Advertisment

কোভিডে 'শ্বাসবন্ধ' কলকাতার! ৭ হাজারের অক্সিজেন বিকোচ্ছে ৭৫ হাজারে

"১০ লিটারের অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য ৭৫ হাজার টাকা চেয়েছিল। রোগীর পরিবার সেই টাকা জোগার করার আগেই মৃত্যু হয় রোগীর।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
oxygen cylinder, kolkata oxygen cylinder

ব্ল্যাক মার্কেট হচ্ছে অক্সিজেনের? এক্সপ্রেস ফটো- শশী ঘো

জীবনদায়ী গ্যাসের দামে মরণের হাতছানি দেখছে মহানগর। নির্বাচনী বাংলায় মঙ্গলবার প্রায় সাড়ে ১৬ হাজার জন একদিনে আক্রান্ত হয়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মৃত্যুও। এই পরিস্থিতিতে দেশের মত রাজ্যেও অক্সিজেন আকাল শুরু হয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে শহরে অক্সিজেন সিলিন্ডারের দামে আগুন। শেষ নিঃশ্বাস নেওয়ার আগেই দাম শুনেই দম বন্ধ হচ্ছে রোগীর।

Advertisment

উত্তর কলকাতার বাসিন্দা অনুষ্কা সাহা নিজের বাবাকে বাঁচাতে অক্সিজেন সিলিন্ডার আনতে গিয়ে বুঝেছেন জীবন বাঁচাতে জীবনদায়ী গ্যাসের মূল্য আজ কোথায়! কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী বছর তেইশের অনুষ্কা বলেন, "বাবার কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট আসার আগে থেকেই অক্সিজেনের পরিমাণ রক্তে কমতে শুরু করে। আমাদের চিকিৎসক জানান যে বাবার অক্সিজেন প্রয়োজন। তখন সমস্ত সাপ্লায়ার্সদের ফোন করতে শুরু করি। একটি সিলিন্ডারের জন্য কেউ চাইছে ৩০ হাজার, আবার কেউ ৪০ হাজার।"

অতিমারীতে এই অক্সিজেন আকালের আগে পর্যন্ত কলকাতায় এক একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার বিকোচ্ছিল ৭ হাজার টাকায়। এখন সেই সিলিন্ডারের দাম পৌঁছেছে ৪০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। কিন্তু বাবার প্রাণ বাঁচাতে বদ্ধপরিকর অনুষ্কা জানান তিনি সব টাকা দিয়েই সিলিন্ডার কিনতে চান। কিন্তু এরপরই অক্সিজেনের 'ব্ল্যাক মার্কেটের' একটি ছবি সামনে আসে।

আরও পড়ুন, করোনায় করুণ চিত্র! ১টি অ্যাম্বুলেন্সে ২২টি মৃতদেহ আনা হল শ্মশানে

অনুষ্কা সাহা জানান সাপ্লায়ার্স তাঁকে নগদ ২৭ হাজার টাকার বিনিময়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার দিতে রাজি হয়েছে। তবে উত্তর কলকাতার মেয়েকে দক্ষিণ কলকাতায় এসে সেই সিলিন্ডার নিয়ে যেতে হবে। সব বাধাকে উড়িয়ে দিয়েই রাজি হন অনুষ্কা। কিন্তু পরবর্তীতে তাঁকে জানান হয় যে অন্য রোগীর থেকে বেশি টাকার বিনিময়ে সেই সাতাশ হাজারি সিলিন্ডার বিক্রি করে দিয়েছে সাপ্লায়ার্স।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীর তখন করুণ অবস্থা। অনুষ্কার কথায়, "আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম এটা শুনে। যদিও সোশাল মিডিয়ায় এই ঘটনা পোস্ট করতেই স্থানীয় এক নেতা বিনা পয়সায় একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে যান।জানি না কোনও দিন এই ঋণ আমি শোধ করতে পারব কি না।"

অন্যদিকে দক্ষিণ কলকাতাতেও এক চিত্র। মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ সৌম্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আমি হাসপাতালেই ছিলাম। এক রোগীর জরুরিকালীন অক্সিজেন চাহিদা ছিল। বড়বাজারের এক সাপ্লায়ার্সদের সঙ্গে কোনও রকমে যোগাযোগ করছিল রোগীর পরিবার। ওই ব্যক্তি ১০ লিটারের অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য ৭৫ হাজার টাকা চেয়েছিল। রোগীর পরিবার সেই টাকা জোগার করার আগেই মৃত্যু হয় রোগীর।"

যদিও স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানান যে রাজ্যে কোনও অক্সিজেন ঘাটতি নেই। অক্সিজেন সিলিন্ডারের নিরন্তর সরবরাহ রয়েছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

coronavirus corona virus
Advertisment