শেক্সপিয়র সরণিতে জাগুয়ার দুর্ঘটনাকাণ্ডে ধোঁয়াশা যেন কাটছেই না। আরসালান নয়, রাঘিবই আসল অভিযুক্ত বলে ক’দিন আগেই দাবি করেছে পুলিশ। কিন্তু তাহলে কেন আরসালান পারভেজকে অভিযুক্ত হিসেবে তুলে ধরল পরিবার? কেনই বাবা দাদা রাঘিবের জন্য গ্রেফতারি মেনে নিলেন আরসালান? এ নিয়ে এখনও ধন্দে রয়েছে পুলিশ। সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, দুর্ঘটনার পর অভিযুক্ত হিসেবে কাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হবে, এ নিয়ে আলোচনা হয়েছিল পরিবারে। প্রথমে বাড়ির কোনও গাড়ি চালককে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু তাঁরা রাজি হননি। এরপরই আরসালানের বাবা পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন বলে মনস্থির করেন। শেষ পর্যন্ত আরসালানকে ঠিক করা হয়। তবে এ নিয়ে আরও নিশ্চিত হতে চাইছে পুলিশ। লালবাজার সূত্রে খবর, এই ধন্দ কাটাতেই রাঘিবকে আরও জেরার প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, শেষ পর্যন্ত জামিন মিলল আরসালান পারভেজের। গত সপ্তাহে কলকাতার রাজপথে মার্সিডিজ-জাগুয়ার সংঘর্ষের ঘটনায় ধৃত ২২ বছর বয়সী আরসালান পারভেজকে শর্তসাপেক্ষে বৃহস্পতিবার জামিন দিল আদালত। গত শুক্রবার রাতে শেক্সপিয়র সরণি থানা এলাকায় আরসালানের জাগুয়ার গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় মার্সিডিজের। এ ঘটনায় ২ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়। তদন্তে নেমে পরে পুলিশ জানতে পারে, আরসালান নয়, এ ঘটনার আসল অভিযুক্ত পারভেজের দাদা রাঘিব পারভেজ। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
আরও পড়ুন: জাগুয়ার দুর্ঘটনা কাণ্ডে চাঞ্চল্যকর মোড়, এবার গ্রেফতার ‘আসল’ অপরাধী!
বুধবার রাঘিবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বর্তমানে ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন রাঘিব। আরসালানের পাশাপাশি এ ঘটনায় শর্তসাপেক্ষে জামিন পেয়েছেন তাঁর মামা মহম্মদ হামজা। দুর্ঘটনার পর রাঘিবকে দুবাই পালাতে সাহায্য করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে হামজার বিরুদ্ধে। এ ঘটনা প্রসঙ্গে এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘দুর্ঘটনার দায় নিয়েছিল আরসালান পারভেজ। অথচ আসল অভিযুক্ত রাঘিব। রাঘিবকে দুবাই পালাতে সাহায্য করেছিলেন হামজা। হামজা ও আরসালানকে জামিন দেওয়া হয়েছে। তবে কেউই কলকাতা ছাড়তে পারবেন না’’।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার দিন কলকাতার একটি নামী স্কুলের প্রিন্সিপালের ছেলের জন্মদিনের পার্টি থেকে ফিরছিলেন রাঘিব। এরপরই দুর্ঘটনার পর পালিয়ে যান তিনি। পরে সোমবার ফের শহরে ফেরেন রাঘিব।
আরও পড়ুন: ‘মমতা ঘনিষ্ঠ’ শীর্ষ আমলার দফতরে সিবিআই হানা, তুঙ্গে জল্পনা
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে কলকাতার শেক্সপিয়র সরণি-লাউডন স্ট্রিটের সংযোগস্থলে পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান কলকাতায় চিকিৎসা করাতে আসা দুই বাংলাদেশি নাগরিক। জাগুয়ার গাড়িটি ধাক্কা মারে একটি মার্সিডিজ গাড়িকে। সংঘর্ষের তীব্রতা সামলাতে না পেরে এরপর জাগুয়ারটি ছিটকে গিয়ে ফের ধাক্কা মারে তিনজন পথচারীকে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে দু’জনকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। নিহতরা হলেন ঝিনাইদহের কাজি মহম্মদ মইনুল আলম (৩৬) এবং ঢাকার বাসিন্দা ফারহানা ইসলাম তানিয়া (৩০)।
অন্যদিকে, মার্সিডিজ গাড়িটিতে ছিলেন রিয়েল এস্টেট সংস্থা ডায়মন্ড গ্রুপের কর্ণধার অমিত কাজারিয়া ও তাঁর স্ত্রী কণিকা। তাঁদেরকে কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
Read the full story in English