Advertisment

জল-বিদ্যুতের দাবিতে বিক্ষোভ কলকাতায়, এক সপ্তাহে স্বাভাবিক অবস্থা ফেরানোর আশ্বাস ফিরহাদের

"গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে মোবাইল কানেকশন, বিদ্যুৎ, এবং পানীয় জল ছাড়া রয়েছি আমরা। এটা কি ইয়ার্কি হচ্ছে? মোবাইল কানেকশন ছাড়াও চলবে, কিন্তু বিদ্যুৎ আর জলের কী হবে?"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
kolkata amphan protest

কলকাতায় স্বাভাবিক জনজীবন আরও দ্রুত ফিরিয়ে আনার দাবিতে শুক্রবার বেশ কয়েক জায়গায় চলে বিক্ষোভ

শুক্রবার কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় আমফান ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে ব্যাহত বিদ্যুৎ এবং জল সরবরাহ অবিলম্বে চালু করার দাবিতে বিক্ষোভ দেখান শহরবাসী। বুধবার আমফানের তাণ্ডবলীলায় ধ্বংস হয়ে যায় রাজ্যের বহু অংশ, ভেঙে পড়ে অগণিত গাছ এবং ইলেকট্রিকের খুঁটি। কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম আশ্বাস দিয়েছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারবে কলকাতা, কারণ দিনরাত এক করে কাজ করছেন প্রশাসনিক আধিকারিকরা।

Advertisment

দক্ষিণ কলকাতার বেহালায় পথে নেমে সরকার-বিরোধী স্লোগান তোলেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ ও জলবিহীন অবস্থায় রয়েছেন তাঁরা, এবং আশু সমাধানের কোনও চিহ্ন দেখা যাচ্ছে না। বেহালার বাসিন্দা অমিত দত্ত বলেন, "গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে মোবাইল কানেকশন, বিদ্যুৎ, এবং পানীয় জল ছাড়া রয়েছি আমরা। এটা কি ইয়ার্কি হচ্ছে? মোবাইল কানেকশন ছাড়াও চলবে, কিন্তু বিদ্যুৎ আর জলের কী হবে? আমরা তো বেসিক পরিষেবা চাইছি।"

মধ্য কলকাতার বাসিন্দা তথা তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী পূজা সাহা বলেন যে কলকাতা পুরসভার হেল্প লাইনে অন্তত ৫০ বার ফোন করেও কোনও সাড়া পান নি তিনি। "চারদিক পচা গন্ধে ভরে গেছে! আমি অন্তত ৫০ বার কেএমসি-র হেল্প লাইনে ফোন করেছি, কোনও সাড়া নেই। বন্ধ নর্দমাগুলো শিগগির সাফ না করা হলে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন এলাকার মানুষ," বলেন পূজা।

আরও পড়ুন: ত্রাণের টাকা নিয়ে ‘সংশয়’ দিলীপের, প্রাপকদের কাছে সরাসরি পৌঁছে দেওয়ার আবেদন

ওদিকে ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, বিদ্যুৎ পরিষেবা যাতে যথাসম্ভব দ্রুত ফের চালু করা যায়, সেই উদ্দেশ্যে শহরের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী বেসরকারি সংস্থা সিইএসসি-কে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। হাকিম আরও বলেন, "কেউ কল্পনাও করতে পারে নি যে এতটা ক্ষতি করতে পারে সাইক্লোন। পাঁচ হাজারেরও বেশি গাছ পড়ে গিয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই অনেকগুলি রাস্তা সাফ করেছি। আমি কলকাতাবাসীকে বলতে পারি, এক সপ্তাহের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে যাবে শহর।

অন্যদিকে তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, শাসকদল যে মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, এই বিক্ষোভ তারই প্রমাণ। প্রতিক্রিয়া হিসেবে হাকিম বলেন, "যেখানে মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী নিজেদের মধ্যে কথা বলছেন, সেখানে ওঁর কথা কম বলা উচিত।"

শুক্রবার আকাশপথে আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনের পর সাংবাদিক বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে এদিন তিনি বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বাংলা লড়েছে। কেন্দ্র সর্বোতভাবে রাজ্যের পাশে রয়েছে।" সেইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ১,০০০ কোটি টাকার অর্থসাহায্যের ঘোষনা করেন মোদী। মৃতদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা সাহায্যের কথাও জানান তিনি।

দক্ষিণ ২৪ পরগণার নামখানা এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, ঝড়ে উড়ে যাওয়া ছাদের জায়গায় যে পরিমাণ ত্রিপলের আস্তরণ তাঁদের দেওয়া হয়েছে, তা পর্যাপ্ত নয়। উত্তর ২৪ পরগণাতেও আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের দাবি, তাঁদের খাবার ফুরিয়ে আসছে, যেহেতু আশেপাশের দোকানগুলি খোলে নি।

সুন্দরবন বিষয়ক মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা বলেন, স্থানীয়দের সমস্যার অবিলম্বে সমাধান করতে বলা হয়েছে আধিকারিকদের।

বুধবার, ২০ মে, দক্ষিণবঙ্গ এবং পূর্ব মেদিনীপুরে কয়েক ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালায় আমফান। ঝড়ের দাপটে মৃত্যু হয়েছে ৭০ থেকে ৮০ জনের। উত্তর ২৪ পরগণার বসিরহাটে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রিভিউ বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, বাংলায় আমফানের জেরে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন রাজ্যের ৬০ শতাংশেরও বেশি মানুষ।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

dilip ghosh amphan
Advertisment