, গত দু'দিনে মাত্র ২০ শতাংশ দুধ বিক্রি হয়েছে।'
উত্তর কলকাতার ১৭৬ বছরের পুরনো মিষ্টির দোকান গিরিশচন্দ্র দে ও নকুরচন্দ্র দে'র তরফে কর্ণধার প্রাজেশ নন্দী বলেন, 'কোভিড-১৯ প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাটা খুব দরুরি। কিন্তু আমরা তা মেনে চলতে পারছি না। তাই দোকান বন্ধ রাখা হয়েছে। লকডাউনের পরেই দোকান খোলা হবে।'
পয়লা বৈশাখেও জারি থাকবে লকডাউন। তাহলে কী এবার বছর শুরুই হবে মিষ্টিবর্জিত হয়ে? পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে ধীমান দাস বলেন, 'মানুষই বাইরে বের হবেন না। কারণ এটা অত্যাবশ্যকীয় দ্রব্য নয়।'
Read the full story in English